ইহা কঠোরভাবে একটি রাজনীতি মুক্ত ব্লগ । ।
রৌদ্রজ্জ্বল মাঠে উইকেট কিপারের অদুরে দাঁড়িয়ে রোদ চশমার আড়াল থেকে তীক্ষ্ণ চোখে দু হাত সামনে নিয়ে ওঁত পেতে আছে সাউথ আফ্রিকান ফিল্ডার রবিন পিটারসেন। বলার বল নিয়ে দৌড়ে আসছেন, সতর্ক মুহুর্ত। রবিন পিটারসেন নিজেই জানতেন না তিনি হতে যাচ্ছেন ক্রিকেট ইতিহাসের এক গৌরবময় অধ্যায়ের যবনিকাপাতের নায়ক।
বলটি ব্যাটের কানায় লেগে ছুটে এল রবিন পিটারসেন এর কাছে আর নিমিষেই লুফে নিয়ে উল্লাসের সাথে একটা মন খারাপ আর বিদায়ের অনুভুতি নিয়ে চলে এলেন সরাসরি আউট হওয়া ব্যাটসম্যানের কাছে। আর এই অনুভুতি ছড়িয়ে পড়ল অন্য খেলোয়াড় থেকে শুরু করে মাঠে উপস্থিত অন্য সবার মাঝে। একে একে সকল ফিল্ডাররা এগিয়ে এসে করমর্দন করলেন এই ব্যাটসম্যানের সাথে। বিদায় দিলেন ক্রিকেট ইতিহাসের এই মহান শিল্পীকে। কারন এটিই ছিল তার আন্তরজাতিক ক্রিকেট জীবনের শেষ ইনিংস।
রিকি পন্টিং আজ বিদায় নিলেন ক্রিকেট থেকে। এর পর থেকে টেস্ট বা ওয়ানডে কোন পোশাকেই আর দেখা যাবে না এই তারকা ক্রিকেটারকে। আমার সবচেয়ে প্রিয় ব্যাটসম্যান। এই আমি তার খেলা দেখতাম মুগ্ধ হয়ে, আমাকে রিকির খেলাই সর্বদা আকর্ষিত করে। এ পর্যন্ত ১৬৭টি টেস্ট ম্যাচে অংশগ্রহন করে ১৩ হাজার ৩৭৮ রান করেছেন পন্টিং।
টেস্টে তার ব্যাটিং গড় ৫২.৮৫। এছাড়া তার ঝুলিতে রয়েছে ৪১টি শতক ও ৬২টি অর্ধশতক। রিকি পন্টিং ৩৭৫টি একদিনের ক্রিকেটেও অশংগ্রহন করেন। একদিনের ক্রিকেটে তার মোট রান ১৩ হাজার ৭০৪। ব্যাটিং গড় ৪২.০৩।
তিন অংকের ম্যাজিকাল ফিগারের দেখা পেয়েছেন ৩০বার ও অর্ধশতক রয়েছে ৮২টি।
আমার দেখা শ্রেষ্ঠ অধিনায়ক। ৯ বছর একটা টিমের অধিনায়কত্ব করা! ৯ বছর একটা দলের নেতৃত্ব দেয়া, দলের নেতা হয়ে থাকা কম কথা নয়। একটা প্রজন্ম বেড়ে উঠেছে রিকি পন্টিং'র অসাধারন অধিনায়কত্ব দেখে!! তারা দেখে এসেছে কিভাবে একজন নেতাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে হয়, কিভাবে প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে দলকে জয়ের বন্দরে পৌছাতে হয়। কিভাবে দলকে আগলে রাখতে হয়।
কিভাবে দলের মধ্যে জয়ের তৃষ্ণা ছড়িয়ে দিতে হয়!
আজ থেকে ১৪ বছর আগে অস্ট্রেলিয়ান ইউনিভার্সিটির স্পট অ্যাডমিশন ভাইভার সময় জিজ্ঞেস করেছিল, আমি কেন অস্ট্রেলিয়া যেতে চাই । উত্তরে আমি সজ্ঞানে বলেছিলাম, কারন ওটা রিকি পন্টিং এর দেশ-আর এই জন্যি আমি যাব আর ওখানকার ইঊনিভার্সিটি আমার সেকেন্ড প্রায়োরিটি। জানিনা প্রশ্নকারী অস্ট্রেলিয়ান মহিলা কি ভেবেছিলেন সে সময়। এর দু মাস পরে অফার লেটার পেলাম ওখানকার এক ইঊনিভার্সিটি থেকে। হয়ত আমার পন্টিং ভক্তি দেখে ওরা মুগ্ধ হয়েছিল।
যাই হোক অন্য কারনে যাওয়া হয়নি সে দেশে কিন্তু পন্টিং কখনও মুছে যায়নি ভাল লাগার সেই জায়গা থেকে। আমার এই বিদায়ী জয়ের নায়ক কে জানাই স্যালুট। ক্রিকেট বিশ্ব মনে রাখবে এই ক্রিকেট শিল্পী আর শ্রেষ্ঠ অধিনায়ককে যুগ যুগ ধরে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।