চিন্তা-চেতনা দাদা ভালো আছেন তো? দেখা হতেই তিনি দু’হাত জোড় করে ‘ভারতীয় স্টাইলে’ সম্মাণ জানানোন ভঙ্গি করলেন। হাসতে হাসতে বললেন, দাদা ভালো আছেন তো? সারাজীবণ তিনি দিল্লী নীতির বিরোধীতা করেছেন। বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মওলানা ভাসানীর একনিষ্ট অনুসারী। শেষ বয়সে এসে তিনি বিএনপির আদর্শের সৈনিক।
জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক। তার আচরণে অস্থিরতা। হাসিতে যেন বিদ্রুপের ছলক। সাধারণত তিনি জোরে হাসতেন না। এখন হাসছেন।
সে হাসিতে ভৌতিক হƒদম ছড়িয়ে দিচ্ছে চারদিকে। হতাশায় আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। তার কথোপকথন ভঙ্গী যেন নিজের সঙ্গেই নিজের মশকরার মতো শোনাচ্ছে। চরম হতাশা নিয়ে তিনি বললেন, ‘অতীতে যদি কিছু ভূল করে থাকি, মা ঘেন্না করে দেন দাদা। পাস্ট ইজ পাস্ট।
’ এরপর আবার সেই হাসিটা হাসলেন তিনি এবং আর দাড়ালেন না। দ্রুত বেড়িয়ে গেলেন কাব থেকে। বলাবহুল্য, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদ জিয়ার ভারত সফর নিয়ে দেশময় যেমন চলছে তুমুল আলোচনা- সমালোচনা। জাতীয় প্রেস কাবও এর বাইরে নেই। প্রতিদিন চুলচেরা বিশ্লেষন চলছে, সেখানে তিনি কি বলেছেন, কি করেছেন? তার এই সফর কিসের ইঙ্গিত বহন করছে? বিশেষ করে শিব শঙ্কর মেননের সাথে বৈঠক নিয়ে মাথার চুল ছেড়ার অবস্থা বিএনপির বারোভাজা নেতাহর্মী সমর্থকদের।
মসজিদের হুজুরও জানতে চায়, বাপু-এটা কি স্রেফ বিএনপির রাজনৈতিক চাল বা কূট কৌশল না কি তার রাজনৈতিক আদর্শ ও নীতির পরিবর্তন?
কে কার প্রশ্নের জবাব দেবে? সবাই যার যার মতো চায়ের কাপে ঝড় তুলে চলেছেন। কেউ মনে করছেন তিনি নীতির পরিবর্তন করেছেন বলেই- বাংলাদেশের ভূখন্ড আর কখনো ভারত বিরোধীতায় ব্যবহƒত হবে না-বলে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতকে অঙ্গিকার করে এসেছেন তিনি । এটা জনগণের সাথে জিয়ার সাথে জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সাথে বেইমানি। এটা বেগম খালেদা জিয়ার জন্য আÍঘাতি রাজনীতি। কারণ বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের ষড়যন্ত্র তারা জানত না-এটা কী আপনি ভাবতে পারেন? তাহলে? আড্ডা জুড়ে কতো কথা।
বিএনপির রাজনীতিকে শেষ করে দেয়ার জন্যই ছিল আসলে বিএনপি চেয়ারপার্সনকে ভারত সফরের নিয়ে যাওয়ার আসর উদ্দেশ্য। এই কদম উঠানোর মাধ্যমে তিনি জিয়ার আদর্শকে শেষ করে দিয়েছেন। মতায় যাওয়ার লোভ ও ছেলের প্রাণ রার জন্য তিনি আসলে ভারতের কাছে আÍসমর্পণ করেছেন। তাদের কণ্ঠে পদ্ম মেঘনা যমুনার নদী সিকস্তি মানুষের সব হারানোর হাহাকার।
করিৎকর্মা কেউ কেউ মনে করেন এখনই তরিকুল ইসলাম, খন্দকার মোশারফ, মির্জা আব্বাসসহ চীন পন্থীদের উচিত রুখে দাড়ানো।
দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রার সার্থে বিএনপির ভারত তোষন নীতির বিরুদ্ধে কঠেীর অবস্থান নেয়া। জাতীয়তাবাদী ধারার রাজনীতিকে রা করা। তারপর শুরু হয়ে যায় ভারতের চাণক্য কূটনীতির নানান বয়ান। তারা কিভাবে ৭২-৭৫ সময়ে জাসদের রাজনীতিকে পৃষ্ঠােপষণ করে বঙ্গবন্ধুকে ডিস্টার্ব করছে। পার্বত্য চট্রগ্রামকে অশান্ত করতে শান্তিবাহিনী সৃষ্টি করেছে।
বঙ্গভূমি ওয়ালাদের মদদ করেছে। বঙ্গŸন্ধু সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে বেরুবাড়ি নিয়ে নিয়েছে কিন্তু দহগ্রাম-আঙ্গরপোতা আজো দেয়নি। পরীামূলক ফারাক্কা চুক্তি আন্তরাষ্ট্রীয় চুক্তিতে পরিণত করেছে। চাণ্যক কুটনীতির এসব পাঠ তো চোখের সামনে ঘটেছে। সেই ভারত খালেদা জিয়াকে ছাড় দেবে? জিয়ার আদর্শের রাজনীতির ধারক বেগম জিয়ার ‘পাস্ট ইজ পাস্ট ’তত্ত্বে ভূলে যাবে সব? তাকে মতার মসনদে বসিয়ে দেবে ? বলেই অট্রহাসিতে ফেটে পড়েন।
তারপর যোগ করেন. পাছাড় দেবে পাছাড়-এমন পাছাড় দেবে আর কোমন সোজা করে উঠে দাড়াতে পারবে না বিএনপি।
একজন তরুন তুর্কী গলা ফাটায়-হবে না। এই বিএনপিকে দিয়ে কিছু হবেনা। আরে তারা জোট থেকে জামাতকে বের করে দেয়া হবে কী হবে না সেই পরিকল্পনা করে ভারতে গিয়ে-এই বিএনপিকে দিয়ে আর কিছু হবে না। আচ্ছা ভাই আপনিও কি বিশ্বাস করেন ইন্ডয়া বিএনপিকে মতায় এনে দেবে? হতাশার মধ্যে জামাতি সুর পাওয়া গেল।
মুখে না বল্লেও তাহলে তারাও হতাশ! কিন্তু নিজের চেহারা আড়াল করতে তার জোড়ালো আর্গমেন্ট- বলেন, ভারত সফরে তরিকুল ইসলামকে নিয়ে যা করা হয়েছে-এতো রীতিমতো অপমান! কি অপমান করা হয়েছে-জানতে চাইলে তোতলাতে তোতলাতে তরুণ তুর্কী বললেন, তিনি একজন আদর্শবাদী রাজনীতিক। স্থায়ী কমিটির সদস্য। কিন্তু তাকে যেতে হলো পাবলিক ট্রান্সপোর্টে-বলেন, এটাকি তার সাথে ইচ্ছাকুতভাবে অসৌজন্যতা, অবহেলা নয়?
একজন প্রবীণ বাম আদর্শের অনুসারি তাকে ধমক দিয়ে থামান। এই মিয়া বয়স কতো? খালেদা জিয়া তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তুমি তো খালি খোয়াবের মধ্যে র দেখো।
আইএসআই আর সিআইএ তোমারে খাওয়ায় পড়ায়।
না ভাই না ভাই-তোতলাতে থাকে তরুন তুর্কী। তাহলে অতো পটর পটর করো কেন? দেখো কী হয়? কেউ ভূল করলে হাত পুড়বে কার? বাড়ি হারিয়েছে কে? কার সন্তানরা নির্বাসিত? মেরুদন্ড ভেঙ্গেছে কার? তারেকের। মিথ্যা মামলা হোক আর সত্য মামলা হোক খেয়েছে কে? তারেক কোকো আর বিএনপির নেতা কর্মীরা। তাদের দায়িত্ব কে নেবে? তুমি নেবে? এই ভাই আপনি নেবেন? সবাই চুপ।
তাহলে তার রাজনীতি তাকে করতে দেন। কোন দেশ সফর করলে কেউ কারো কাছে আÍসর্মন করেন না। পাকিস্তান ও চীন গেলে তো আপিন এ কথা বলেন না-কেন? অ-ভাই আপনি তো ভারত বিরোধী বলেন তো, কে কী করেছে তারা- যখন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করা হলো? তার ছেলেদের হত্যার চেষ্টা হলো? বিএনপিকে তছনছ করে দেয়া হলো? আরে মিয়া খালেদা জিয়াকে কাবে বসে, চায়ের দোকানে বসে বসে এই ইন্ডিয়ার লেজ কাটতে আছেন বাংলাদেশের আয়তন বা লেজ কতটা বড় হয়েছে? রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে এসে মার্কিনীদের চোখের জলে ভাসিয়ে দিলো-চীন কী করতাছে? একটা ধমক দিলে রাখাইনদের মতা আছে মুসলমানদের গায়ে হাত দেয়? নাই। তাইলে? তিনি চিন গেলে বলবেন চীনের দালালি করে কিছু হবে না? মার্কিনীদের সাথ্যে সখ্য করলে বলবেন, ওরাই তো ওয়ান ইলেভেনের নাটের গুঢ়– ওদের সাথে গিয়ে কিছু হবে না। ইন্ডিয়া গেলে বলবেন, সবশেষ।
তাহলে তিনি যাবেন কোথায়? খালেদা জিয়া স্বাধীন দেশের স্বাধীন রাজনীতি করছেন না দালালী করছেন সময়ই বলে দেবে। ফট করে একজন বলেন, এটা খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক পরিপক্কতা। শক্রুতা নয় বন্ধুত্ব দিয়ে তিনি জয় করতে চান কূটনৈতিক সাফল্য ও রাজনৈতিক বিজয়। অতো নাইচ্চো না দেখো দেখো, মওলানা ভাসানী অতো তাড়াতাড়ি খুশিও হতেন না, তোমার মতো নাচতেনও না। আবার হতাশাবাদীও ছিলেন না।
বুঝলেন কিছু? বললেন মুরুব্বী। জাতীয় প্রেস কাবের লন, বারান্দা, লাউঞ্জে, চায়ের দোকানে, গ্রামে গঞ্জে সবর্ত্র এমন মুরুব্বী ও তরুন তুর্কীদের আলোচনা, চায়ের কাপের ঝড় যেদিন শেষ হবে-সেদিন বাংলাদেশের আর কোন বন্ধুর প্রয়োজন হবে না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।