সকালে উঠেই দেখি আমার চাচাতো ভাইয়ের ছেলে সাকিব একটা বাচ্চা কুকুর নিয়ে খেলছে আর তার মা মানে আমার ভাবি হাতে চায়ের মগ নিয়ে চোখ কুঁচকে ছেলের দিকে তাকিয়ে আছে | অন্যসব কুকুর বা বিড়াল ছানার মতো যথারীতি বাচ্চাটা খুব ই সুন্দর, সাদা রং,কান দুটো কালো,গায়ে দু তিনটা কালো ছোপ ও আছে| জানাগেল ওদের কাজের বুয়া এটা কোথা থেকে যেন জোগার করে এনেছে সাকিবের শখমেটাতে| ছোট বেলায় আমার ও এমন একটা পোষার প্রবল ইচ্ছে ছিল যা থেকে আমাকে আমার পিতামাতার ধমক নির্বিত করেছিলো| যায় হোক, কিছুহ্মণ পর ভাবী বুয়া কে নির্দেশ দিলেন বাচ্চাটাকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে আসতে| বুয়া ওটাকে প্রায় ছুরে রাস্তাতে ফেলেদিয়ে আসলো আর বাচ্চাটা ঠিক রাস্তার মাঝখানে বসে থাকলো| আমি বুয়াকে বললাম,রাস্তার পাশে এক জায়গাতে নামিয়ে দিলেও তো পারতেন ছুরে ফেললেন কেন? আমার কথায় সে একগাল হেসে যা বললো তা হচ্ছে, কুত্তার বাচ্চার এতে কিছু হয়না, ওটা ঠিক পথ খুজে নেবে| আমি ছাদে চলে আসলাম, শুক্রবার বলে আজ যানবাহন কম তার পর ও যেটাই যাচ্ছে ওটাকে পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে আর এতেই বাচ্চাটা ভয়তে কেঁপে কেঁপে উঠছে আর কিউ কিউ শব্দ করছে| দুটা প্রাইভেট কার ওটার ঠিক উপর দিয়ে চলেগেল আমি দুই বার ই চোখ বন্ধকরে ফেলেছিলাম, কিন্তু সৌভাগ্য ক্রমে বাচ্চাটা বেবিস ডে আউট এর বাচ্চাটার মতো অহ্মত থাকলো| আমি ছাদে দাড়ায়ে আছি অনেক হ্মণ আব্বা এসে আমাকে চলে আসতে বললেন সকালের নাস্তা করতে,আমার এ ছেলেমানুষীতে তিনি যথেষ্ট বিরক্ত মনে হলো| যারা ই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে তারাই ওটার দিকে তাকাচ্ছে, সুন্দরের প্রতি একটা আকর্ষণ আছে বলে হয়তো| একজন এই হুট হুট করে ওটাকে কয়েক বার তাড়ালো ও, কিন্তু বাচ্চাটা উঠে কয়েক পা আস্তে আস্তে দৌড়িয়ে আবার রাস্তার মাঝে এসে বসলো| লোকটা আর চেষ্টা করলো না, অন্য জীবের প্রতি সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষের দায়িত্ব এতেই সে পালন করে ফেলেছে বোধ হয়| বেলা বাড়ছে রাস্তায় যানবাহণ ও বাড়ছে, বাচ্চাটার অবস্থান পরিবর্তনের কোন লহ্মণ নেই| একটা টোকাই কে বাচ্চাটার দিকে যেতে দেখে মনে হলো ওটা একটা নিরাপদ আশ্রয় পেতে যাচ্ছে, যাক কেও না কেও তো অন্য সৃষ্টির প্রতি দয়া দেখাচ্ছে মানুষের দায়িত্ব পালন করছে| নিজের সন্তানের বিনোদন শেষে অন্যের সন্তান ছুরে রাস্তায় ফেলে দিচ্ছেনা, অসহায় জীবকে দেখে তাকে উদ্ধার না করে আমার মতো দূর থেকে আলৌকিক কিছুর আশাও করছেনা| টোকাই ছেলেটার প্রতি আমি কৃতঙ্গতা প্রকাশ করলাম মানুষের উপযুক্ত প্রতিনিধির কাজ টি করতে এগিয়ে যাবার জন্য| কিন্তু এই টোকাই ছেলেটা উপযুক্ত পৃষ্ঠপোশকতা পেলে ভবিষ্যতে আমরা একজন পেলে বা মেরাডোনা পাতে ও পারি হয়তো এটা আমার জনার তখনো বাকি ছিলো, তার শক্তিশালী কিকআফ দেখে আমার ওটাই মনে হলো| আমি আর ছাদে দাড়ালাম না, ইতিমধ্য আমার মা অস্থির হয়েগেছেন সাড়ে দশটা বাজে অথচ তার ছেলে কেন সকালের নাস্তার খাচ্ছেনা তাই | আমার মন খারাপ করার ও কিছু নেই,কারন আমি জানি এটা ছেলেমানুষী| মানুষের একটা লাথি তে কুত্তার বাচ্চার কিছু হয়না, ওটা ঠিক ই ওর পথ খুজে নেবে.....
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।