যে সকল ছাগু আর ভাদা আসে আশপাশ, জীনের বাদশা তাদের পিছে দেয় মুলি বাঁশ। এই পোস্টের লেখককে ধরে শক্ত প্যাদানী দেবার আগেই বলে রাখি,এই লেখাটা কাউকে হেয় বা ছোট করার জন্য লেখা হয় নাই। সমস্ত ব্লগার ভাই ও বোনেরা, বিশেষ করে নিউক্যালী থুক্কু নোয়াখালীর ব্লগাররা একদমই ক্যাচাল করবেন না। বেশ কিছুদিন ধরে এই সিরিজটা শুরু করার জন্য হাত নিশপিশ করছিল। কিন্তু পিঠে ছালা বেঁধে মাইর খাইতে কোনভাবেই আমি রাজি ছিলাম না।
আজকে অনেক সাহস করে লিখে ফেললাম। ব্লগে সবাই আসে রিলাক্স হতে, তাই নিছকই মজা করার জন্যই লেখা। আশা করি সবাই সেই দৃষ্টিতে দেখবেন। আর কথা না বাড়িয়ে মূল কাহিনীতে চলে যাচ্ছি।
টরেন্টো থেকে বিমানে করে সিডনি যাচ্ছিল একদল পর্যটক।
উদ্দেশ্য একটাই পৃথিবীটাকে আরও ভাল করে জানা, শোনা আর দেখা। সৌভাগ্যক্রমে সেই বিমানের কিছু যাত্রী ছিল বাংলাদেশের এবং যথারীতি নোয়াখালীর। জনশ্রুতি আছে যে, এই সৌরজগতের এমন কোন জায়গা নাই, যেখানে নোয়াখালীর দুই একটা লোক পাওয়া যাবেনা। তারা সর্বগামী আর সর্বগ্রাসীও বটে। এটা মোটামোটি প্রচলিত একটা মিথ।
সে যাই হোক, বিমান রানওয়ে ছাড়ার পরপরই নোয়াখালীর পাবলিক যে কি চীজ তা বিমানের অন্য সব যাত্রী হাড়ে হাড়ে টের পেতে লাগল। বিমান একটু উপরে উঠার পর তাদের তান্ডব শুরু হল। প্রথমেই কয়েকজন নিজেদের বাড়ি মনে করে সিটের উপর পা তুলে দিয়ে দাত বের করে হাসতে লাগল। যেন এটা ফেনী টু দাগনভূইঞা কোন লোকাল বাস সার্ভিস। দুই একজনের পরনে লুঙ্গি ছিল, তারা একটু রিলাক্স হবার জন্য লুঙ্গির গিঠ আলগা করে দিয়ে হাটতে লাগল, কিন্তু তাদের লুঙ্গি কোমরের একটু উপরে বিপদজনক ভঙ্গিতে ঝুলতে লাগল, যে কোন মুহুর্তে লুঙ্গি খুলে গিয়ে বিপদের সমূহ সম্ভাবনা আছে।
সেই দিকে তাদের কোন নজর নাই, কিন্তু মহিলা বিশেষ করে বয়স্ক যারা তারা বার বার আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ও ভীত চোখে তাদের দিকে তাকাতে লাগল। আরেকজন গেল টয়লেটে, তার জরুরী প্রকৃতির ডাকের নমুনা স্বরূপ পুরো বিমান মূহুর্তের মধ্যে নাৎসীদের গ্যাস চেম্বারে পরিনত হল। টয়লেট পুরা গান্ধা হয়ে যাবার পর, পুরা বিমানে মধ্যে তা এক পলকা দখিনা হাওয়ার মত বয়ে গেল। বিমানের শক্তিশালী এয়ার সার্কুলেশন সিস্টেমও এইখানে ফেল মারল। যাত্রীদের মধ্যে যারা মহিলা ও শিশু ছিল প্রবল বায়ু দূষনে তাদের অনেকে অজ্ঞানের মত হয়ে গেল।
ইতিমধ্যে আরেকজনের বিড়ি খাবার শখ হল, বিড়ি ধরানোর চেষ্টা করতেই অন্য সব যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে সেই দিকে বার বার উকি দিয়ে দেখতে লাগল। শেষে এয়ার হোস্টেস এসে তাকে অনেক বলে কয়ে নিবৃত্ত করল। ইতিমধ্যে খাওয়া-দাওয়ার পর্ব এল, সুন্দরী এয়ার হোস্টেসরা সবার মাঝে লাঞ্চ বিতরণ করল। নোয়াখালীর সব যাত্রীরা খাবারের উপর একযোগে ঝাপিয়ে পড়ল। নানাপদের খাবার নিমিষেই সাবাড় করে ফেলল।
উৎপাতের ব্যাপারটা এইখানেই শেষ হয়ে গেলে ভাল হত, কিন্তু নোয়াখালীর যাত্রী বলে কথা। শুরু হল নতুন ধরনের উপদ্রব। মুরগীর রোস্ট, চিজ এবং পনির আর কোকাকোলার মত মিলিত ভূরিভোজন অনেকের পেটে ঠিকমত হজম হলনা। ফলাফলস্বরূপ এই তিন পদের খাবারের ট্রিপল অ্যাকশন ভয়াবহ রুপ ধারন করল। কিছুক্ষনের মধ্যে আরম্ভ হল, মিউজিক্যাল অপেরার মত সম্মিলিত বায়ু নিঃসরণ
প্রতিযোগিতা, তাও আবার বিকট শব্দ সহকারে।
ডুশ-ডাশ শব্দে আকাশ বাতাস কাপিয়ে এক একজন বায়বীয় বিষ টিয়ার গ্যাসের মত ছুড়ে দিতে লাগল। একজন থামে তো আরেকজনের আরম্ভ হয়ে যায়। অন্যসব যাত্রীরা যারা এতক্ষন সব অত্যাচার নিরবে সহ্য করছিল তাদের অনেকের মুখ ভয়ে আর আতংকে মরার মত হয়ে গেল। অনেকেই মাস্ক মুখে নিয়েও চোখ উল্টে দিয়ে অজ্ঞান হয়ে গেল। এত সব ঘটনার পরেও নোয়াখালীর সব যাত্রী পুরোপুরি নির্বিকার।
এদিকে বিমানের ভেতর এত কান্ড হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ককপিটের ভেতর পাইলট তার বিন্দু-বিসর্গও টের পেলনা। তারা তাদের দায়িত্ব ঠিকমত পালন করতে লাগল। বিমান ইতিমধ্যে ইউরোপের আকাশে চলে এল। কিছুক্ষণের মধ্যে সব যাত্রীদের উদ্দেশ্যে পাইলট ঘোষনা করল, “ সম্মানিত যাত্রীগন আমরা কিছু সময়ের মধ্যে বিষুবরেখা অতিক্রম করব। খারাপ আবহাওয়ার কারনে বিমান কিছুটা টার্বোলেন্সের মধ্যে পড়তে পারে।
তাই আপনাদের কিছুটা ঝাকুনি জনিত অসুবিধা হবে। এই সাময়িক অসুবিধার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। আপনারা দয়া করে আপনাদের সিট বেল্ট বেঁধে নিন। আপনাদের সকলের যাত্রা শুভ হোক। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
” এই ঘোষনার পর নোয়াখালীর সব যাত্রীদের মাঝে অসম্ভব রকম প্রাণচাঞ্চল্য ও উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেল। যতটা না খারাপ আবহাওয়ার জন্য তারচেয়েও বেশী বিষুবরেখা দেখার বিরল অভিজ্ঞতার জন্য। পড়িমড়ি করে সবাই ছুটল জানালার পাশে বিষুবরেখা নামক বস্তুকে দেখার জন্য। অজ্ঞানতাবশত অনেকেই ধরে নিল, এটা চীনের মহাপ্রাচীর বা তাজমহলের মত কোন দর্শনীয় জায়গা। কিন্তু বিমান ইউরোপ,মধ্যপ্রাচ্য পার হয়ে,এশিয়া পার হয়ে যাবার অনেকক্ষন পরও কিছু দেখা গেলনা।
এদিকে নোয়াখালীর যাত্রীরা তাদের ঠকানো হয়েছে ভেবে সবাই প্রচন্ড রাগে ভয়ানক শোরগোল আর চিৎকার চেঁচামেচি শুরু করলো। তাদের কয়েকজন গলার রগ ফুলিয়ে চেঁচাতে লাগল আর বলতে লাগল “ শালারা বাটপার কোনানহার!! হমুন্দির পুতেরা রেখা না রাস্তা কিডা দেখাইবার কয়ছিল, মুই এহনও ত কিছুই দেইখবার পারলাম না। আরেকজন ইতিমধ্যে ঘোষনা দিল, রেখা না দেখা পর্যন্ত এই বিমান মাটিতে ল্যান্ড করতে দিবেনা। এদের মধ্যে নেতাগোছের একজন ছিল। সে সবার ভেতর আগুনে ঘি ঢেলে দিল।
প্রচন্ড চিৎকার চেঁচামেচি আর জ্বালাময়ী ভাষন দিয়ে সবার মাথা খারাপ করে দিল। সাফ জানিয়ে দিল, পাইলট হালাদের গুষ্টি আজকে উদ্ধার করে ছাড়বে। রেখা যদি দেখাইতে না পারে তাহলে বিমানের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে নালিশ জানানো হবে আর পাইলটদের চাকরী খাবার ব্যবস্থা করা হবে। বিমানের ভেতরটা কান ফাটানো চিৎকার চেঁচামেচি আর হট্টগোলে নরক গুলজার হয়ে গেল।
এই অসহনীয় অবস্থায় প্রাথমিকভাবে এয়ার হোস্টেসরা সবাই মিলে তাদের থামানোর চেষ্টা করতে লাগল।
প্রানপন বুঝানোর চেস্টা করতে লাগলো, বিষুবরেখা পৃথিবীকে সমান দুইভাগে বিভক্তকারী একটা কাল্পনিক রেখা মাত্র। বস্তুত এর কোন অস্তিত্ব নাই। তাই এ রেখা দেখা যাবার কোন প্রশ্নই আসেনা। কিন্তু কে শুনে কার কথা, নোয়াখালীর সব যাত্রীরা ষাড়ের মত গো ধরে রইল। পরিস্কার জানিয়ে দিল, রেখা যদি দেখাইতে না পারে তাহলে সবারই খবর আছে।
নানাভাবে চেষ্টার পরও যখন কাজ হল না তখন নিতান্ত বাধ্য হয়ে এয়ার হোস্টেসরা ককপিটে ঢুকে পাইলটকে সমস্ত পরিস্থিতির ভয়াবহতা ব্যাখ্যা করল। ইতিমধ্যে পাইলট বিমানের ভেতর যে কিছু একটা ঘটছে তা টের পেয়েছিল, কিন্তু এয়ার হোস্টসদের মুখে সব শুনার পর তার মাথা খারাপের মত হয়ে গেল। চিন্তায় বিমর্ষ হয়ে ভাবতে লাগল,এটা কোন নতুন ধরনের মুসিবতে পড়া গেল। একটি ফ্লাইটে সাধারনত দুইজন পাইলট থাকে, একজন মুল পাইলট যিনি বিমানের উড্ডয়ন সংক্রান্ত সমস্ত ইকুপমেন্টস পরিচালনা করেন। আরেকজন থাকে কো-পাইলট, যিনি নানারকম দিক-নির্দেশনা আর তথ্য দিয়ে মূল পাইলটকে সাহায্য করেন।
ঘটনাক্রমে সেদিন বিমানের কো-পাইলট ছিলেন একজন লম্বা স্বর্ণকেশী সুদর্শন মহিলা। মূল পাইলট অনেক ভেবে চিন্তে সব কিছু নিয়ন্ত্রনে আনার জন্য তাকে পাঠালেন। ভদ্রমহিলা ককপিট ছেড়ে মূল ডেকে গিয়ে নোয়াখালীর সব যাত্রীকে অশেষ ধৈর্য্য আর প্রানপন চেষ্টা করে বুঝাতে লাগলেন। কিন্তু তার নোয়াখালীর পাবলিক সমন্ধে কোন ধারনাই ছিলনা। তিনি যতই তাদের বুঝানোর চেষ্টা করেন, ততই তারা ঘাড় ত্যাড়া করে জোর গলায় রেখা দেখানোর দাবি জানাতে লাগল।
মাথা পুরোপুরি খারাপ হবার আগে তিনিও হাল ছেড়ে দিলেন। ককপিটে ফিরে গিয়ে পাইলটকে তার অপারগতার কথা বললেন। পাইলট পড়লেন মহা ফ্যাসাদে, এমনিতে ফ্লাইট সিকনেসে তার মাথা খারাপ হবার দশা তারপরও তিনি বিমান চালাচ্ছেন। এরমধ্যে এই যন্ত্রনা। কিন্তু তিনি ঘাবড়ে গেলেন না, এই ধরনের যাত্রীকে কিভাবে টাইট দিতে হয় তার ভাল করে জানা আছে।
অনেক ভেবে চিন্তে তিনি একটা বুদ্ধি বের করলেন। বিমানের ককপিটে একটা টু-ওয়ে হাই ডেফিনেশন ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো ছিল, যেটা দিয়ে ককপিট থেকে পাইলটরা মূল ডেকে কি হচ্ছে টা দেখতে পারেন আবার যাত্রীরাও বিগ এলসিডি স্কৃনে ককপিটের ভেতর কি হচ্ছে তাও দেখতে পারেন। পাইলট এই ক্যামেরাটাকেই কাজে লাগালেন। যেহেতু কো-পাইলটের ছিল লম্বা চুল, তাই তাকে একটা ঝটপট চুল ছিড়ে দিতে বললেন। তিনিও তাই করলেন, এরপর পাইলট তাকে নির্দেশ দিলেন, চুলটা ক্যামেরাটা ঝুম করে তার সামনে ধরতে আর বিষুবরেখা দেখা যাবার ঘোষনা দিতে।
ভদ্রমহিলা তাই করলেন। কিছুক্ষন পর লাউড স্পিকারে নতুন ঘোষনা আসল,“ আপনারা কিছুক্ষনের মধ্যে অতি আখাংকিত বিষুবরেখা দেখতে পাবেন। সবাই দয়া করে চিৎকার চেচামেচি বন্ধ করুন। আপনাদের সকলের যাত্রা শুভ হোক। ” ওদিকে এই ঘোষনার পর নোয়াখালীর যাত্রীদের উল্লসিত চিৎকার শোনা গেল।
অল্পকিছুক্ষন পরেই বিগ স্কৃনে চুলের ছবি ঝুম হয়ে ভেসে আসলো, সাথে সাথে নোয়াখালীর যাত্রীরা সেটাকেই বিষুবরেখা ধরে নিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়ল। কারও মাথায় এটা এলোনা যে, তাদের নন্দ দুলাল বানানো হয়েছে। সবাই খুব খুশি হলো এই ভেবে যে, শেষ পর্যন্ত তাহলে বিষুবরেখা দেখা গেল। এই আনন্দে চারপাশ থেকে সরেস সব মন্তব্য ভেসে আসতে লাগলো। সবচেয়ে মজার কমেন্ট করলো নেতাগোছের যে ছিল, সবার উদ্দেশ্যে তার মতামত দিল এইভাবে,
“ আবে তোরা দেকচচ নি হালাই, কি সুন্দর রাস্তা দেখা যায়, রাস্তার উপর দেহি একটা বেবীটেক্সীও দেহা যায়।
”
এখন সবাই বলেন দেখি, বিষুবরেখাকে না হয় রাস্তা বলে চালিয়ে দেয়া যায় কিন্তু বেবীটেক্সীটা কি ছিল??
কেঊ কি বলতে পারবেন?
সবাইকে নিরন্তন শুভেচ্ছা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।