আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হে ঘুমন্ত বাঙালী,জ্বলে পুড়ে মরার আগেই ওঠো জেগে,নয়তো মরবে জ্বলে পুড়ে-- প্রথম পর্ব

হে ঘুমন্ত বাঙালী,জ্বলে পুড়ে মরার আগেই ওঠো জেগে,নয়তো মরবে জ্বলে পুড়ে-- প্রথম পর্ব কখনো কি আপনি আপনার নিজেকে প্রশ্ন করেছেন আপনি কে,কি আপনার জীবনের উদ্দেশ্য। হতে পারেন আপনি কোন নেতা,নেত্রী কিংবা বড় চাকুরীজীবী। খাচ্ছেন, খুমাচ্ছেন আর করে চলেছেন আরাম-আয়েশ । কখনও কি ভেবেছে আপনার ভবিষ্যৎ নিয়ে ? কয়েকদিন আগে তাজরীন গার্মেন্টসে ১১২ জন মানুষ জ্যান্ত পুড়ে ছাই হয়ে গেছে, নিশ্চয়ই আপনি শুনেছেন। তার আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরের নিরীহ, মেধাবী, গরীব ছাত্র আবুবক্কর পুলিশের গুলিতে মারা গিয়ে আমাদের কাঁদিয়ে ছিল।

শুধু এখানেই শেষ নয়, মৃত্যুর পর আরেক বার কাঁদিয়ে ছিল তার পরীক্ষার ফলাফল(মৃত্যুর পরেও যে প্রথম স্থান করেছিল)। এইতো কয়েকদিন আগের ঘটনা, নিরীহ সাধারণ পথচারী বিকাশ ছাত্রলীগের হাতে নির্মম ভাবে নিহত। কখনও কি ভেবেছেন, আপনিও কিন্তু হতে পারতেন ওদের জায়গায়, কিংবা আমিও হতে পারতাম, কিংবা আপনার আমার ছেলে-মেয়েও হতে পারত । হতে পারতাম মানে এই নয় যে আমরা এর থেকে বেঁচে গেছি। এখনো, যে কোন সময় এমন অবস্থার স্বীকার হতে পারি।

কখনো কি ভেবেছেন এই গুলো নিয়ে ??? দিনদিন প্রয়োজনীয় জিনিষ পত্রের দাম বেড়ে যাচ্ছে লাগামহীন ভাবে। সেই ভাবে কি বেড়েছে আপনার বৈধ আয়-উপার্জন ??????? যদি আপনি ঢাকায় থাকেন, তবে নিশ্চয় আপনার দম বন্ধ হয়ে আসে গাড়ীতে চড়ে অন্যত্র যাওয়ার প্রয়োজনে কারন জ্যাম, ধূলাবালি, গাড়ীর বিকট হর্ন যার প্রভাব সরাসরি পড়ছে আপনার ছোট্ট সোনামণির ব্রেনের উপর আমরাতো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিই । এটা আমি বলছি না, বলছে বিজ্ঞান। তারপর চোখের সামনে জ্যান্ত মানুষকে চাপা দিয়ে পালিয়ে যাওয়া। সেটা নিশ্চয় আমরা ভুলিনি, এইতো কয়েক মাস আগেই পত্রিকায় আসে ছোট্ট হামীমের দেহ বাস চাপায় পিষ্ট।

কিন্তু কখনো কি নিজেকে প্রশ্ন করেছেন, কয়েক বছর আগেও এই দেশের কিংবা এই ঢাকার অবস্থা এমন ছিল না। আজকাল ঢাকায় একটা বাসা ভাড়া নেওয়া যে কত কষ্টকর যে একবার পড়েছে কেবল সেই জানে। কখনো কি লক্ষ্য করেছেন, এই ঢাকায় দিনদিন রাস্তায় বসবাসরত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে??? যদি আমার কথায় বিশ্বাস না হয় তবে বেশী দূরে যাওয়ার প্রয়োজন নেই আজই কাওরান বাজারের কিংবা মৎস্য ভবনের একটু সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রাস্তায় কাগজ টেনে কয়জন মানুষ আছে গুনে আসেন। তারপর আবার বেশী না ১মাস পর গিয়ে দেখবেন সেখানে অন্তত একজন লোক বেশী। এখন আবার শুরু হয়েছে হরতাল, যে কোন সময় পড়ে যেতে পারেন পিকেটারদের সামনে।

এই সব কি কখনও ভেবে দেখেছেন, কেন ঘটছে ?????? আপনি বলতে পারেন, এই সব নিয়ে আমার ভাবার সময় নেই আমি আমুক দলের সাধারণ সম্পাদক, আপনি সাধারণ পাবলিক ঐ সব আপনিই ভাবুন। হাঁ আমিও জানি আপনার ঐ সব নিয়ে ভাবার দরকার নেই। তবু আমি বলছি আছে। কেন..................। ।

আসেন বলি। হয়তো আপনি খুব চতুর লোক। সুবিধা করে অমুক দলের সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন। তাই দল থেকে কিছু পাচ্ছেন। আপনার ছেলেতো আপনার মতো নাও হতে পারে।

তখন তার কি হবে ?? আর আমরা এও জানি প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে একজন ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বারের চ্যাওলা-প্যাওলা দলকে সমর্থন করে কিছু পাওয়ার আশায়। কিন্তু এই পাওয়া নিয়ে কি সবাই বেঁচে থাকতে পারে ?? তাহলে এই দেশের সাধারণ মানুষের কি হবে ??? হাসিনা-খালেদা আপার বয়স হয়ে গেছে তাই বলে কিন্তু তারা ক্ষমতার লোভ ছেড়ে দিবে। - -না। শেখ মুজিবুর রহমান থেকে পারিবারিক সুত্রে শেখ হাসিনা , তারপর শেখ হাসিনা থেকে জয়, চিরদিন ধরে চলতেই থাকবে উত্তরাধিকার সুত্রে পাওয়া ক্ষমতার উৎস। ঠিক তেমনি ভাবে জিয়াউর রহমান থেকে খালেদা জিয়া, তারপর খালেদা জিয়া থেকে তারেক জিয়া।

এভাবেই চলতে থাকবে বাঙ্গালীর উপর শোষণ আর শোষণ। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে মন্ত্রী,এমপি,সেনাপ্রধান সহ উচ্চ পদস্থ সবাই তার সময় পার করে স্বপরিবারে চলে যাবেন আমেরিকায়, সেখানেই করবেন বাকী জীবন বসবাস। আমি কি মিথ্যা বলছি ?? বিশ্বাস না হলে দেখুন আমাদের দেশের পূর্ব নেতা-নেত্রী এবং উচ্চ পদস্থ ব্যক্তিরা এখন কোথায়। কিন্তু আমার আপনার কিন্তু এমন সুযোগ নাও হতে পারে। তাহলে আমাদের কি হবে, এবার নিজেই নিজেকে জিজ্ঞেস করে দেখুন।

যদি একটা দেশ এভাবেই রাজনৈতিক ক্ষমতার লোভ,হানাহানির মধ্যে দিয়ে চলতে থাকে কি হবে আমাদের এই দেশের, কি হবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ???? দুবাইয়ের কথা শুনেছেন যারা আমাদের মাত্র ১৪দিন আগে স্বাধীনতা পেয়েছে [http://en.wikipedia.org/wiki/United_Arab_Emirates]। তাদের অবস্থা দেখেন। তাদের দেশ কি আমাদের দেশ থেকে বেশী সম্পদ শালী ছিল?? না একদম না। আবার, মালয়শিয়াকে দেখেন যারা সবশেষ স্বাধীনতা পেয়েছে ১৬ই সেপ্টেম্বর ১৯৯৬৩ [http://en.wikipedia.org/wiki/Malaysia]। আর আজ দেখেন তাদের মাত্র একজন ব্যাক্তি ড.মাহাথির মোহাম্মাদ দেশটাকে আজ কোঁথায় নিয়ে গেছেন।

যেখানে একজন মানুষও আগের দেশের কথা বিবেচনা করে পরে নিজের দিকটা দেখেন। তারা যদি পারেন। তাহলে আমরা আমাদের দেশকে উন্নত করতে পারছিনা কেন ? কারন আমাদের সঠিক নেতার, সঠিক নেতৃত্বের অভাব। আজকে আমাদের দেশের বাঙ্গালীদের তাদের দেশে গিয়ে কামলা খাটতে হচ্ছে। এই ড.মাহাথির মোহাম্মাদ একটানা ২২বছর দেশ চালিয়েছেন কোন প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই।

যিনি পরে স্বেচ্ছায় জোর করেই ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন। আমার কথা বিশ্বাস না হলে এখানে http://en.wikipedia.org/wiki/Mahathir_Mohamad, দেখুন আপনি কি জানেন তিনি বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ? অবিশ্বাস হলে এখানে দেখেন http://sonarbangladesh.com/blog/imlgbd2/98738 আসলে বাঙ্গালীরা পারে না এমন কাজ নেই। আজ পুরো পৃথিবীতে বাঙ্গালীরা তাদের মেধার পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন সেই নাসা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দেশের মেয়র ইত্যাদি ইত্যাদি পদে। কিন্তু এই দেশে থাকাকালীন তারা পারছেন না। কারন তাদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না এবং তাদের স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ দেওয়া হয় না।

বুয়েট থেকে প্রতিবছর যারা বের হয়ে যায় তারা সবাই বিদেশে গিয়ে পাড়ি জমায়, তাদের কয়জন আর এই দেশে ফেরে আসে। যখনই এই দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন তখনই কেবল মেধার পরিচয় দিতে পারছেন। এর কারণটা কি কখনও ভেবেছেন। আমরা কি পারি না সোনার বাংলার জন্য আরেকজন বাঙ্গালী মাহাথির মোহাম্মাদ হতে কিংবা সৃষ্টি করতে ?? যদি না পারেন তবে দেশের এই সঙ্কুলান অবস্থার ভিত্তিতে এতটুকু নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন, নির্মম ভাবে মৃত্যুর জন্য আমাকে আপনাকে সদা প্রস্তুত হয়ে থাকতে হবে। তা না হলেও এই দেশ পরবর্তী সোমালিয়া হতে আর বাকী নেই।

আর যদি তা না হয়, তবে আশু এমন অবস্থার সৃষ্টি হবে, যে মানুষ খাওয়াতো দূরের কথা আত্মহত্যা করার উপায়ও খুঁজে পাবে না, একমাত্র পরনের লুঙ্গী ছাড়া সেটাও যদি থাকে । আর থামতে ইচ্ছে হচ্ছিল না,কিন্তু আপনারাতো নিশ্চয়ই আমার উপর রেগে গেছেন এত বড় লেখা পড়ে। তাই বাকী গুলো আস্তে আস্তে দিব। যদি আমার লেখায় কোন ভুল হয়ে থাকে, কিংবা আমার লেখা কারো খারাপ লাগে তবে আশা করি সবাই নিজ গুনে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।