এক আর একে দুই যে সত্য, শুধুই তোমার আশেপাশে!! বলতে পার না যে সত্য সৃষ্টির সবখানে!!! গতকাল ১৭ ডিসেম্বর ছিলো সরকার জোটের অর্ন্তভূক্ত বাম মোর্চার হরতাল কর্মসূচি। যুদ্ধাপরাধীদের দ্রুত বিচার সহ সাতটি দাবিতে ছিলো এই কর্মসূচি। হরতালের এমন নজিরবিহীন শান্তিপূর্নতায় হরতালকারীরা খুবই উদ্বেলিত। সংবাদ-মাধ্যমেও এ নিয়ে অনেক পজেটিভ লেখা পড়লাম। ছবিতে দেখলাম পিকেটারদের হাতে ঢোল-গিটারসহ নানা বাদ্যযন্ত্র।
রাস্তায় বসে সবাই গাইছে গনসঙ্গীত। জনগন এমন হরতাল দেখে অভ্যস্ত নয় বলে কিছুটা ভ্যাবচ্যাকা খেয়েছে বটে, কিন্তু কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটায় মনে কারো কোন অস্বস্তি ছিলো না। তাই তো সরাষ্ট্রমন্ত্রী হরতালকারীদের ধন্যবাদ দিয়েছেন। এতো বিনয়! কিছু ধন্যবাদ নিজের জন্য কি রাখতে পারতেন না? ঢাকার গুরুত্বপূর্ন সড়কগুলোর আশি ভাগ তো পুলিশই বন্ধ করে দিয়েছিলো!
এসবের বিস্তারিত বর্ননার সংকলন দেখতে চাইলো http://www.online-dhaka.com এ লগান। আমি আমার বক্তব্য বলি।
সকাল সকাল রওয়ানা করে দৈনিক বাংলার মোড়ে নেমে দেখি পুলিশ পল্টনের রাস্তা আটকে রেখেছে। যেতে হবে বারডেম, তাই হেটে রওয়ানা করতে হলো। পরিচিত একজন ডায়বেটিস রোগীকে দেখি এ অবস্থা দেখে ফিরে যাচ্ছেন বাসায়। আমার হাটা অভ্যাস আছে, কিন্তু অফিস টাইমে এমন ধরনের উৎপীড়নে স্বাভাবিক ভাবেই মেজাজটা খিচড়ে উঠলো। আসে পাশের সহ-হাটিরা শুনলাম বলতে বলতে যাচ্ছেন, “সরকারী হরতাল”, “ছুটি ঘোষনা দিলেই হত” ইত্যাদী।
মনের রূক্ষতার কারনেই কিনা লাঠি-সোটা হাতের পিকেটারই নজরে পড়েছে, বাদ্যযন্ত্র নয়। তবে পিকেটিং এর দায়ীত্বে থাকা ভাইদের দেখেই মনে হয়েছে যথেষ্ট শিক্ষিত এবং সভ্য। কাজেই এ ধারনা আমারও ছিলো যে এই হরতালে কোন রকম ঝামেলা হবে না। সত্যি বলছি!!!
আগামীকালও হরতাল আছে। এবার হরতাল ডেকেছে ইসলামী ও সমমনা ১২ দল।
ইসলামকে ধ্বংসের যে চক্রান্ত শুরু করেছে বাম দলগুলো তার প্রতিবাদে এই হরতাল। তারা এ জন্য সরাষ্ট্রমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছেন। বামদলের মতো পুলিশি সহায়তা পেলে তাদের কর্মসূচিও শান্তিপূর্ন ও সফল হবে বলে দাবি করেছেন তারা। ধর্মভীরু হতে সচেষ্ট আমার মন তাদের দিকে সায় দিতে চাইছে, তাদের সাফল্য কামনাও করছে। আদৌ কি সেরকম কিছু হবে?
আমি যেন দিব্য দৃষ্টিতে দেখতে পাচ্ছি কালকের অরাজকতা।
পুলিশ অবশ্যই থাকবে মারমুখী, তাদের ছ্ত্রছায়ায় ছাত্রলীগ নামবে জামাত-শিবির নিধনের লক্ষ্যে। জামাতের কর্মসূচি না হলেও তারা থাকবে রাস্তায়। আবারও সেই গাড়ি ভাংচুর, বোমাবাজি। এবার হয়তো বিশ্বজিৎ এর স্থানে মরবে রূবাইয়াৎ, যার জামাতের সাথে কোন সম্পর্ক না থাকলেও নাম ও মাথার টুপিটার কারনে সে হয়ে যাবে কোন শহীদ শিবির কর্মী। ছাত্রলীগের প্রতিটি কোপের সাথে সাথে ঘা দিতে থাকবে ‘রাজাকার শুয়োরের বাচ্চা’ টাইপ গালি, হোক না সে এমন এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, যে তার যোদ্ধা সনদ নিজেও ব্যবহার করেনি, ছেলেরাও তার মৃত্যুর পূর্বে এমন সনদের অস্তিত্বও জানতে পারেনি।
বিপরীতও হতে পারে, জামাতের ছোড়া ককটেলে হয়তো ঝলসে যাবে শরীরটা। হয়ে যাবে সে বঙ্গকন্যার বীর সেনা।
আমাদের দেশের এহেন রাজনৈতিক আচরনই এখন স্বত:সিদ্ধ। পরশুদিন শীতের সকালে এমন খবরের সাথে চলবে ডিম সেদ্ধ। বাহ্! কি চমৎকার!! লুল রে লুল!!!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।