শূন্য বয়স কতইবা ১০ অথবা ১২
মুখটি থেতলে গেছে
নগ্ন শরীরটি পড়ে আছে রাস্তায়
দুটো পা দুদিকে টেনে
নাভি পর্যন্ত ছিড়ে ফেলা হয়েছে ।
১৪/১৫ বছরের এক কিশোরীর
স্তনযুগল কেঁটে মরিচ বাটা লাগিয়ে দিয়েছে
চিৎকার করতে করতে মারা গেল সে ।
আর নিজের কথা কি বলবে
স্বামী , কিশোর বয়সী দুটো ছেলেমেয়ে
নিয়ে সে যাচ্ছিল গ্রামের পথে
রাস্তায় গাড়িটি রুখে দিল হায়েনার দল ।
সবাইকে চেক করল
সারিবদ্ধ দাড় করিয়ে
কয়েকজনকে ব্রাশফায়ার করল ।
স্বামী , সন্তান সহ তাকে
নিয়ে গেল পুরোনো দালানে
খাকি পোশাকের একজন কি বলল বোঝা গেল না
বাঙ্গালী একজন বলল
বাবা আর মেয়ে অন্যদিকে মা আর ছেলে
সঙ্গম করবে আর তারা দুচোঁখ ভরে দেখবে ।
সাথে সাথে তীব্র প্রতিবাদ
এবং সাথে সাথে প্রথমে রাইফেলের বাট দিয়ে
মুখে তীব্র বাড়ি তারপর দুটো গুলি ।
অতঃপর মা মেয়েকে জোর করে উলঙ্গ করা হলো
এবং একের সামনে অন্যকে ধর্ষণ করা হলো ।
এদিকে দেশের অন্যপ্রান্তে
খবর এলো তার স্বামীকে নাকি
ধরে নিয়ে গেছে পাক সেনারা
ঘরে তখন কলেজ পড়–য়া ছেলে
১০ম ও ৮ম শ্রেণীর মেয়ে
আর ৮ মাসের শিশু ।
সবাইকে নিয়ে সে গেল ক্যাম্পে
প্রতিবেশী রাজাকার চকচক চোঁখে চেয়ে থাকে
পাক সেনারা হাসতে হাসতে গুলি ফোটায়
আর পেট ফেটে মাটিতে লুটিতে পরে
স্বামী , ছেলে ও মেয়েরা ।
তীব্র চিৎকারে সে তার শিশু সন্তানকে
বুকে জড়িয়ে ধরে ।
পাশের বাড়ির শকুনটি খাবলে নেয় শিশুটিকে
এবং তাৎক্ষণিক পাশেই থাকা কাদা পানিতে
শিশুটিকে ফেলে বুট দিয়ে পিষে
কাদাতেই ডুবিয়ে ফেলল
নিশ্চুপ পাথর হয়ে চেয়ে রইল সে
টানতে টানতে নিয়ে গেল তাকে
রাজাকারটি বহু বছরের লালসা মেটালো
একবার দুবার বহুবার
আতঃপর একদিন ছেড়ে দিল
কিন্তু ততক্ষণে তার মাথা থেকে
মুছে গেছে সভ্যতার সব স্মৃতি ।
এভাবে আড়াই লক্ষ
বেশীর ভাগই দেশ স্বাধীনের পর
বাড়ী ফিরতে পারেনি
যারা ফিরেছিল
তাদের অনেকেরই স্থান হয়নি
জায়গা দেয়নি সমাজ সংসার ।
স্বাধীন দেশে মুজিব বলেছিল
” তোরা সব আমার মেয়ে , আমার মা ”
আমরা বলেছিলাম হাঁ হাঁ
তার পরপরই আমরা আত্ববিস্মৃত হলাম
মা মেয়ে বোনকে ছুঁড়ে ফেলে দিলাম
আর বুকে টেনে নিলাম রাজাকারদের
বসালাম ক্ষমতার মসনদে
প্রসস্থ করে দিলাম
সা¤প্রদায়িকতা আর জঙ্গীবাদের রাস্তা
আর সে রাস্তা দিয়ে
সুরসুর করে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি
মধ্যযুগীয় বর্বরতায়
আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগে ।
দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধু যখন
বললেন ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ
তখন চারদিকে হঠাৎ করেই
ধর্মীয় ক্যাপসুল খাওয়া লোক বেড়ে গেল
সচেতন অনেকেই বুঝতে পারল
স্বাধীনতা বিরোধীরা আবারো সক্রিয় হচ্ছে ।
কিন্তু কি বিচিত্রতা
জাতি নিশ্চুপ ভুমিকায় থাকল ।
এবং তারও কিছুদিন পর
ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহারের
অধিকার পেল ধর্ম ব্যবসায়ীরা
শরু হলো অধার্মিকের ধর্ম খেলা ।
মওদুদী তো আগেই বয়ান দিল ঃ
”নবীজী যখন দাওয়াত ও ওয়াজের মাধ্যমে
মক্কাবাসীকে ইসলাম গ্রহন করাতে ব্যর্থ হলেন তখন
তিনি অস্ত্র ধারণ করলেন এবং
সবাই ভয়ে সত্য গ্রহণে বাধ্য হলেন । ”
বোকা , অশিক্ষিত, অর্ধ শিক্ষিত
বাঙ্গালী লুফে নিল এই বয়ান
এবং হত্যা করা মহাপাপ হলেও
৭১’এর জানোয়াররা নতুন করে শুরু করল হত্যা ।
বিবেকবানের বিবেকের রাস্তা হলো বন্ধ
নিজেকে নিয়ে ব্যস্ত হলো সবাই ।
এরই মাঝে সব ভয় জয় করে যুদ্ধ করল কেউ কেউ
জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবীর কিংবা আব্দুল গফ্ফার
আর একজন বঙ্গমাতা জাহানারা ইমাম ।
আর তাদের থেকে অনেক দুরে থেকে
নিরবে নিজের অক্ষমতাকে ঢেকে
আমি লিখে যাই আমার মতো করে
চুপিচুপি লুকোচুরি খেলি নিজের সাথে
কেউ বলে পড়ালেখা বাদ দিয়ে ফাজলামো
কেউবা বলে এইসব ভন্ডামি ছাড়্
তবু আমি সূর্যাস্থ থেকে পরবর্তী সূর্যোদয়
কলম আর কাগজ নিয়ে বসে থাকি ।
বুকের ভেতর জমে থাকা কথাগুলো
বলতে চাই , লিখতে চাই । ।
অক্ষমতা চেপে ধরে আমাকে
তবু চাই ।
আশায় চেয়ে থাকি নতুন যুগের সূচনার ।
নতুন বাংলাদেশ
রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ দেখার ।
অডিও লিঙ্ক ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।