আপনাকে স্বাগতম!
এশিয়ার অর্থনৈতিক পরাশক্তি এবং বাংলাদেশের শ্রমশক্তির নিয়মিত আমদানীকারক ও গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নসহযোগী দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় আজ প্রেজিডেন্ট নির্বাচন। ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। বাংলাদেশে কোরিয়ান দূতাবাসেও একযোগে নির্বাচন চলবে। পাঁচ কোটি জনতার দেশে উনিশোর্ধ ৪কোটি ভোটার আজ ভোট দেবেন। প্রধান দুই প্রার্থী হলেন মিজ. পার্ক গুনহে, তিনি সাবেক জনপ্রিয় একনায়ক পার্ক জাংহি’র কন্যা (৬০); এবং মি. মুন জেনিন (৫৯), তিনি একজন মানবাধিকার কর্মী ও সাবেক উদারপন্থী প্রেজিডেন্ট রো মু-হিয়নের নিকটস্থ সহকারী।
মুন জেনিনকে সমর্থন করে স্বতন্ত্র প্রার্থী মি. আন চলসু তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করে নেন। সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ি দু’জনই হাড্ডাহাড্ডি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবস্থান করছেন।
পার্ক গুনহে’র অবস্থান:
২০০৭ এর দলীয় মনোনয়নে সামান্য ব্যবধানে মিজ. পার্ক গুনহে (প্রেজিডেন্ট পার্ক জাংহি’র কন্যা) হেরে যান প্রেজিডেন্ট লি মিয়ং বাকের কাছে। এবার মনোনয়ন পেলে তিনি হতেন কোরিয়ার ইতিহাসে প্রথম নারী রাষ্ট্রপতি। এবার তিনি দলের নেতৃত্ব পেয়ে গ্রান্ড ন্যাশনাল পার্টির নামটাই বদলে ফেলেন।
নাম দেন সেনুরি এবং গত এপ্রিলের সংসদ নির্বাচনে সেনুরি দলের বিজয় নিশ্চিত করেন। কিন্তু বিজয়ের সম্ভাবনা তিনি ক্ষিণ করে দিয়েছেন তার প্রস্তুতিবিহীন প্রেজিডেনশিয়াল ডিবেট-এ। দক্ষিণ কোরিয়াকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবার জন্য দেশের প্রবীন ভোটাররা তার নিহত একনায়ক পিতার প্রতি খুবই সন্তুষ্ট। এই প্রবীন ভোটাররা বির্তকের হারজিত খুব একটা বুঝতে পারেন না। তাই ঘটনা যে কোন দিকে মোড় দিতে পারে।
মুন জেনিনের অবস্থান:
অন্যদিকে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আছেন সাবেক প্রেজিডেন্ট রো মু-হিয়নের কাছের মানুষ মুন জেনিন, যিনি মনোনীত হয়েছেন বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক ইউনাইডেট পার্টি থেকে। পার্ক জাংহি’র (প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী পার্ক গুনহে’র পিতা) শাসনামলে প্রতিবাদী ভূমিকার জন্য মুন জেনিন একবার বন্দী হয়েছিলেন। বলা যায়, ব্যক্তিগত এবং রাজনৈতিক উভয়ক্ষেত্রেই তারা একে অন্যের ঘোরতর প্রতিপক্ষ। অন্যদিকে মুন’এর বিজয়ের মাধ্যমে দেশটিতে বাম রাজনীতির প্রত্যাবর্তন ঘটবে। ইতিমধ্যেই স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থন থাকায় মুন জেনিন শক্ত অবস্থানে আছেন।
প্রেজিডেনশিয়াল ডিবেটেও এই মানবাধিকার কর্মী ভালো শক্ত অবস্থান তুলে ধরেন।
দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার ব্যবস্থা:
বহুদলীয় গণতন্ত্রের দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রেজিডেন্ট সরাসরি পপুলার ভোটে নির্বাচিত হন ৫বছরের জন্য। তিনিই সরকার এবং রাষ্ট্র প্রধান। আজকের নির্বাচনে যিনি জয়ী হবে তিনি ক্ষমতাসীন প্রেজিডেন্ট লি মিয়ংবাকের (২০০৭) স্থলাভিষিক্ত হবেন। তাছাড়া আছে ৪বছর মেয়াদী ২৯৯ সদস্যের জাতীয় সংসদ, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে।
কোরিয়ান সংবিধানে একজন ব্যক্তি একবারই প্রেজিডেন্ট হতে পারেন।
সর্বশেষ সমীকরণ:
এইচএসবিসি’র সর্বশেষ জরিপ মোতাবেক দক্ষিণ কোরিয়া পৃথিবীর ১১শ অর্থনৈতিক শক্তি। তাই, বিজয়ী যে-ই হোক দায়িত্বটা বেশ চ্যালেনজিং হয়েই আসছে আগামি ৫ বছরের জন্য। প্রথমত দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ধওে রাখা। তাছাড়া, সকল চ্যালেনজের ওপরে থাকছে উত্তর কোরিয়া ইস্যু।
কিন্তু দেশের মানুষের উদ্বেগ শুধু উত্তর কোরিয়ায় সীমাবদ্ধ নয়। জীবনের মানোন্নয়ন, ধনী-গরিবের পার্থক্য, আত্মহত্যার হার ইত্যাদি বিষয় নিয়ে ভাবি প্রেজিডেন্টকে ভাবতে হবে। বামপন্থী সরকার আসলে আমাদের বাংলাদেশের ডানপন্থী সরকারের সাথে কেমন সম্পর্ক হয় সেটি বিবেচনার বিষয় হয়ে থাকবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার নির্বাচন নিয়ে আরও পড়ুন: সিএনএন এবং দ্য গার্ডিয়ান ।
সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট এবং টাইম ওয়ার্ল্ড।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।