আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৩+৪=১১! আওয়ামীলিগের সোনার মিথ্যাবাদী মন্ত্রী ও নেতা এবং ছাত্রলীগগন !

"ভোলানাথ লিখেছিল,/তিন-চারে নব্বই-/গণিতের মার্কায়/কাটা গেল সর্বই। /তিন চারে বারো হয়,/মাস্টার তারে কয়;/'লিখেছিনু ঢের বেশি'/এই তার গর্বই। " রবীন্দ্রনাথ তার 'খাপছাড়া'য় ভোলানাথের অঙ্কজ্ঞানের এমন চিত্রই তুলে ধরেছিলেন। রোববার বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডের পর জড়িত আসামিদের গ্রেফতার নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পক্ষ থেকে যেন ভোলানাথের অঙ্কই শেখানো হলো। মঙ্গলবার সকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

তবে ওই দিন দুপুরে পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো আসামিকে গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করা হয়। বুধবারও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তার বক্তব্যে অনড় ছিলেন। পুলিশও বুধবার পর্যন্ত আসামি গ্রেফতারের কথা নাকচ করে। তবে গতকাল বৃহস্পতিবার মন্ত্রী গ্রেফতার হওয়া আসামির সংখ্যা বলেছেন ১১। চার দিন ধরে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার নিয়ে চলছে 'ইঁদুর-বিড়াল' খেলা।

নানা নাটকীয়তার পর গতকাল সন্ধ্যায় ডিএমপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানায়, কাজী মাহফুজুর রহমান নাহিদ, কাইয়ুম মিয়া ও এইচ এম কিবরিয়াকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া গতকাল পুলিশ যে চারজনকে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখাতে ঢাকার হাকিম আদালতে আবেদন করেছে, তারা হলেন_ মামুন অর রশিদ, ফারুক হোসেন, কাজী নাহিদুজ্জামান তুহিন ও মোসলেহউদ্দিন মোসলেম। বিশ্বজিৎ হত্যায় জড়িত সন্দেহে ৭ জনের নাম প্রকাশ পেলেও এখনও ধূম্রজাল কাটেনি। তবে গ্রেফতার হওয়া ৭ জনের মধ্যে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন নাহিদ। বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার ছবি প্রকাশিত হয়।

এ ছাড়া হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে এইচএম কিবরিয়ার নামও বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তবে গ্রেফতার হওয়া অন্য ৭ জনের নাম কোনো গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়নি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আর পুলিশের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় জড়িতদের গ্রেফতার নিয়ে গত পাঁচ দিনে নানা নাটকীয়তা তৈরি হয়। গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বিশ্বজিৎ দাস হত্যাকা ে এখন পর্যন্ত ১১ জন বা তার বেশি গ্রেফতার হতে পারে। তার দাবি, এ ঘটনায় গ্রেফতারের বিষয়ে বিভ্রান্তির কোনো অবকাশ নেই।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিবি) উপকমিশনার মনিরুল ইসলাম মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১টার দিকে সাংবাদিকদের জানান, বিশ্বজিৎ হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। পুলিশ ৬ জনকে শনাক্ত করেছে। এমনকি গ্রেফতার হওয়া আসামিদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও বিশ্বজিৎ হত্যায় জড়িত আসামিদের হাজির করা হয়নি। অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সমকালকে বলেন, কোনো আসামি গ্রেফতারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিকটস্থ ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে হাজির করার সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তা না হলে সংবিধান লঙ্ঘন করা হয়।

এ বিষয়ে সংবিধানের ৩৩(২) অনুচ্ছেদে বলা আছে, 'গ্রেফতারকৃত ও প্রহরায় আটক প্রত্যেক ব্যক্তিকে নিকটতম ম্যাজিস্ট্রেটের সম্মুখে চবি্বশ ঘণ্টার মধ্যে (গ্রেফতার স্থান থেকে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে নেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় সময় ব্যতিরেকে) হাজির করা হইবে এবং ম্যাজিস্ট্রেটের আদেশ ব্যতীত তাহাকে তদতিরিক্তকাল প্রহরায় আটক রাখা যাবে না। ' পুলিশ যে চারজনকে বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখাতে ঢাকার হাকিম আদালতে আবেদন করেছে, তাদের মধ্যে মামুনের বাসা রাজধানীর দক্ষিণখানের মধুবাগে, ফারুকের বাড়ি দক্ষিণখানের পূর্বপাড়ার এয়ারপোর্ট লেনে, তুহিনের বাসা ডেমরার সারুলিয়ায়, মোসলেমের বাসা বাড্ডার মধ্যপাড়ায়। বিশ্বজিৎ হত্যাকা ে জড়িত অভিযোগে যাদের ছবি গণমাধ্যমে এসেছে, এই চারজন তাদের মধ্যে নেই। মামুন, ফারুক, তুহিন ও মোসলেমকে বুধবার কোতোয়ালি থানা এলাকা থেকে ৫৪ ধারায় (সন্দেহবশত) গ্রেফতার করা হয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। বিশ্বজিৎ হত্যা মামলায় এই চারজনকে গ্রেফতার দেখাতে গতকাল ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সূত্রাপুর থানার উপপরিদর্শক মাহবুবুল আলম আকন্দ।

হাকিম আশিকুর রহমান সেই আবেদন মঞ্জুর করেন। ঢাকার মহানগর হাকিম আদালতের পুলিশের অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) আনিসুর রহমান জানান, ওই চারজনকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে বুধবার আদালতে হাজির করা হয়েছিল। এদিকে সকালে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার হাইকোর্টে জানান, বিশ্বজিৎ হত্যাকা ে জড়িত থাকার অভিযোগে মাহফুজুর রহমান নাহিদ নামে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মূল আসামি নাহিদসহ তিনজন গ্রেফতার :ডিবির সিনিয়র সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল রাজধানীর পলাশী এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাহফুজুর রহমান নাহিদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি ভোলার দৌলতখানের দক্ষিণ জয়নগর।

২০০৪ সালে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে ভর্তি হন। এ ছাড়া ডিবির অন্য একটি টিম রাজধানীর মগবাজার ওয়্যারলেস এলাকা থেকে এইচএম কিবরিয়া ও মো. কাইয়ুম মিয়া টিপুকে গ্রেফতার করে। কিবরিয়ার গ্রামের বাড়ি বরিশালের আগৈলঝাড়া। কিবরিয়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। কাইয়ুমের গ্রামের বাড়ি কুমিল্লার মুরাদনগর।

তিনি মনোবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। ডিএমপির ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও ফটোসাংবাদিককের ধারণ করা ছবি এবং গোয়েন্দা তথ্য বিশ্লেষণ করে বিশ্বজিৎ হত্যাকাণ্ডে জড়িত দুষ্কৃতকারীদের খোঁজা হচ্ছে। শনাক্ত হওয়া আসামিদের গ্রেফতারে সূত্রাপুর থানার পাশাপাশি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশও অভিযান অব্যাহত রেখেছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।