বিগত ২৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে উত্তরা ৪নং সেক্টর থেকে জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্র শিবির মিছিল বের করে। মিছিলটি কতদূর এগুতেই পুলিশের বাধার মুখে পড়ে এবং জামাত-শিবির কর্মীরা পুলিশের দিকে ইট পাটকেল ছুড়লে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষের পর জামাত-শিবির কর্মীরা পালিয়ে গেলে পুলিশ সামনে এগিয়ে বহুসংখ্যক নিরপরাধ মানুষকে ধরে নিয়ে যায়।
তার মধ্যে উত্তরা ২ নং সেক্টর¯’ [র্যাব-০১ সংলগ্ন] বাইতুস সালাম মাদরাসার তিনজন কিশোর ছাত্রও রয়েছে তারা হলো- মোঃ লোকমান হেকীম [বয়স ১৫], মোঃ মুশফিকুর রহমান সরকার [বয়স ১৪], মোঃ ওবায়দুল্লাহ মাসুম [বয়স ১৫]।
এরা সকলেই উত্তরা র্যাব-০১ সংলগ্ন বাইতুস সালাম মাদরাসার ছাত্র।
এদের দুজইন এতিম। এরা সকলেই হাফেজে কুরআন, হিফজুল কুরআন সমাপ্ত করে তাদের দু‘জন দ্বিতীয় শ্রেণী এবং তৃতীয়জন চতুর্থ শ্রেণীতে অধ্যয়ন করছে। শৃংখলা ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডের সাথে ওদের ন্যূনতম সম্পর্কও নেই।
গত ২৪ নভেম্বর ২০১২ ঈ. রোজ শনিবার সকাল থেকে আসর পর্যন্ত তারা মাদরাসার দৈনিক ক্লাসে উপস্থিত ছিল।
উল্লেখ্য যে, ছাত্রদের ব্যক্তিগত প্রয়োজনে আসরের নামাজের পর থেকে মাগরিব পর্যন্ত বাইরে যাওয়ার সাধারণ অনুমতি থাকে।
সে হিসেবে তারা নিজ নিজ প্রয়োজনে মাদরাসা থেকে বের হয়। ঘটনার দিন তাদের কেউ কেউ রাজলক্ষ্মী মার্কেটের পিছনে অবস্থিত নিগার প্লাজার ‘মাকতাবাতুত দাওয়াহ নামক একটি দোকানের উদ্দেশ্যে আর কেউ কেউ অন্যান্য প্রয়োজনে বের হয়েছিল। জসিম উদ্দিন রোড পার হয়ে রাজলক্ষ্মী মার্কেটের সামনে পুলিশ এবং জামায়াতে ইসলামীর সংঘর্ষের কথা শুনতে পায়। সাথে সাথেই সে পায়ে হেঁটে সম্পূর্ণ স্বাভাবিকভাবেই মাদারাসায় ফিরতী রওনা হয়। ফেরার পথে ‘হলি ল্যাব’ এর পাশে থাকা ওভার ব্রিজ এবং এর আশ-পাশ দিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল।
তখনই সম্পূর্ণ অকারণে পুলিশ তাদেরকে গ্রেফতার করে।
‘বাইতুস সালাম মসজিদ-মাদরাসা কমপ্লেক্স’ একটি অরাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান। এখানে সর্বপ্রকার রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাছাড়া মাদরাসাটি উত্তরা ২ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত র্যাব-০১ সংলগ্ন। র্যাব-০১ এর সদস্যরা এ মাদরাসার মসজিদেই পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন, মাদরাসায় যাতায়াত করেন এবং আলাপ-আলোচনা করেন।
এ পর্যন্ত তাদের পক্ষ থেকেও ঐ সকল ছাত্র বা অন্যান্য ছাত্রদের চলাফেরা বা গতিবিধির ব্যাপারে কোন অভিযোগ উত্থাপিত হয়নি।
উল্লেখ থাকে যে, জামাত-শিবির ইসলামের গুর“ত্বপূর্ণ অনেক মৌলিক আকীদা পরিস্পারিক ধ্যান-ধারণা ও মতাদর্শ পোষণ করায় কওমী মহল সর্বদাই তাদের মতাদর্শ ও কর্মকাণ্ডের প্রতি ঘৃণা প্রকাশ করে আসছে। কওমী মাদরাসার পাঠ্যসূচিতেও জামাত-শিবিরের ভ্রান্ত আকীদার বিস্তারিত পর্যালোচনা এবং তার খণ্ডন রয়েছে। ফলে কওমী মাদরাসার ছাত্রদের জামাত-শিবিরের সাথে কোনরূপ সংশ্লিষ্টতার প্রশ্নই ওঠেনা।
তাই, গ্রেফতারকৃত ছাত্ররা সম্পূর্ণ নির্দোষ ও নিরপরাধ।
তারা কোনভাবেই জামাত-শিবির বা অন্য কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত নয়। ঘটনার দিন সে মিছিলে অংশ গ্রহণ করেনি ও পুলিশের সাথে কোন প্রকার সংঘর্ষেও জড়িত হয়নি। সংশ্লিষ্ট মহল অবিলম্বে এই নির্দোষ ও নিরপরাধ ছাত্রে মুক্তি কামনা করেছেন।
বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, এ মাদরাসায় চলতি শিক্ষাবর্ষের প্রথম সাময়িক পরীক্ষা আগামী ১৯ ডিসেম্বর ২০১২ ইং তারিখ থেকে শুর“ হবে। শিক্ষার স্বার্থে নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার প্র¯‘তি নেয়া এবং এতে অংশ গ্রহণ করা প্রত্যেক ছাত্রের নাগরিক ও মানবিক অধিকার এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।
তাই সংশ্লিষ্ট মহল পরীক্ষার প্রতি এবং এতে অংশগ্রহণের জন্য তাদের আশু মুক্তি কামনা করেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।