আমি সত্যের এবং সুন্দরের পুজারী। কজন মানুষের সাথে হাসিমুখে মিষ্টি ভাষায় যারা কথা বলে তাদের প্রতি আমার অপরিসীম শ্রদ্ধা । আর যারা নিজেদের অনেক বড় ভাবে, তাদের প্রতি আমার রয়েছে করুণা । যেটা আমার কাছে ভুল মনে হয় , তার তাত্ক্ষণিক যুক্তিসম্মত প্রতিবাদ করতে আমার ব সিলেটের ওসমানী মেডিকেল কলেজ থেকে পাশ করেন সাজিয়া আরেফিন (২৭)। ডাক্তার সাজিয়া অন্যান্য ডাক্তারদের মতই চিকিতসক জীবন শুরু করেন।
ব্র্যাক এ খন্ডকালীন চিকিতকের কাজ নেন। সাথে তিনি আরেকটি ক্লিনিকে খন্ডকালীন চিকিতসকের দায়িত্বে ছিলেন । সন্ধ্যা থেকে কাজ করে রাত ১২ টায় তিনি ক্লান্ত হয়ে চিকিতসকদের বিশ্রামাগারে বিশ্রাম নিতে যান। সকাল বেলা ক্লিনিকের কর্মচারীরা তার লাশ দেখতে পায়। তাঁর কপালে জখম এবং গলায় শ্বাসরোধের চিহ্ন পাওয়া গেছে।
উপোরোক্ত খবরটা আমি জানতে পারি প্রথম আলোর অনলাইন নিউজ থেকে।
Click This Link
হয়ত কিছুক্ষণের মাঝেই এটা হারিয়ে যাবে অনেক খবরের মাঝে। তাছাড়া একজন চিকিতসক মারা গেলে কি আসে যায় !
কিন্তু ডাঃ সাজিয়ার এ মৃত্যু আরেকজন চিকিতসক হিসেবে আমি মেনে নিতে পারছি না। হাজার হাজার মাইল থেকে আমি যেন তাঁর ঐ রাতের কষ্ট বুঝতে পারছি। সারা দিনের কাজ শেষে ক্লান্ত পরিশ্রান্ত শরীরে একজন চিকিতসক রেস্ট নিতে গিয়ে খুন ? ক্লিনিকে এসে খুন করে গেল ? কেউ কিছু বুঝতে পারল না ? কি এমন হয়েছিল যে চিকিতসক কে মেরেই ফেলা লাগল ? সে কি কিছু জানতে পেরেছিল , এমন কিছু যা সে প্রকাশ করে দিতে চেয়েছিল ? রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পেরে জেনে কোন অন্যায় কাজে সে বাধা দিয়েছিল ?
সরকারের কাছে প্রশ্ন ? এটা অবশ্য ই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ( ? )।
কিন্তু রাজধানীর ক্লিনিকে কাজ করতে গিয়ে চিকিতসক যদি খুন হয়, তাহলে আপনারা কিভাবে অনেক দূর দূরান্তে গ্রামে গঞ্জে যেখানে নিরাপত্তার অনেক বেশি অভাব, যেখানে সরকারী কাজের পাশাপাশি এলাকার ক্ষমতাবানদের বাসায় বা তাদের প্রতিষ্ঠিত স্কুলে রোস্টার অনুযায়ী রোগী দেখতে হয় , যেখানে চিকিতসক দের জীবনের ভয় দেখিয়ে অপরাধীরা সার্টিফিকেট নিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে, আবার আদালতে কেন মিথ্যা সার্টিফিকেট দেয়া হল, এ জন্য তলব করা হয়, সেসমস্ত জায়গায় চিকিতসকেরা কেন থাকে না বলে প্রশ্ন করেন ? বছরের পর বছর ধরে তো অনেক চিকিতসক কে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে, তারা থাকছে না কেন ? এর উত্তর নিশ্চয় ই এত কঠিন না। কিন্তু সত্য কে জানার চেষ্টা না করলে বা জেনেও না জানার ভান করলে চিকিতসক হয়ত নিয়োগ দেয়া যাবে। কিন্তু কাউকে বেশিদিন অনিরাপদ কর্মস্থলে রাখা যাবে না। জীবনের নিরাপত্তা নেই, ক্রমাগত হুমকি ধামকির মাঝে কাজ করে যেতে স্বাভাবিক ভাবেই কেউই কোন দিন আগ্রহী হবে না।
আগে চিকিতসক দের নিরাপত্তা দিন।
তাঁরা যেন তাঁদের কাজ ঠিক মত করতে পারে সে পরিবেশ ঠিক করুন। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ তাদের কাজ কে ট্রেইনিং ইয়ারের মাঝে কাউন্ট করুন। চিকিতসকেরা অবশ্য ই তাদের কাজ করে যাবেন। [/sb
সবশেষে সাজিয়ার আত্মাকে আল্লাহ শান্তি দিন। তাঁর পরিবার কে এই শোক কাটিয়ে উঠার শক্তি ও আল্লাহ দিন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।