মনের মহাজন খুঁজে ফিরি....
আমার সাংবাদিকতা জীবনের অন্যতম গুরু মাহাবুবুল হাসান নীরুর জন্মদিনে অনেক অনেক অনেক অ-নে-ক শুভেচ্ছা। ২০০৭-০৮ সালে দৈনিক ইত্তেফাকে কাজ করার সময় তাঁর এতো বেশি অনুপ্রেরণা পেয়েছি যে আমার হৃদয়ে স্থায়ীভাবে তিনি আজও বসবাস করেন। একজন মানুষ আমার মনের ভেতর এতটা বছর বসবাস করতে পারবে তা আমি নিজে কল্পনাও করতে পারিনি। হটাৎ তিনি একদিন নিষ্ঠুরের মতো আমাকে না বলে কানাডাতে পাড়ি জমান। আমি অনেক দিন নীরু ভাইয়ের কোন খোঁজ পাইনি।
মাঝে মধ্যে তাঁর কথা মনে পড়লে আমার খুব কান্না পেতো।
তাঁর সাথে আমার রক্তের কোন সম্পর্ক নেই কিন্তু আমি কোনভাবেই আমার মন থেকে তাকে মুছে ফেলতে পারিনি। অসহায়ের মতো অজানা আর অলৌকিক সাক্ষাতের অপেক্ষায় ছিলাম অনেক দিন। মন থেকে তাকে প্রচণ্ড প্রচণ্ড মিস করতাম বলেই অপ্রত্যাশিতভাবে একদিন সন্ধ্যায় ঢাকার হাতিরপুলে তাঁর সাথে আমার দেখা হয়!! আমি সেদিন নিজের চোখকেও বিশ্বাস করতে পারিনি। আমি ঝাঁপদিয়ে নীরু ভাইয়ের বুকে কিছুক্ষণ স্থান নিয়েছিলাম।
সেই অলৌকিক দিনটি ছিল আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ দিনগুলোর একটি। জানতে পারলাম ভাইয়া কিছুদিন আগেই দেশে ফিরেছেন; আবার চলে যাবেন। তিনি আমার নাম্বার নিলেন এবং যেভাবেই সম্ভব থেমে থেমে হলেও এখন পর্যন্ত তিনি আমার সাথে যোগাযোগ রেখেছেন। এখন বুঝি তাকে আমার নিষ্ঠুর বলা ভুল ছিল। কারণ তিনিও আমাকে খুঁজছিলেন।
আসলে আমার মতো তাঁর ভক্তের অভাব নেই। আর তাই গত ১ জুন কানাডার ক্যালগেরিতে মাহাবুবুল হাসান নীরুর ৪৭ তম জন্মদিন উদযাপন করেছেন তাঁর ভক্ত-অনুরাগী আর প্রিয় মানুষগুলো। ১৯৬৫ সালের ১ জুন রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার অনন্তরাম গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। সুনামের সাথে দৈনিক ইত্তেফাকের এক ডজন সাপ্তাহিক পেজ বের করেছেন। আমার জানা মতে বাংলাদেশে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকাতে এক সাথে এতো গুলো পেজ বের করার ইতিহাস এখন পর্যন্ত আর কারো নেই।
তিনি ইত্তেফাকে রোজনামচা (বর্তমান নাম আয়োজন) নামের একটি দৈনিক পেজের জন্ম দিয়েছেন যা এখনও চলছে। সাপ্তাহিক রোববার আর ক্রীড়ালোক ম্যাগাজিন তাঁর দায়িত্বে থাকা অবস্থাতে তিনি বহু সাংবাদিকের জন্ম দিয়েছে, যারা এখন দেশ-বিদেশের প্রতিষ্ঠিত পত্রিকা ও টেলিভিশনের শীর্ষস্থানীয় পদে কর্মরত রয়েছেন। নীরু ভাই এর তৈরি অনেক প্যাকেজ ও ধারাবাহিক নাটক এ দেশের দর্শক প্রিয়তা অর্জন করেছে। বিটিভিতে ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান উপস্থাপন করেও অনেক সুনাম কুড়িয়েছেন। মোট কথা এই মেধাবী মানুষটি সব সময় সৃজনশীল আর সৃষ্টিশীল কর্ম দিয়ে মানুষের অন্তর স্থলে জায়গা করে নিয়েছেন।
বর্তমানে লেখক কানাডার ক্যালগেরির মার্টিনরিজ-এ বসবাস করছেন। দিনটি উপলক্ষে ৭৪ নম্বর মার্টিনরিজের বাসাটি ছিলো আনন্দমুখর। রাতে ক্যালগেরিস্থ পাকিস্তানি রেস্টুরেন্ট আল-মুনির-এ এক মনোজ্ঞ জন্মদিনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে স্বপরিবারে অংশ নেন ক্যালগেরিস্থ বাঙালি কমিউনিটির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানটির মূল আয়োজক ছিলেন লেখকের বন্ধু আজহারুল ইসলাম মাখন ও সায়লা পারভিন পান্না।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে অংশ নেন ক্যালগেরিস্থ বাংলাদেশ সোসাইটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দুল্লাহ রফিক চৌধুরী, সাবেক সভাপতি আলম খন্দকার, বিশিষ্ট সংগঠক ও সমাজসেবক কয়েস মিয়া, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার রকিব হোসেন, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা জুবায়ের সিদ্দিকী ও ব্যবসায়ী মাহামুদ হাসান ফারুক প্রমুখ। লেখকের প্রতি অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের ফুলেল শুভেচ্ছা, উপহার ও শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সন্ধ্যাটি হয়ে ওঠে উপভোগ্য। আগত সকলে লেখকের দীর্ঘায়ু কামনা করেন। বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনামূখর অনুষ্ঠানটি রাতের আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
অনুষ্ঠানে তিনি হাসিখুশি থাকলেও শারীরিক এবং মানসিকভাবে তিনি প্রচণ্ড অসুস্থ।
কয়েকটি অপ্রত্যাশিত ঝড়ে তাঁর জীবন লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। যা অনেকে না জানলে প্রিয় পাত্র হিসেবে আমি জানি। তাঁর জন্য আমি নিজেও অনেক কষ্ট পাই। আপনাদের কাছে আমার একটাই চাওয়া তাঁর জন্য একটু দোয়া করবেন যেন তিনি শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ জীবন-যাপন করতে পারেন।
নীরু ভাই আপনি দীর্ঘজীবী হোন এটা আমাদের সবার প্রত্যাশা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।