জীবন কখনোই সংগ্রাম বিহীন হতে পারে না মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘পবিত্র আছর উনার কসম! নিশ্চয়ই সমস্ত মানুষ ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে রয়েছে। শুধুমাত্র তারা ব্যতীত যারা ঈমান এনেছে তথা আক্বীদাকে বিশুদ্ধ করেছে এবং নেক আমল করেছে। ’
আজ পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফ।
পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররম শরীফ হলো- আক্বীদা বিশুদ্ধ করার ও আমলে ছালেহ বা নেক আমল করার দিন।
উনার উসীলায় বান্দা-বান্দি ও উম্মত ইহকালে সর্বপ্রকার মুছিবত থেকে নাজাত লাভ করবে এবং পরকালে জাহান্নাম থেকে নাজাত লাভ করে জান্নাত লাভ করবে।
তাই প্রত্যেক বান্দা-বান্দি ও উম্মতের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হলো,
পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে আক্বীদা বিশুদ্ধ করে ও আমলগুলো করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি মুবারক হাছিলের কোশেশ করা।
খালিছ ঈমানদার বা আল্লাহওয়ালা হতে হলে প্রথমতঃ আক্বীদাকে বিশুদ্ধ করতে হবে অর্থাৎ প্রতি ক্ষেত্রে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে হবে। দ্বিতীয়তঃ প্রতি ক্ষেত্রে পবিত্র সুন্নত মুবারক উনার ইত্তিবা তথা পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের মধ্যে বর্ণিত নেক আমলগুলো করতে হবে।
পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররম শরীফ উনার সাথে আক্বীদা ও আমল দুটি বিষয়ই জড়িত রয়েছে। যেমন আক্বীদা সম্পর্কিত বিষয় হলো- অনেকে ক্বিল্লতে ইলিম ও কিল্লতে ফাহাম তথা কম জ্ঞান ও কম বুঝের কারণে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার আলোচনায় অনেকে হযরত নবী আলাইহিমুস সালাম ও হযরত রসূল আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সম্পর্কে মনগড়া ও বানানো সমালোচনা বা দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করে থাকে।
নাঊযুবিল্লাহ! যেমন, তারা বলে থাকে যে, “পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে হযরত আদম আলাইহিস সালাম তিনিসহ অনেক হযরত নবী ও রসূল আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের গুনাহখতা মাফ করা হয়েছে। নাঊযুবিল্লাহ! অথচ এসব কথা বলা ও আক্বীদা পোষণ করা কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত। কেননা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা হচ্ছে- “সকল হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা মা’ছূম বা নিষ্পাপ। ”
পবিত্র আক্বাইদ শরীফ সম্পর্কিত কিতাবে উল্লেখ আছে, “সকল হযরত আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম উনারা ছগীরা, কবীরা, কুফরী, শিরকী এবং সমস্ত প্রকার অপছন্দনীয় কাজ হতেও পবিত্র। ” (পবিত্র আক্বাইদে নসফী শরীফ)
পবিত্র আশূরা শরীফ উনার আলোচনায় অনেকে এও বলে থাকে যে, ‘বিশিষ্ট ছাহাবী, আমীরুল মু’মিনীন হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ইয়াযীদকে ক্ষমতা দিয়ে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন।
’ নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ আমীরুল মু’মিনীন হযরত মুআবিয়া রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শুধু ছাহাবীই নন বরং জলীলুল ক্বদর কাতিবে ওহী ও গুপ্তভেদ জাননেওয়ালা ছাহাবী। সুবহানাল্লাহ! আর পবিত্র শরীয়ত উনার ফতওয়া মতে- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের কারো সম্পর্কে কোনো প্রকার সমালোচনা করা, বা কোনো প্রকার দাষারোপ করা কাট্টা কুফরী। উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়েই ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ও দৈনিক আল ইহসান শরীফ’ উনাদের মধ্যে দলীলভিত্তিক বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে; তা পাঠ করে সবাইকে আক্বীদা বিশুদ্ধ করতে হবে।
পবিত্র আশূরা শরীফ উনার আমল গুলো হচ্ছে- ১. পরিববার-পরিজনের জন্য সাধ্যমত ভালো খাবারের ব্যবস্থা করা। ২. পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিনে গোসল করা।
৩. চোখে সম্ভব হলে ইছমিদ সূরমা দেয়া অর্থাৎ যে কোনো সুরমা দেয়া। ৪. ইয়াতীমের মাথায় হাত বুলানো। ৫. গরীব-মিসকীনকে পানাহার করানো। ৬. নয় ও দশ অথবা দশ, এগারো তারিখ দু’টি রোযা রাখা। ৭. রোযাদারকে ইফতারী করানো।
উল্লিখিত প্রতিটি আমলই খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত।
যারা পবিত্র আশূরা শরীফ উনার দিন রোযা রাখবে, তারা পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রাত্রিতে ভালো খাবে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার হিসেবে রাত্রি আগে আসে আর দিন পরে আসে। সে হিসেবে এবছর আজ ২৭ সাদিছ-১৩৮০ শামসী সন, ২৪ নভেম্বর-২০১২ ঈসায়ী সন, ইয়াওমুস সাবতি বা শনিবার দিবাগত রাতটি হচ্ছে পবিত্র আশূরা শরীফ উনার রাত্রি। আর আগামীকাল ২৮ সাদিছ-১৩৮০ শামসী সন, ২৫ নভেম্বর-২০১২ ঈসায়ী সন, ইয়াওমুল আহাদি বা রোববার দিনটিই হচ্ছে পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররম শরীফ উনার দিন।
এ দিনে রোযা রাখলে ষাট বছর দিনে রোযা রাখার ও রাতে ইবাদত করার ফযীলত হাছিল হয় এবং বিগত এক বছরের গুনাহ ক্ষমা করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই প্রত্যেক বান্দা-বান্দি ও উম্মতের জন্য দায়িত্ব কর্তব্য হলো, পবিত্র আশূরা শরীফ উপলক্ষে আক্বীদা বিশুদ্ধ করে ও আমলগুলো করে মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের খাছ রেযামন্দি মুবারক হাছিলের কোশেশ করা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।