আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

“শ্বশুরবাড়ি যাই” পর্ব-০৪।

আমাদের হামিদ ভাই আজ প্রাতে আমাকে টেলিবার্তা প্রদান করিয়া বলিয়াছেন, আমি যেন শ্যালিকা সুলতানার নাম পরিবর্তন করিয়া রঙ্গিলা নির্ধারণ করি তিনির নাকি রঙ্গিলা নাম খুব পছন্দ তাই ভ্রাতার মনোবাসনা পূর্ণ করা সাপেক্ষে আজ গোধূলি লগনে সুলতানার আকিকা করিয়া নাম পরিবর্তন করা হইয়াছে এখন হইতে তাহার নাম রঙ্গিলা কামাল উদ্দিন ভাইয়ের শ্যালিকা বলিয়া কথা
গত পর্বের শেষাংশঃ
এইবার ইজ্জত আলী না করিতে পারেনা। এবং সেলিমকে লইয়া নিজগৃহে উপস্থিত হয়। সেলিম ইজ্জত আলীর শ্যালিকা রঙ্গিলার সঙ্গে রসের আলাপ করিতেছে। দুজন হাসিয়া-রসিয়া আলাপ করিতে দেখিয়া ইজ্জত আলীর অন্তর জ্বলিয়া অঙ্গার হইয়া যাইতেছে। বুকের মধ্যে কেহ যেন হাতুড়ির আঘাত করিতেছে!!!

কিন্তু ইজ্জত আলী কিছুই বলিতে পারিতেছেনা! তাহার কারন, সে সেলিমের কাছ হইতে কিঞ্চিৎ অর্থ ধার আনিয়াছে।

আর সেই সুযোগে সেলিম ইজ্জত আলীর শ্যালিকা রঙ্গিলার রূপে নজর ফেলিয়াছে।

সেলিম রঙ্গিলার সঙ্গে গল্প করিতে পারিয়া বহুগুণে আনন্দিত হইয়াছে। অনেক সময় আলোচনা করিয়া প্রস্থান করিবার সময়, ইজ্জত আলীকে সঙ্গে লইয়া গৃহ হইতে বাহীর হইয়াছে। বাটী হইতে কিঞ্চিৎ দূরে গিয়া ইজ্জত আলীর পকেটে আরও কিঞ্চিৎ অর্থ প্রদান করিয়া সেলিম সেই স্থান হইতে দ্রুত প্রস্থান করিলো। আর বলিলো কিন্তু অন্যদিকে ঘটনা আরেকটা ঘটিয়া যায়।

সেলিম প্রস্থান করিবার সময়, যখন ইজ্জত আলীকে সঙ্গে লইয়া হাঁটিলো, তখন রঙ্গিলার কিঞ্চিৎ কৌতূহল জন্মাইয়া গিয়াছিলো। তাই সে আড়ালে দাঁড়াইয়া, আড়চোখে চাহিয়া দেখিলো, সেলিম তাহার নিজ পকেট হইতে হস্ত বাহীর করিয়া ইজ্জত আলীর পকেটে প্রবেশ করাইয়াছে। রঙ্গিলার তাহাতে আর বুঝিতে কষ্ট হইলোনা যে, এইখানে কিঞ্চিৎ ঘটনা ঘটিয়াছে। রঙ্গিলার কথা অগ্রেই বর্ণনা করিয়াছি কিঞ্চিৎ। সে খুব চালাক এক রূপসী কন্যা।



ইজ্জত আলী ঘুরিয়া গৃহে প্রবেশ করিতেই সামনে দাঁড়াইলো রঙ্গিলা। সে দুলাভাইকে আন্দাজেই জিজ্ঞেস করিলো-
“নতুন ব্যবসায় মনোযোগ দিয়াছেন নাকি?”
“নতুন ব্যবসা! কী বলিতেছো রঙ্গিলা!!”
“হ্যাঁ, বলিতেছিলাম শ্যালিকার বিবাহ ঘটাইয়া ঘটকালী শুরু করিতেছেন নাকি ?”
এই প্রশ্ন শুনিয়া কিঞ্চিৎ শ্বাসরুদ্ধ হইয়া গেলো ইজ্জত আলী! সে ভাবিয়া পায়না রঙ্গিলা কেমন করিয়া তাহা জানিলো! ইজ্জত আলী ঘামিয়া যাইতেছে। চারখানা বিবাহ করিয়া এবং এতোদিন স্ত্রী আমেনাকে সযত্নে সর্বদা প্রহার করিয়াও তাহার নারী ভয় দূর হয়নি বুঝা যাইতেছে। রঙ্গিলার সামনে সে অসহায় দাঁড়াইয়া রহিলো। কিন্তু কিছুই বলিতে পারিতেছেনা।

তাহা দেখিয়া রঙ্গিলা ভাবিলো, “দুলাভাই ভয় পাইয়া গিয়াছেন, তাহার অর্থ হইলো এইখানে কিঞ্চিৎ ঘটিয়াছে। দুলাভাইয়ের ভয় লজ্জা দূর করিয়া কাহিনী সংগ্রহ করিতে হইবে” তাই সুলতানা হঠাৎ করিয়া অট্ট্রহাসিতে ফাটিয়া পরিলো। এইবার আরও বেশি অবাক হইলো ইজ্জত আলী! সে ভাবিতেছে “শ্যালিকা আবার হাসিতেছে কেনো! আহা! কতো রঙ্গ জানগো রঙ্গিলা/ তোমার রঙ্গে আমি কাঁত” রঙ্গিলা দুলাভাইকে কহিলো-
“হা হা হা দুলাভাই আমি কিঞ্চিৎ রঙ্গ করিতেছিলাম আপনার সঙ্গে। আর আপনি ভয় পাইয়া গিয়াছেন”
আইবার গলায় কিঞ্চিৎ রস পাইলো ইজ্জত আলী তাই রঙ্গিলাকে কহিলো-
“তা, দুলাভাইয়ের সঙ্গে শ্যালিকার রঙ্গ করিবার অধিকার রহিয়াছে বটে। তা তুমি যেমন বদন প্রদর্শন করিলে, তাহা দর্শন করিয়া আমার অঙ্গ কাঁপিয়া গিয়াছিলো”

এইবার শ্যালিকা ও দুলাভাই একত্রে হাসিয়া উঠিল।

এই অট্ট্রহাসি শুনিয়া ইজ্জত আলীর স্ত্রী আমেনা দূর হইতে আড়চোখে চাহিয়া দেখিলো, তাহার স্বামী আর তাহার নিজ মাতৃগর্ভের বোন, দুজন মিলিয়া কেমন মাখামাখি করিতেছে! আমেনার চোখে জল আসিয়া গেলো!
>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>> চলিবে.........।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।