আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আশুলিয়া-চট্টলার বাতাসে লাশের কটুগন্ধ আর পৌরুষত্বের সংকটে থাকা মিডিয়ার ভ্রান্তিবিলাস

aurnabarc.wordpress.com গতকাল ফেসবুকের একটি পেজ থেকে শেয়ার করা রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর কবিতাটা বার বার পড়ছিলাম। মনে অজান্তেই চোখ থেকে ঝরে পড়েছিল কয়েকবিন্দু অশ্রু। সত্যি গতকাল বাতাসে লাশের গন্ধ পেলাম, স্বাধীন বাংলার মাটিতে আবারো দেখলাম মৃত্যুর নগ্ননৃত্য। আবার কোথা থেকে ধেয়ে এলো ঐ দুঃস্বপ্নের রাত, ভয়ানক রক্তাক্ত সময় ? অশ্রুজলে খেয়াল করলাম বাতাসে কিভাবে লাশের গন্ধ ভাসে আর মাটিতে লাগে ছোপ ছোপ রক্তের দাগ । পত্রিকার খবরগুলো জানিয়ে দিচ্ছিল একের পর এক দু:সংবাদ।

প্রতিদিনই পত্রিকার খবর গুলো থাকে গা ছমছমে ধরণের। এই কেউ মারা গেল নয়তো কেউ লাঞ্চিত, অপহৃত নয়তো ধর্ষিত হলো। তাই খবরে অরুচি ধরেছে অনেক আগেই। আর কলামগুলো। সত্যি গরুর বার বার চিবুনো জাবর থেকেও বেশি নোংরা আর জঘন্য মনে হয় ওগুলোকে।

তাই মনে হয় পত্রিকা থেকে দুরে সরে থাকলেই শাপমুক্তি হবে অবুঝদের। কয়েকদিন আগে বি.ডি নিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট কমের একটি লেখার লেজ ধরে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম। সেখানে ক্ষোভ ঝাড়তে বাধ্য হয়েছিলাম জনৈক চিন্ময় মুৎসুদ্দির উপরে। তিনি দেশের মানুষের দুরাবস্থা না দেখে কেনো চীনা বাদামের ঠোঙ্গা হাতে নিয়ে দাঁত কেলাচ্ছেন এটাই ছিল আমার বড় প্রশ্ন। কিন্তু বরাবরের মতো সৌভাগ্য আমার/আমাদের এতো ক্ষুদ্র মুখের কথা ঐ সব হাতির কানে পৌছে না।

আমি সেখানে বলেছিলাম একজন কাবুলী ওয়ালা তার পাগড়ী মাথা থেকে খুলে একটি স্থানে টয়লেট করতে বসেছে। একটু পরে কোন একজন তার পাগড়ী নিয়ে চম্পট দেয়। কিন্তু বেটা কাবুলী ওয়ালা টয়লেট থেকে বেরিয়ে পাগড়ী নাই দেখে দ্রুত পরণের পোশাক খুলে মাথায় পেঁচিয়ে চিৎকার দিতে দিতে দৌড়ায়। যা আমেরিকার ঘুর্ণিঝড়ের পর বাংলাদেশের মিডিয়ায় বয়ে যাওয়া সিডর দেখলেই বোঝা যায়। মিছিল নয়, রিলিফ বিতরণ নয়, লাশপ্রার্থীদের আর্তনাদ ভাবতে লজ্জা হয় আমরা সেই বাংলাদেশী যারা কিনা ম্যারিকার বারেক মামার জন্য প্লাকার্ড হাতে রাস্তায় নামি, মিছিল করি।

আমরা কিনা সেই বাঙালি যারা ৭১ এর ত্রিশ লক্ষ শহীদের রক্ত অস্বীকার করে ফাকিস্তানের ক্রিকেট খেলা জেতার পর উল্লাস করি। জ্বলছে তাজরিন গার্মেন্টস, পুড়ছে মানুষ চার দশকে দেশের মানুষকে পানিকষ্টে রাখা তস্কর, খুনি দানব বি. এস. এফ লালনকারী ভারতকে সুন্দরভাবে সমর্থন দেই একাত্তরের সহায়তার অযুহাতে। কিন্তু ঐ সব নপুংশক ভারতের দালালদের বলতে চাই ঐ হ্রামির দল আমাদের তো ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে। লক্ষাধিক মা বোনের ইজ্জত গেছে। তোদের ভারত মাতার কয়জন একাত্তরে জীবন দিয়েছে এই প্রশ্নের উত্তর দেয়ার ক্ষমতা তোদের নেই।

আটকে পড়া মানুষের পা তাইতো ম্যারিকায় ঘুর্ণিঝড়ে মানুষ মর্লে তোদের প্রাণ কাদেঁ, মধ্যপ্রাচ্য লিবিয়া নিয়ে তোরা মাতম তুলিস। কিন্তু বাংলাদেশ নামটা ওঠার সাথে সাথেই তোরা মুখ বিকৃত করিস। কারণ তোরাতো এখনো বাঙালিই পরিচয় দিতে চাস। স্বাধীন বাংলাদেশী বাংলাদেশী সত্তার পরিচয় নিয়ে বাচার কোনো আগ্রই তোদের নাই। বাংলাদেশের কোন সিনেমায় কোন নায়ক ঘানারে গানা কৈল, কেডায় হিজড়া কেডায় লুর্মা এতে তোদের মাথা ব্যাথা।

কিন্তু পার্শ্ববর্তী দেশের সিনেমায় মলত্যাগের দৃশ্য দেখেও তোদের টয়লেট চাপে না। স্ক্রিণে বইয়া বইয়া গন্ধ শুইক্যা মজা লস। হাজার হৈলেও সেই ৪০ বছর আগের বন্ধু বৈলা কথা। সত্যি আজ বাতাসে লাশের গন্ধ আরেকগ্রুপ তোগের কাছে বাংলাদেশের সবকিছু শরীয়তবিরোধী। কিন্তু ফাকিস্তান বা খেজুরদেশীয় ভূড়িনৃত্যেও ইজ্জত যায়না।

তাই আশুলিয়ার গার্মেন্টসে এতোগুলা মানুষ মর্ল, চট্টগ্রামে মর্ল এতে তোদের ভাবনায় ছেদ পড়ে না। সত্যিই এইরকম একেকটা দুর্ঘটনা ঘটলে তোদের মতো কিছু মানুষের চেহারাধারি জানোয়ার দেখার সুযোগ হয়! কিছুক্ষণ আগে আশুলিয়ায় পোড়া গার্মেণ্টস এর পাশ থেকে ঘুরে এসে একজন ফেসবুক বন্ধু স্ট্যাটাস দিলেন মৃতের সংখ্যা ১২৫। আমি নিজেও ফোনে খোজ নিলাম এক বন্ধুর কাছ থেকে শুনলাম ওখানে মানুষ বলছে মৃতের সংখ্যা ১২৫ । কিন্তু বিডি নিউজ ও বাংলা নিউজ বলছে মৃত ১১২। সাথে চট্টগ্রামে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৩।

সময়ের সাথে সাথে এই সংখ্যাগুলো আরো বাড়বে। কিন্তু প্রশাসনের ঢিলে হওয়া কাছাটা যে খোলার উপক্রম। এই অবস্থায় দেশ জাতির কল্যাণে সংখ্যাটা কমাতে পারলেই তো মিডিয়ার মুখ রক্ষা হয়। কারণ জনগণ তাদের জন্য গিনিপিগ। তাদের নিয়ে পরীক্ষা করা যায় মাত্র।

তাদের নিয়ে সংবাদ বাণিজ্য করা যায়। কিন্তু সংবাদ কখনোই তাদের জন্য নয়। জনৈক ফেসবুক বন্ধু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখলেন কিছুদিন আগে আমেরিকায় হারিকেনে মৃতদের নিয়ে এইসব মিডিয়ার যে লীড, ব্যনার হেড লক্ষ করা গেছে, এই নিহত শ্রমিকদের জন্য তেমন কোন আয়োজন ও নেই। সত্যি বিষয়টি ভালোভাবে লক্ষ করার মতো। যাদের ঘামে বৈদেশিক মূদ্রা আসে, যাদের রক্তে এইসব সংবাদপত্র অফিসের এসি চলে, তাদের অবহেলা করাই এদের নীতি।

আহা, এইসব গার্মেন্টস এর মালিক, ওভারব্রীজের ঠিকাদার আর তাদের পাপ ধামাচাপা দেয়া মিডিয়ার মালিক ও সম্পাদকদের যদি একসাথে পুড়িয়ে মারা যেতো এই আক্ষেপ আজ পুরো জাতির। এখন মনে হচ্ছে সত্যিই এদেশের মিডিয়া এখন গোপনাঙ্গের মারাত্ম সমস্যায় ভুগছে বাংলাদেশের মিডিয়া। চাইকি সে তার পৌরুষত্ব হারিয়েছে। এই ধ্বজু মিডিয়া থেকে জাতির মু্ক্তি মিলবে কবে। আর কতো লাশের মিছিল দেখলে ধিকৃত হবে মানবতা।

আর কোন প্রহেলিকার উন্মাদনায় জাগ্রত হবে জাতির বিবেক। ..... এ অপমান যে সহ্য করার নয়। ছবি কৃতজ্ঞতা : আমার ফেসবুক বন্ধুগণ এ লাইকে থাকা পেজগুলো। ডিসক্লেইমার: প্লিজ দুর্দিনে কপিরাইট দাবি কৈরেননা এই ছবিগুলোর। যেভাবেই হোক জাতির সামনে এগুলো পেশ করা হোক।

..  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।