https://www.facebook.com/tanvir.mh (১)
ছোটনের একমাত্র আদরের প্রেমিকার নাম "মিরা"।
মিরা আজ খুব ভয়ে আছে। কারণ একটু আগে ছোটন মেসেজ করে জানিয়েছে ৩০ মিনিটের ভেতর ক্যাম্পাসে যেতে। আজকে নাকি আমাদের এই সম্পর্কের শেষ দেখা। তাই উপস্থিত থাকা নাকি খুবই জরুরী।
কত বড় শয়তান আমার প্রেমিকটা।
ছোটনঃ- আপনি চলে আসছেন?
মিরাঃ- না আসিনি। আসলে আসতে চাইনি। তাই এটাকে আসা বলা যায়না।
ছোটনঃ-প্রেম অনেক হইছে।
আমি অফিসিয়ালি প্রেম থেকে ছুটি চাই। আপনার অভিমত কি?
মিরাঃ-ফাইজলামি করবানা। বোকা বানাতে চাইলে বোকা বানাও কিন্তু রিলেশান নিয়ে কিছু বলবেনা।
ছোটনঃ-তুমি যাই বল আমি এভাবে আর পারবনা। সেই ক্লাস ৫ এর বৃত্তি পরীক্ষা থেকে লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম আর কত।
একটা সমাধান চাই আমি। এবং আজই হবে সেই সমাধান।
মিরাঃ-আমি জোরে জোরে কান্না করবো। ছিনতাইকারী ছিনতাইকারী বলে চিল্লাবো। তোমাকে মার খাওয়াবো।
ছোটনঃ-এত খারাপ আমার প্রেমিকাটা। প্রেমের পাঠ শেষ করে দিতে চাই। একটা সুন্দর শুক্রবার দেখে বিয়ে করতে চাই এটাই কি আমার অপরাধ?
মিরাঃ-তোমার গলাটা এইদিকে আনো। টিপে ধরবো। বেয়াদপ ছেলের সখ কত জামাই হতে চায়।
(২)
ছোটন এশার নামাজের পর হাটতে বের হল হাতে সিগারেট নিয়ে। আজ কাকে বোকা বানানো যায় ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা। হটাত চোখে পড়লো চিরশত্রু রফিককে। রফিক এক বিরক্তিকর ছেলের নাম ছোটনের কাছে। সাবেক প্রেমিকার বর্তমান বয়ফ্রেন্ডকে বিরক্তিকর লাগবে সেটাই স্বাভাবিক।
ছোটন অনেক দূর থেকেই রফিককে ডাক দিলো।
ছোটনঃ- ভালো আছো রফিক?
রফিকঃ- জী জী ভা ভা ভাইয়া।
ছোটনঃ-তুমি কি সবার সামনেই তোতলাও নাকি শুধু আমার সামনেই?
রফিকঃ-আপনার সামনে আর আব্বার সামনে তোতলাই।
ছোটোনঃ-সমস্যা নাই। ভালো ব্র্যান্ডের কবিরাজের কাছে নিয়ে যাবো।
তোতলামি ভালো হবে শতভাগ নিশ্চিত নাইলে তোমার জিব্বা কেটে ফেলে দিবো। এখন আসো একটু নিরিবিলি জায়গায় যাই। তোমার সাথে কাজ আছে।
রফিকঃ-ভা ভা ভাইয়া মারবেন না তো?
ছোটন নদীর পারে গিয়ে রফিককে সামনে রেখে পকেট থেকে পিস্তল বের করলো।
রফিক দৌড় দেয়ার জন্য প্রস্তুত।
ছোটনঃ-কি হইছে তোমার? ছটফট করো কেন?
রফিকঃ-ভা ভা ভাইয়া...........
ছোটনঃ-পকেটে সিগারেট আছে?
রফিকঃ জী আ আছে।
ছোটনঃ-বাইর করো। ২জন মিলে খাই। এইটা আসলে পিস্তল না। সিগারেট জ্বালানোর লাইটার।
নিউমার্কেট থেকে অনেক সাশ্রয়ী মূল্যে ক্রয় করেছি। তুমি শুধু শুধু কেন ভয় পাও!!
আসো ২ ভাই মিলে নদীর হিম হিম পরিবেশ টা একটু দুষিত করি।
(৩)
অনেকদিন পর এলাকায় আসলো বিপু। সারাদিন ব্যস্ত থাকায় রাত ১০ টার দিকে দেখা করতে গেলো প্রিয় বন্ধু ছোটনের সাথে।
ছোটনঃ-কিরে জামাই,না বলে কই পালাইছিলি?
বিপুঃ-আশুলিয়া গেছিলাম গার্মেন্টসের মালিক হইতে।
কিন্তু সবাই শ্রমিক বানাইয়া দেয়। তাই চলে আইছি।
ছোটনঃ-তুই নাই আর কতকিছু ঘটে গেলো এলাকায়।
বিপুঃ- হ আকলিমার বিয়ে হয়ে গেছে শুনলাম।
ছোটোনঃ-বিয়া শাদির খবর ঠিকই রাখছো আর রাতের বেলা হেটে হেটে যে চা বিক্রি করতো হানিফ চাচা,তার মৃত্যুর খবর টাও রাখলিনা।
বিপু অনেক অবাক হল হানিফ চাচার মৃত্যুর কথা শুনে। লোকটি সারারত রং চা বিক্রি করতো। ভাবতেই খারাপ লাগছে আর তার চা খেতে পারবনা।
ছোটনের কাছ থেকে বিদায় নিলো রাত বেশি হয়ে যাওয়ার কারণে।
হাটতে হাটতে স্কুল মাঠের মাঝখানে আসতেই দূর থেকে কানে ভেসে এলো হানিফ চাচার চিৎকার "চা খাইবেন নাকি কেউ... চা"
বিপু চোখ বন্ধ করে ছোটনের বাড়ির দিকে দৌড়।
ছোটন বারান্দায় দাড়িয়ে সিগারেট টানছে মুচকি হাসি নিয়ে।
-কি মামা ভয় পাইছো?
-ঐ হানিফ চাচা মাঠে আর তুই কি কস!!!আমার হার্ট বন্ধ হয়ে ফুসফুস বন্ধ হওয়ার উপক্রম।
-ডাক দে হানিফ চাচারে,চা খাবো। তোর সাথে একটু মজা করলাম। হানিফ চাচা মরে নাই।
তানভীর মাহমুদুল হাসান
১৪। ১২। ২০১২ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।