কৃএিমতা নয়,আমার আমিকে খুঁজতে চাই.....। -''ওই কই যাস। আস্তে দৌড়া বেটা। ''
-আমি তো আজ নাই, মামা। আমি আজ পুরাই হাওয়া.............।
।
১ম প্রফেশনাল পরীক্ষা দেবার পর আর দশটা মেডিকেল ষ্টুডেন্ট এর যা হয়,আতিকের ক্ষেএেও এর ব্যতীক্রম হয়নি। বায়োকেমিষ্ট্রী ভাইভার আগে সবাই যখন টেনশনে অস্থির, তখন আতিকের অস্থিরতাও তুঙ্গে। তবে আতিকের ব্যাপারটা অন্য রকম। পরীক্ষা,ভাইভা কখনোই ওকে ভীত করতে পারেনি।
আজ অনেকদিন পর ও বাড়ি যাবে। গত রাতেই ফোন দিয়ে টিকিট বুক করে রাখছে,এখন শুধু পরীক্ষা শেষ হবার অপেক্ষা। সময়টা যায়না কেন তাড়াতাড়ি ভীষণ অধৈর্য লাগছে। পেটের ভেতরে সুরসুরি লাগছে।
এইতো এবার ডাক পড়ল।
স্যারের সামনে গিয়ে অস্থিরতা যেন আরও বেড়ে গেল। স্যারের প্রত্যেকটা প্রশ্নের যেন একটাই উওর হওয়া সম্ভব ওই মুহূর্তে-বাড়ি যাব.। .। .। .।
.। .। .। .। .।
.। ।
কলেজ থেকে বের হয়ে, তড়িঘড়ি করে হলে আসা। 'আজ ডাইনিংয়ের খাবারও যেন অমৃতের গন্ধ ছড়াচ্ছে। খাওয়া শেষ করে ঘুমনোর চেষ্টা করল।
অদ্ভূত তো ঘুম আসছেনা কেন?এই কয়টা মাস ওর শুধুই মনে হোত পরীক্ষা শেষ হোক,শুধুই ঘুমাবো। অথচ আজ ঘুম আসছেই না। রুমমেটরা সব নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। বারান্দায় আসল ও। আকাশটাকে যে কী অদ্ভূত সুন্দর দেখাচ্ছে!!!ছুঁয়ে দিতে ইচ্ছে করছে।
মায়ের কথা মনে পড়ে গেল। এ রকম একটা মায়াময় সোহাগে মানুষটা আতিকের পুরো পৃথবীটাকে যেন আগলায় রাখছে। আজ ও ওর মার কাছে যাবে।
সন্ধ্যা থেকেই পেটের ডান পাশটায় আবার সেই ব্যাথা। রাত ১০টায় ওর বাস।
ব্যাথাটা বাড়ছেই। অ্যাপেন্ডিসাইটিস। পরীক্ষার আগে বেশ ভুগিয়েছিল ব্যাথাটা। সব চেক আপ করে স্যাররা বলেছিলেন আপাতত ওষুধগুলো খাও,পরীক্ষার পর বাকীটা দেখা যাবে। আজ আবার সেই ব্যাথা,প্রচন্ড ব্যাথা।
তাড়াতাড়ি ওকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হল। আজই অপারেশন করাতে হবে.। .।
দেয়ালের দিকে মুখ করে শুয়ে আছে ও। খবর পেয়ে মা চলে এসেছে।
প্রায় এক সপ্তাহের জন্য বন্দী। এক সপ্তাহ পর কলেজ খুঁলবে। কাজেই আর বাড়ি যাওয়া হচ্ছেনা। কত কিছুইনা ভেবে রেখেছিল ও। বাড়ি গিয়ে শুধু দু'দিন থাকবে,তারপর বেড়িয়ে পড়বে চাটগাঁ(চট্টগ্রাম) এর পথে।
পাহাড়,সাগরের মাঝে মিশে যাবে। কিছুই হলনা আর।
ক্লাস শুরু হয়েছে,ওয়ার্ডও পুরোদমে চলছে। মা চলে গেছে। মায়ের সাথে দেখা তো হল,কিন্তু সাগরটা এবারের মত দেখা হলনা।
আজ কালকের মধ্যেই রেজাল্ট দিবে। টেনশনে আত্নারাম খাঁচাছাড়া। কী হবে,কী হবে হাহাকার। হঠাৎ আতিকের ফোনটা বেজে উঠল। ছোঁ মেরে তুলে নিল ও।
'হ্যালো'''কিরে খবর পাইছিস কোনো?''''রেজাল্ট তো বের হইছে রে,দোস্ত আমি পাস''-কান্নামাখা গলায় বলল আকাশ। ''দাড়া তোরটা দেখে জানাইতিছি। ''
কী ব্যাপার!!!!!!!!!!আকাশ ফোন দেয়না কেন!!!!!!!!!!!!ভীষণ অসহায় লাগছে নিজেকে। একটা এসএমএস আসল। ''দোস্ত,তোর তো খবর খারাপ,বায়োকেমিষ্ট্রি ডুবাইছে তোরে।
মন খারাপ করিসনা,শক্ত থাকিস। ''
এক মিনিট পর-
-''হ্যালো,আপনাদের চট্টগ্রামগামী পরের বাসটা কখন?''
-স্যার আধা ঘন্টা পর।
-ছিট কি খালি আছে?
-জ্বী,স্যার আছে।
-ধন্যবাদ,আমি আসছি
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।