লিখে খাই, সবার ভাল চাই
একদিকে পলিটিক্স অন্যদিকে স্পোর্টস। বুধবার দু’জায়গাতেই হয়েছে রেকর্র্ড। ঢাকার সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানের দিকে ছিল গোটা দেশের দৃষ্টি। দীর্ঘ দুই বছর পর প্রধানমন্ত্রী আর বিরোধীদলীয় নেত্রী একই অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। কি কথা হয় তাদের মধ্যে? কে আগে কথা বলেন? কিভাবেই বা দুই নেত্রী অনুষ্ঠানে আসেন? নানা কৌতূহল ছিল সবার মাঝে।
এমনিতে তো দু’জনের মধ্যে দেখা-সাক্ষাৎ নেই, এবার হয়তো মুখোমুখি হবেন তারা। বিটিভির কল্যাণে ওই অনুষ্ঠান সরাসরি দেখেছেন দেশ-বিদেশের মানুষ। কিন্তু অনুষ্ঠান শেষে সবার মাঝে হতাশা। একি করলেন প্রধানমন্ত্রী? তিনি হেঁটে হেঁটে সবার খোঁজখবর নিলেন, একবারের জন্য বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার কাছে গেলেন না। এমনকি তার দিকে ফিরেও তাকালেন না।
অথচ দেশবাসী অপেক্ষা করছিলেন সেই মুহূর্তের জন্য। যেখানে প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে যাবেন, কুশলাদি জিজ্ঞেস করবেন। চারদিকে হাততালি পড়বে। কিন্তু এর কিছুই হলো না। দুই নেত্রীই যার যার পথে হাঁটলেন।
এ পথ তো চায় না দেশের মানুষ। তাই তারা হতাশ হয়েছেন। বিস্মিত হয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, এটি একটি রেকর্ড। বিশ্ব ইতিহাসে অন্যরকম এক রেকর্ড।
পৃথিবীর কোন দেশে এমনটা হয় না। রাজনীতিতে মতপার্থক্য থাকতে পারে। ভিন্ন চিন্তা থাকতে পারে। কিন্তু দুই বৃহৎ দলের দুই প্রধান একে অন্যের সঙ্গে কথা বলবেন না এটা হয় না। আরে শত্রুও তো শত্রুর বাড়িতে গেলে কথা বলে।
জায়গা দেয়। দুই নেত্রী তো আর শত্রু নন। তাদের লক্ষ্য একটাই। দেশের সেবা করা। দেশের উন্নয়ন করা।
তাদের টার্গেটও তো এক। পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নেয়া। তাহলে এমনটা হলো কেন? নানা প্রশ্ন সর্বত্র। মানুষের মুখ তো আর বন্ধ করে রাখা যায় না। বাসে, হাটে, বন্দরে দু’দিন ধরে চলছে এ আলোচনাই।
কেউ কেউ ভারত, আমেরিকার উদাহরণ টেনে আনছেন। কিভাবে সেসব দেশে রাজনৈতিক দলের নেতারা এক টেবিলে বসেন। দেশের জন্য তাদের স্বার্থ জলাঞ্জলি দেন। মান-অভিমান ভুলে ভোটের দিনই বিজয়ীকে অভিনন্দন জানান। কেউ বা বলছেন, এটি জাতির জন্য লজ্জা।
পৃথিবীর রাজনীতির ইতিহাসে রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে এ ঘটনায়। অন্যদিকে এ দেশেরই একজন একই দিন শত বছরের সেরা রেকর্ড গড়েছেন স্পোর্টসে। ক্রিকেটের ইতিহাসে টেস্টে দশ নম্বরে নেমে শতক হাঁকিয়েছেন বাংলাদেশের আবুল হাসান রাজু। অভিষেক টেস্টে নেমেই তিনি আগের রেকর্ড ভেঙে ফেলেন। ১১০ বছর আগে এমন ঘটনা ঘটেছিল ক্রিকেটের ইতিহাসে।
সে রেকর্ড ভেঙেছে বাংলাদেশের রাজু। এ ঘটনায় উল্লাস দেশজুড়ে। রাজুর রাজকীয় এ ইনিংস আগামী শত বছরেও কেউ ভাঙতে পারেন কিনা সন্দেহ। সাধুবাদ রাজু। সাধুবাদ বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
এমন সাধুবাদ জানাতে অপেক্ষায় ছিলেন দেশবাসী। নাহ! দুই নেত্রী সেই সুযোগ দিলেন না দেশবাসীকে। এক আড্ডায় এ নিয়ে তুমুল আলোচনা, সমালোচনা। একজন বলছেন, এমন রেকর্ড আমরা চাই না। আমরা চাই, প্রতিদিন, প্রতি মুহূর্তে দুই নেত্রী দেশের মঙ্গল নিয়ে ভাববেন।
একে অন্যের সঙ্গে পরামর্শ করবেন। হাত মেলাবেন। দেশের সঙ্কটকালে একে অন্যের সাহায্য চাইবেন। তাহলেই বদলে যাবে বাংলাদেশ। অন্যজন বললেন, এটা বাংলাদেশ।
এখানে এ আশা করা যায় না। রাজনীতিবিদরা আমাদের সেই আশা জাগাতে দেননি। তারা দিয়েছেন, হিংসা, নিন্দা আর ঘৃণা করার শিক্ষা। খুলনার টেস্টে রাজুর রাজকীয় ইনিংস। দুর্দান্ত পারফরমেন্স।
শত বছরের সেরা রেকর্ডও যেখানে পারে না দুই নেত্রীকে এক কাতারে দাঁড় করাতেÑ সেখানে আর কিসে তারা এক হবেন? আসলে তারা নিজেদের নিয়ে ভাবেন। চিন্তা করেন। দেশের চিন্তা করবেন কখন? ওই যে সেই বিমাতার মতো। এক ভদ্রমহিলাকে একজন জিজ্ঞেস করলেন, আপনার সতীনের কয় সন্তান? তিনি উত্তর দিলেন, ইয়া মোটা মোটা ৩ জন। ভদ্রলোক আবার প্রশ্ন করলেন, আপনার কয়জন? এবার ভদ্রমহিলা বললেন, মরে মরে ২ জন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।