আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চিট ফান্ড চাঁই

আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যকুল ... ভারতের পশ্চিমবঙ্গের চিট ফান্ড চাঁই (প্রতারকদের সরদার) সুদীপ্ত সেনের নাম এখন জানা অনেকের। সেখানকার সারদা গ্রুপের মালিক তিনি। রাতারাতি ধনী হওয়ার লোভ দেখিয়ে ওখানকার লাখ লাখ মানুষের কাছ থেকে আমানত সংগ্রহ করেছিল গ্রুপটি। জানা গেছে, কেউ কেউ ধনী হয়েছেনও। তবে সিংহভাগের ক্ষেত্রেই যা ঘটেছে তা হলো, তারা এখন সর্বস্বান্ত।

আমানতকারীরা অনেক পরে এসে বুঝতে পারেন— অতি লোভে তাঁতী নষ্ট হয়েছে তাদের; প্রতারণার শিকার হয়েছেন তারা। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর পশ্চিমবঙ্গ সরকার যখন এ ব্যাপারে সক্রিয় হয়েছে, তখন এর একটা ফয়সালা হয়তো হবে। তবে প্রশ্ন অন্যত্র। এ গ্রুপের মালিকানায় রয়েছে তিনটি জনপ্রিয় টিভি চ্যানেল— তারা নিউজ, তারা মিউজিক ও টিভি সাউথ এশিয়া। ব্যবসা নিয়ে বিপাকে পড়ার পর এসব চ্যানেলে অর্থায়ন বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে সারদা গ্রুপ।

এর মধ্য দিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে চ্যানেল তিনটিসহ এর কর্মীদের ভবিষ্যত্। মিডিয়ায় এমন টানাপড়েন নতুন নয়। তবে এ ঘটনায় যে নতুন বার্তা আছে, তা বলাই বাহুল্য। কারা হচ্ছেন মিডিয়ার মালিক? এতে বিনিয়োগ করা অর্থের উত্স কী? সাম্প্রতিক কালে আমাদের এখানে মিডিয়ার প্রসার ঘটেছে। একের পর এক আসছে সংবাদপত্র, রেডিও ও টিভি চ্যানেল।

একে শিল্প হিসেবেও অভিহিত করেন কেউ কেউ। তবে এটা ঠিক, অন্য শিল্পের সঙ্গে এর রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। সেজন্য কে এ ধরনের প্রতিষ্ঠানের মালিক হতে পারবেন, সে ব্যাপারে বিশেষ বাধ্যবাধকতা থাকা প্রয়োজন। আমাদের এখানে তা আছে কি? বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, এর মালিক ব্যবসায়ীরাই। মিডিয়া করতে বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে।

সেজন্যই হয়তো এতে ব্যবসায়ীদের সংশ্লিষ্টতা বেশি। প্রশ্ন হলো, অনুমোদন দেয়ার সময় এতে অর্থায়নের উত্স সম্পর্কে কর্তৃপক্ষ খোঁজ নেয় কি? অবৈধ ব্যবসা সামাল দিতে মিডিয়াকে ব্যবহারের নজির অন্যান্য দেশেও কমবেশি রয়েছে। সারদা গ্রুপের প্রতারণার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর এ নিয়ে প্রশ্নের অন্ত নেই। কেউ কেউ এ প্রশ্নও তুলেছেন, ২০১০ সালে চ্যানেলগুলো কিনে নেয়ার পেছনে তেমন উদ্দেশ্যই কি ছিল মালিকের? এতে তাদের মালিকানায় পরিচালিত টিভি চ্যানেলগুলোর ভাবমূর্তি যে ক্ষুণ্ন হয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অনুষ্ঠানের মানের দিক থেকে এগিয়ে থাকলেও টিভি চ্যানেলগুলোর প্রতি আস্থা নষ্ট হতে পারে মানুষের।

এ ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পরও কর্মীরা চাইছেন, সচল থাকুক চ্যানেলগুলো। ঘটনাটি চ্যানেলগুলোর জনপ্রিয়তায় প্রভাব ফেলেবে কিনা, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তবে পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে দর্শকরা এসব চ্যানেল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিলে সেটাও হবে শঙ্কার কারণ। বাংলাদেশেও নতুন কোনো মিডিয়া আসছে এমন সংবাদ প্রচার হলে এ প্রশ্নও শুনি— মালিক কে? কোন গ্রুপের মিডিয়া এটি? এসব প্রশ্ন মানুষ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে করে কিনা, জানি না। তবে মিডিয়া ও এর মালিকানা ঘিরে কিছু ক্ষেত্রে প্রতারণা ও অনৈতিক কর্মকাণ্ড আমাদের এখানেও যেভাবে বেড়ে উঠেছে, তাতে এ নিয়ে ভেবে দেখার সময় এসেছে।

প্রতারক মালিকদের খপ্পরে পড়ে শুধু সাধারণ মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত বা হয়রানির শিকার হচ্ছে না, কখনো কখনো বিপদে পড়তে হচ্ছে কর্মীদেরও। এ প্রবণতা না রুখলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। মিডিয়ার প্রতি একশ্রেণীর ব্যবসায়ীর আগ্রহ স্পষ্ট। পশ্চিমবঙ্গের মতো ঘটনা আমাদের এখানে এরই মধ্যে ঘটেছে কিনা, সেটাও খতিয়ে দেখা দরকার। সুদীপ্তর মতো প্রতারক যে বাংলাদেশেও আছে, তা কারো অজানা নয়।

কথায় আছে— চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। তাতে অবশ্য কোনো লাভ হয় না। লিংক Click This Link ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।