আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ঘুম এবং গার্লফ্রেন্ড !!

আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !! নিশির মুখ বেশ গম্ভীর মনে হল । কথাটা বলার সময় ওর চেহারায় একবারও হাসির রেখা দেখতে পাই নি । তাহলে কি ও যা বলল তাই করতে যাচ্ছে ? না আআআআ ! এটা হতে পারে না ! আমি একটু হাসার চেষ্টা করলাম । এমন একটা ক্ষীণ ইচ্ছা মনের ভিতর আছে যে আমার হাসি দেখে নিশি নিজেও হেসে উঠবে । কিন্তু নিশি হাসল না ।

বরং আরো একটু গম্ভীর মুখে বলল -তুমি দাঁত বের করে হাসছো কেন ? আমি কি কোন কৌতুক বলেছি ? আমি আবার একটু হেসে বললাম -আরে আমি তো জানি তুমি ফান করছো ! তুমি ব্রেকআপের কথা চিন্তাও করতে পারো না । তাই না ? নিশি একটু তাচ্ছিল্যের কন্ঠে বলল -তাই ? আমাকে দেখে কি মনে হচ্ছে আমি ফান করছি ? -না । -তাহলে ? -কিন্তু .. নিশি আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলল -কোন কিন্তু না । তোমাকে আগেও বললাম এখন আবার বলছি । তোমার সাথে আমি রিলেশন রাখবো না ।

ঠিক আছে ? কথা পরিস্কার হয়েছে ? আমি খানিক করুন কন্ঠে বললাম -পাখি তুমি এসব কি বল ? আমাকে ছাড়া তুমি থাকতে পারবা বল ? এই বলে আমি নিশির দিকে একটু এগিয়ে যাই । ওর হাতটা ধরে বললে নিশ্চই বুঝবে এমন একটা ইচ্ছা । কিন্তু আমার সে আশায় গুরেবালি । নিশি খুব কঠিন কন্ঠে বলল -এই খবরদার কাছে আসবা না । এই হাত ধরার আর কোন অধিকার নেই তোমার ।

আমি থেকে গেলাম । আরও একটু করুন কন্ঠে বললাম -কিন্তু আমি কি এমন করলাম বল ? নিশি আমার দিকে কিছুক্ষন শীতল দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল । তারপর বলল -তোমার সমস্যা এটাই যে তুমি কিছুই কর না । প্রপোজ করার পর থেকে আজ পর্যন্ত কিছু করেছ তুমি ? তুমি কেবল নামেই আমার বয়ফ্রেন্ড । কামে না ! -এসব কি বল তুমি ? -কি বল মানে ? এবার যেন বোমা ফুটলো ! নিশি এতো জোরে চিৎকার করে উঠল যে আমি নিজেই চমকে উঠলাম ।

আসলে আমার কোন ধারনাই ছিল না যে নিশি এতো জোরে কথা বলতে পারে ! কেবল আমি না আশে পাশের কয়েক জন পথচারিও আমাদের দিকে ফিরে চাইল । আমি নিশির দিকে তাকিয়ে দেখি ওর মুখটা কেমন লাল হয়ে গেছে । রাগে ও রীতিমত কাঁপতেছে । আরে আশ্চর্য ! এতো রাগের কি হল ! নিশি নিজেকে সামলাতে কিছুটা সময় নিল । একটু শান্ত হলে নিশি বলল -তুমি আমাকে একটা কারন বল যে আমি তোমার সাথে রিলেশন রাখবো ! প্লিজ এটা বলবা না যে তুমি আমাকে ভালবাসো ! -আরে আর কি বলবো ? আমি তোমাকে ভালবাসি না বল ? তুমি নিজেও জানো যে আমি তোমাকে ভালবাসি ! -ভালবাসো ? আচ্ছা কোন জিনিসটা দেখে আমি বুঝবো যে তুমি আমাকে ভালবাসো ? বলতে পারো ? আমাকে কখনও সময় দিয়েছ তুমি ? আমার সাথে সময় করে কথা বলেছ ? আমি একটু বলতে গেলাম -আরে বলি নি মানে ....।

-কোথায় বলেছে ? মাসের ভিতর একবার আমাকে সময় দেওয়া কে সময় দেওয়া বলে না ! -আরে আমি কাজে ব্যস্ত থাকি তো ! -তোমার ব্যস্ততা আমার জানা আছে । দুনিয়ার আর মানুষ টিউশনী করে না ! ............ আমি চুপ করে থাকি ! নিশির মাথা এখন খুব গরম বোঝা যাচ্ছে ! উল্টা পাল্টা কিছু বললে তখন হিতে বিপরীত হতে পারে । নিশি আবার বলল -আর ঘুম ! আমার তো মনে ঘুম তোমার কাছে সব থেকে ইম্পর্টেন্ট ! রাতে কথা বলতে যাই তুম বল ঘুম আসছে ! সকাল বেলা একটু আগে আগে ভার্সিটিতে আসতে বলি তুমি বল ঘুম আসছে ! ঘুমিয়ে থাকো ! সপ্তাহে একটা মাত্র দিন আমি একটু আগে আগে আসতে বলি তোমাকে ! ঐদিন তো সকালে ক্লাস থাকে তোমার । সাড়ে আট টায় ক্লাস, আধা ঘন্টা আগে আসা কি খুব কষ্টের ? কিন্তু না ! তুমি ঘুমাও !! এবার থেকে শান্তিমত ঘুমাও কেউ তোমাকে আর বাধা দিবে না ! -নিশি, প্লিজ ! একটু বোঝার চেষ্টা কর ! একটু তো আমি ঘুমাই এটা তো তুমি জানোই ! এতটুকুর জন্য ......। -শোন অপু, তুমি ঘুমাও আমার তাতে আমি তো কিছু বলি নি ! কিন্তু তুমি আমাকে ইগনোর কর ! আমার থেকে তোমার কাছে ঘুমটা বেশি জরুরী ! -বাবু.শুনো......।

নিশি বলল -ঢং করবা না ! গত পরশু দিন তোমাকে কতবার ফোন দিলাম একবার আসার জন্য ! আসো নি কেন ? -আমি...আমি তো ঘু... -ঘুমাচ্ছিলে ? কেন আসতে বলেছিলাম জানো ? মনে আছে তোমার ? -কেন ? -কারন গত পরশু দিন আমার জন্মদিন ছিল ! মনে আছে তোমার ? মনে থাকবে কেন ? তুমি তো ঘুমাতেই বিজি ! এই রে !! এই জন্য এতো রাগ ! আসলেই ছেলেদের জন্য তার গার্লফ্রেন্ডের জন্মদিনের কথা ভুলে যাওয়া অন্যায়ের ভিতর পরে ! আসলে আমার নিশির জন্মদিনের কথা ঠিক মনেই নেই ! গত পরশু দিন কি ওর জন্মদিন ছিল ? কি জানি মনেও নেই ! এই ঘুমটা নিয়ে কি যে করি ! কিছুই মনে থাকে না ! আমি আরো কিছুক্ষন ওর জন্মদিনের তারিখটা মনে করার চেষ্টা করলাম । নাহ ! মনে পরছে না ! ও কি আমাকে বলেছিল ? তাও তো মেন নেই ! এখন যদি আমি বলি যে তোমার জন্মদিনের কথা আমার মেনই নেই তাহলে তো আমার খবরই আছে । নিশি বলল -যাক অনেক কথা বলেছি ! আর মনে হয় কথা বলার দরকার নাই । আর এটা ভেব না যে এখান থেকে গেলে আমার রাগ পড়ে যাবে । আমার সাথে যোগাযোগ করার আর চেষ্টা করবা না ।

যদি একটা ফোন আসে তাহলে সোজা মামা কাছে রিপোর্ট করবো ! এই বলে নিশি হাটতে লাগলো ! আমি পেছন পেছন হাটতে যাবো তখনই নিশি আবারও ঘুরে দাড়ালো , বলল -আর পেছন পেছন আসবা না ! আমি কিন্তু মামা কাছে এখনই ফোন দেব ! আমি দাড়িয়ে গেলাম । নিশির মামা পুলিশে চাকরী করে । এই জন্য বলতে গেলে পুরো ডিপার্টমেন্টের কেউই ওকে ঠিক মত ঘাটাতে সাহস পায় না ! আমি দাড়িয়ে গেলাম ! এই সকাল বেলা করে এই সব কি হয়ে গেল । কি চমৎকার দিন কাটছিল ! আর এখন ? আমার এখনও ঠিক বিশ্বাস হচ্ছে না যে নিশি সত্যি সত্যি আমার সাথে ব্রেক আপ করেছে । এই মেয়েটা কি সত্যি আমার সাথে কথা না বলে থাকতে পরবে ? আমি পেছন ফিরে তাকালাম ।

নিশি ততক্ষনে অনেক দুর চলে গেছে । আচ্ছা একবারও ও পেছন ফিরে তাকাবে না ? আমি ক্ষীণ আশা নিয়ে তাকিয়ে রইলাম । কিন্তু সেই আশা পুরন হল না ! নিশি চোখের আড়ালে চলে গেল ! বলতে গেলে আমার জীবনের আড়ালে চলে গেল । আমি হলের দিকে হাটা দিলাম । একটু ঘুমালে হয়তো ভাল লাগবে ! নিশিকে প্রথম দেখেই আমি ওর প্রেমে পরেছিলাম ।

আমার থেকে দুই বছরের জুনিয়র ছিল ও ! আমার ডিপার্টমেন্টেই পরতো ! যখন আমার সামনে দিয়ে হেটে যেত মনে ভিতর কেমন একটা কাঁপুনি উঠত । মনে হত এই মেয়ের সাথে কথা না বলতে পারলে জীবন বৃথা ! টুকটাক কথা বলা শুরু করলাম । নিশি মামা পুলিশে আছে । খুব বেশি কেউই নিশির সাথে টাংকি মারার চেষ্ট করতো না । আমার জন্য ভালই হল ।

এক সময় কেন জানি আর কথাতে মন ভরতো না ! একদিন রাতের বেলা ফোন দিলাম ওকে । বেশ রাতে হয়ে গেছিল । কয়েকবার রিং হওয়ার পর যখন ফোন ধরলো না । লাইন কেটে দিলাম । নিশ্চই ঘুমাচ্ছে ।

কিন্তু একটু পরেই নিশির ফোন এসে হাজির । আমি ফোন রিসিভ করলাম । ভাবছিলাম না আবার কিছু বলে । কিন্তু নিশি স্বাভাবিক ভাবেই বলল -এতো রাতে ভাইয়া ? -না মানে ....! সরি আসলে ..... তুমি মনে হয় ঘুমিয়ে পরেছিলে । সরি ঘুম ভাঙ্গালাম ।

-নাহ ! সমস্যা নাই ! বলেন ! আমি কথা হারিয়ে ফেললাম । কি বলবো কিভাবে বলবো ? কিছুই বুঝতে পরছিলাম না । শেষে না পেরে বললাম -তুমি কালকে সকাল সকাল একটু ভার্র্সিটিতে আসতে পারবে ? একটু কথা ছিল । নিশি একটু ভাবল কি যেন । তারপর বলল -আচ্ছা ! সমস্যা নাই ! আসা যাবে ! -কাঁঠাল তলায় দাড়িও কেমন ! -আচ্ছা ! ফোন রাখার পর মনে হল কি করলাম ।

ওকে ডাক তো দিলাম কিন্তু বলবো কিভাবে ? আর যদি রাজি না হয় ? কিন্তু কিছু করার নাই । বুলেট বের হয়ে গেছে ! রাতে শুয়ে শুয়ে প্লান করতে লাগলাম কি করবো । সকাল বেলা একটু আগে আগেই ভার্সিটি পৌছালাম । নিশি এসে পৌছালো একটু পরেই । আমি কাঁঠাল তলা থেকে একটু দুরে দাড়িয়ে ওর জন্য অপেক্ষা করছিলাম ।

খানিকটা আড়াল থেকেই । নিশি আসলো । এদিক ওদিক দেখতে লাগলো ! আমাকেই খুজতেছে ! আমি ওকে ফোন দিলাম । -কোথায় আপনি ? আমাকে সকাল সকাল আসতে বলে এখন আপনার কোন দেখা নাই ! -আমি এসেছি ! তোমাকে দেখতে পাচ্ছি ! -তাহলে সামনে আসছেন না কেন ? -একটু বামে তাকাও ! নিশি নামে তাকালো । আমাকে দেখে হাত নাড়লো ।

বলল -দুরে দাড়িয়ে কেন ? -নিশি আমি এখন তোমাকে কিছু বলবো ! তুমি একটু বোঝার চেষ্টা করবা ! কেমন ? নিশি চুপ করে আমার দিকে তাকিয়ে রইল ! কাল রাতেই আমি বুঝেছিলাম আমার দ্বারা সরাসরি আই লাভ ইউ বলা সম্ভব না । তাই রাতে কিভাবে হাতের ইশারায় আই লাভ ইউ বলা যায় তাই ভাবছিলাম । নেটে গিয়ে কিছু সাইনও খুজে পেলাম । কিভাবে আঙুলের সাহায্যে আই লাভ ইউ বলা যায় । দুর থেকে দাড়িয়েই ওকে সেই ইশারা করলাম ।

মনে ভিতর খানিকটা সন্দেহ দেখা দিল যে ও ঠিক মত বুঝবে তো আবার ? কিন্তু আমার কেন জানি মনে হল ও ঠিকই বুঝলো ! বুঝেই ওর মুখ কেমন গম্ভীর হয়ে গেল । আমার সাথে কোন কথা না বলে সোজা চলে গেল । মন টা খারাপই হল । কিন্তু কিছু করার নাই ! আমিও মন খারাপ করে হলে ফিরে এলাম । এই মেয়েটার কারনে আমার চোখের ঘুম হারাম হয়ে গেছিল ।

বিছনায় শুয়ে শুয়েই দুদিন কাটিয়ে দিলাম । ঠিক তিন দিনের মাথায় নিশির ফোন এসে হাজির -আপনি কোথায় ? -আমি তো রুমে ! একটু বাইরে আসেন ! আমি কাঁঠাল তলায় আছি ! আমি কাঁঠাল তলায় গিয়ে দেখি নিশি দাড়িয়ে ! আমি একটু জাবুজুবু হয়ে ওর সামনে দাড়িয়ে রইলাম । নিশি বলল -আপনি সেদিন হাতের ইশারায় আমাকে যেন কি বোঝাতে চাইলেন ? আমার বুকের ভিড়টে ঢিপঢিপ করছিল । বারবার মনে হচ্ছিল নিশি এই কথাটা ছাড়া আর অন্য সব নিয়ে কথা বলুক । কিন্তু কপাল নিশি সবার প্রথমে ঐটা নিয়েই কথা শুরু করলো ! আমি বললাম -কি........ মানে ....... বুঝো নি ? -না বলেন কি বলেছেন বা বলতে চেয়েছেন ? আমি কি বলবো ? মনে মনে বললাম সেই কথা যদি আমি মুখেই বলতে পারতাম, তাহলে কি আর তোমাকে ইশারায় বুঝাতাম ! হঠাৎ করেই নিশি জোরে হেসে উঠল ।

কি ব্যাপার ? এই মেয়ে হাসে কেন ? আমি বললাম -কি ব্যাপার হাসো কেন ? নিশি হাসি থামাতে থামাতে বলল -আপনাকে এই বুদ্ধি কে দিয়েছে ? -কোন বুদ্ধি? -এই যে প্রপোজ করার এই বুদ্ধিটা ? কথা বলতে পারেন না ? মুখ নেই ? নাকি ভোকাল কর্ডে জং পরেছিল । আই লাভ ইউ বা তোমাকে ভালবাসি এই লাইনটা বলা কি খুব বেশি সমস্যা ? আমার লজ্জার সীমা রইলো না । নিশি আবার বলল -এট লিষ্ট লিখে দিতে পারতেন ? অথবা মেসেজ পাঠাতেন !ঐ দিন একটু মেজাজ খারাপ হয়েছিল কিন্তু ..... -কিন্তু ? নিশি একটু মুচকি হাসি দিয়ে বলল -এখন ঠিক আছে !! আর এখন থেকে প্লিজ সরাসরি বলবেন । কেমন ? কত দিনের আগের কথা এগুলো ! প্রথম প্রথম কি চমৎকারই না দিন কেটেছে ! তারপর আমি নিজেই কেমন জানি ঘুমের প্রতি একটু বেশি আগ্রহী হয়ে উঠলাম । আসলে ঘুমাতে আমার বরাবরই খুব ভাল লাগে ।

তার উপর আবার শীত কাল চলে এসেছে এখনতো ঘুমাতে আরো মজা ! কথা সত্যি যে নিশিকে একটু সময় কম দেওয়া হয়েছে । তাই বলে একেবারে ব্রেক আপ ! অবশ্য জন্মদিনের কথা আমার ভুলে যাওয়া একদম ঠিক দম ঠিক হয় নি ! কিন্তু ও আমার কথা একটুও ভাববে না ?? আমি কিভাবে থাকবো ? একবার মনে হল যাক ! যা গেছে যাক !! আমি লেপ মুড়ি দিয়ে গুমিয়ে পড়ি । ঘুমালে সব কিছু ভুলে যাবো ! কিন্তু বিছানা কেবল এপাশ ওপাশ করলাম কিন্তু ঘুম আসলোই না কিছুতেই ! পরপর তিনটা দিন পার হয়ে গেল আমার এফোটা ঘুম আসলো না ! এই তিন দিনে নিশি আমাকে একটা বারও ফোন দেই নি ! ফোন না দিয়ে মেয়েটা আছে কিভাবে ? আগে ঘন্টায় ঘন্টায় আমাকে ফোন দিত । আর আমি যখন ঘুমাতে যাবো ঠিক তখনই যেন বেছে বেছে ও ফোন দিন ! মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে ফোন রেখে দিতাম ! এই বুঝতে পারছি বেচারি তখন কি যে কষ্টই না পেত ! এখন আমি বুঝতে পারছি ! ইস আর একটা সুযোগ যদি পাওয়া যেত ! নিশির কথা ভাবতে ভাবতে কখন যে ভোর হয়ে গেছে আমি টেরই পাইনি ! সুমনের কথায় বাস্তবে ফিরে এলাম । সুমন খানিকটা অবাক চোখে আমার দিকে তাকিয়ে বলল -তুই এতো সকালে ? তোর ঘুম ভাঙ্গলো কিভাবে ? -ঘুমাই নি ! ভাঙ্গবে কিভাবে ? সুমন সত্যি আমার দিকে অবিশ্বাসের চোখে তাকিয়ে রইলো ! তাকিয়ে থাকারই কথা ।

আমি কি পরিমান ঘুমাই সেটা সুমনের থেকে আর ভাল কেউ জানে না ! আমাকে এভাবে না ঘুমাতে দেখে ওর অবাক হওয়ারই কথা ! এই তিনদিন বাসা থেকে বের হই একদমই ! কিন্তু আজকে বের হতে হল ! যোবায়ের স্যারের একটা জরুরী ক্লাস ছিল । না করলেই নয় ! ক্লাস থেকে বের হতেই দেখি নিশি ! ওর বান্ধবীর সাথে দাড়িয়ে দাড়িয়ে গল্প করছে । আহ ! কি স্বাভাবিক দেখাচ্ছে ! তাহলে কি ওর কোন ফিলিংস ই নাই ! ওর জন্য যে তিন দিন আমি এক ফোটা ঘুমাতেও পারি নাই আর এই মাইয়া দেখি একদম ঠিক আছে । আসলেই মেয়েরা এমনই হয় ! আমি কিছুক্ষন দাড়িয়েই রইলাম ! নিশিতো আর আসবে না ! আমি না হয় একটু দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখি ওকে ! এই তো আমার দিকে একটু তাকালো ! কিন্তু এমন একটা ভাব যেন আমাকে চেনেই না ! হায়রে কপাল ! বুঝতে পারছি আজকে রাতেও আমার ঘুম আসবে না ! আজকে রাতে কেন আর হয়তো ঘুমই আসবে না ! আর এই মাইয়া নিশ্চই বাসায় গিয়ে শান্তি মত ঘুমাবে ?? নিশি আমার সামনে দিয়েই চলে গেল আমর দিকে একটু চাইলো ও না ! একবার ভাবলাম ডাক দেই । কিন্তু পরে মনে হল কি লাভ !! কাঁঠাল তলায় বসে রইলাম একা একা !! কিছুক্ষন পর কেউ এসে আমার সামনে দাড়াল ।

মুখ তুলে তাকিয়ে প্রথমে বিশ্বাস হল না । মনে হল হয়তো স্বপ্ন দেখছি ! নিশি !! আমি কেবল চুপ করে তাকিয়ে রইলাম । কোন আওয়াজ হলে হয়তো আমার ঘুম ভেঙ্গে যাবে ! নিশি আমার সামনে থেকে চলে যাবো ! কিছুটা সময় নিশি আমার দিকে তাকিয়ে থেকে বলল -শুনলাম তোমি নাকি ঘুমাও তিন ধরে ? আমি কিছু বললাম না । চুপ করে রইলাম । নিশি আবার বলল -যাক ! আমার কারনে তোমার ঘুম নষ্ট হয়েছে এটা জেনে ভাল লাগছে ! দেকছো এই মেয়ে কয় কি ? আমি তার জন্য শান্তি মত রাতে ঘুমাতে পারছি না আর এই মেয়ে কয় যে তার ভাল লেগেছে !!!! নিশি আবার বলল -তাহলে দেখা যাচ্ছে ঘুমের ঠেকেও আমি জরুরী তোমার কাছে, তাই না ? আমি মৃদু কন্ঠে বললাম -হুম ! -জোরে বল ! -হ্যা ! নিশি এবার আমার পাশে এসে বসল ।

তারপর বলল -আমি কেবল এইটাই তোমাকে বোঝাতে চেয়েছি ! তুমি চট করে বুঝতে পেরেছ দেখে ভাল লাগছে ! -মানে ? -মানে কিছু না ! তোমাকে একটু টাইট দিলাম ! -টাইট ? নিশি একটু হাসলো ! আমি বললাম -সত্যি তাহলে তুমি আমা রসাথে ব্রেক আপ কর নি ! -নাহ ! কি বল ! -সত্যি তো ? -হুম ! -আর জন্মদিনের ব্যাপার টা ? বিশ্বাস কর আমার মনেই ছিল না ! এবার দেখি নিশি আরো জোরে হেসে উঠল ! -আমার জম্মদিন সেদিন ছিল না । আসলে তুমি এতো কনফিউজ ছিলে যে ধরতে পারো নি । আমার জন্মদিন আগামী মাসে ! আমি কেবল অবাক হয়ে এই মেয়ের দিকে তাকিয়ে রইলাম । নিশি বলল -তাই বলে এই ভেব না যে আমি ফান করেছি । আমি কিন্তু ঐ সব ব্যাপার নিয়ে সিরিয়াস ! এবার যদি যাই তাহলে কিন্তু আর আসব না ! আর একটা সুযোগ চেয়েছিলাম আমি ! সেই সুযোগ এসে হাজির ! আমি আর কিছুতেই এটা হারাতে চাই না ! ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।