কয়েকটা নিক সুলেমানি ব্যান, কয়েকটা নিক ওয়াচে আছে। তাই নতুন একটা নিক খুলতে হল। আমি কৈলাম পুরান পাপী, তাই খেয়াল কৈরা.....
প্রয়াত হূমায়ূন আহমেদ একটা কথা বলেছিলেন- ' "বাংলাদেশে সবার আগে বিক্রি হয় বুদ্ধিজীবিরা, তারা তীর্থের কাকের মত বসে থাকে এই আশায় যে কখন, কোনদল তাকে কিনবে'"-- বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে এই কথাটি ১০০% সত্য। জাফর ইকবাল স্যার কলাম লিখেন শুধুমাত্র শিবিরের তান্ডব , মূর্খতা, যুদ্ধাপরাধ নিয়ে যেখানে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কার্যকালাপ, টেন্ডারবাজী, হত্যা, হল দখল তিনি দেখেন না। আওয়ামী শাসনামলে তার কলম ভোতা হয়ে যায়, তিনি এক চোখের মানুষে পরিনত হত।
ব্যক্তিগত ভাবে আমি তাকে পছন্দ করি এমন কি ফলো করি। কিন্তু এইরকম মানুষেরা যখন মুক্তচিন্তার বদলে দলীয় বৃত্তে ঘুরপাক খায় তখন আমাদের মত অভাগা তরুনদের হতাস হতে হয়।
আজকে প্রথমআলোতে জনাব আসিফ নজরুল "পশু বানানোর কারখানা " নামে একটি কলাম লিখেছেন বিশ্বজিতের মৃত্যু নিয়ে, তিনি ছাত্রলীগকে দোষারোপ করলেন। হ্যা, সবই ঠিক আছে, কিন্তু জামাত শিবির সম্পর্কে কোন কথা বললেন না। কোন ক্যাম্পাসে শিবির কোনদিন হল দখল করে নাই, কারো রগ কাটে নাই, নোংরা রাজনীতি করে নাই, তিনি তা পরোক্ষ ভাবে বুঝাতে চেয়েছেন।
কিন্তু ছাত্ররাজনীতির নামে বাংলাদেশে প্রত্যেকটি দলই যে পশু তৈরির কারখানা বানাচ্ছে, দলীয় দাশ সৃশ্টি করছে, তরুন যুবকদের মেধাশুণ্য বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তৈরি করছে, তা দেখেও না দেখার ভান করছেন। তিনি তার উদ্দেশ্য সফল করেছেন।
কিন্তু ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে তাদের কারো কলম চলেনা। এই বিষয়ে সবাই এক অদ্ভুত নিরবতা পালন করে চলেন। প্রত্যেক দলের বুদ্ধিজীবিরা তাদের বিপক্ষ দলের কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে বিষেদাগার করায় ব্যস্ত।
তাদের কলম চলবে কিভাবে ? বুদ্ধিজীবিরা তো সবাই বিক্রি হয়ে গেছেন, তারা লাল/নীল/সাদা দল করেন। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে নোংরা রাজনীতি করনে, নিজ দলের ছাত্রদের উস্কে দেন, একটু দলীয় আনুগত্য লাভের আশায়, প্রক্টর হওয়ার লোভে, সিন্ডিকেট সদস্য হওয়ার চরিতার্থে (প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা থেকে বলছি, আমি একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র)।
একটি দেশের বুদ্ধিজীবি সমাজ যদি দলীয় দাসে পরিনত হয়, শিখিয়ে দেয়া বুলি আওড়ান, বুদ্ধিদাসে পরিনত হন তখন সেখানে নোংরামী ছাড়া আর কিছু আশা করা যায় না। মুনীর চৌধুরী, জহির রায়হানদের মত বুদ্ধিজীবিদের বড়ই অভাব এই বর্তমান বাংলাদেশে। যারা কোন দলীয় দাসত্বের পাঠা না হয়ে মুক্তবুদ্ধির চাষ করবে, প্রাণে প্রাণে সঞ্চার করবে আলোকশিখা, প্রচার করবে দেশকে ভালবাসার মূলমন্ত্র।
তাই, আপনাদের কাছে একটি প্রশ্ন রাখতে চাই যে- দেহ বিক্রি বনাম সত্ত্বা বিক্রি- কোনটা বেশী নিকৃষ্ঠ ? একজন যৌনকর্মী তার দেহ বিক্রি করেন পেটের তাগিদে। তিনি শুধু তার দেহ বিক্রি করেন, কখনই সত্ত্বাকিংবা ভালবাসা নয়। পক্ষান্তরে আমাদের দেশের বুদ্ধিজীবীরা বিক্রি করেন সত্ত্বা,মনন, বিবেচনাবোধ এবং সর্বোপরি বিবেচনা বোধ।
শুরু করেছি হুমায়ুন আহমেদ এর উক্তি দিয়ে, শেষ করব হুমায়ুন আজাদের একটি উক্তি দিয়ে------
"বাঙ্গালী খুব প্রভুভক্ত, এক প্রভু বিদায়ের সাথে সাথে নতুন প্রভুর গুনগান এবং পুরাতন প্রভুর নিন্দায় লিপ্ত হয়"
জয় বাংলা
মুক্তবুদ্ধির জয় হোক । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।