২০৩০ সালের কোন এক বিষণ্ণ সকাল। প্রতিদিনের মতোই রনি আর রিনির দিন শুরু হয় একইভাবে। সম্পর্কে ওরা ভাই-বোন। সারাদিন তাদের পার হয় বাবা-মা'কে কাজে সহায়তা করে। ওর বাবা মোটামুটি স্বচ্ছল হলেও ওরা কেউ পড়াশুনা করে না।
রনিদের পাশের বাসায় থাকেন এমপি আংকেল। এলাকার সবাই উনাকে অনেক মান্য করে। তবে উনি ঐ বাসায় থাকেন না। তার ছেলেকে সাত সকালে ব্যাগ কাঁধে স্কুলে যেতে দেখে রনি। চুপচাপ রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে যায় রনি।
সেখানে তার আম্মু আর বোন কাজে ব্যস্ত। রিনি খুব মেধাবী,সে-ও পড়াশুনা করে না। রনি ধপাস করে তার মায়ের পাশে বসে পড়ে।
মাঃকিরে কি হয়েছে?
রনিঃমা,আমি আর রিনি কি কখনোই স্কুলে যাবো না?
মাঃহঠাৎ এই প্রশ্ন কেন?
রনিঃপাশের বাসার এমপি আঙ্কেলের ছেলে স্কুলে যায় প্রতিদিন,আমি আর রিনি কেন যাই না?
মাঃ শোন বাবা,অনেক আগে ১৯৭১ সালে আমাদের দেশের সাহসী সন্তানেরা পাকিস্তানীদের হাত থেকে দেশ স্বাধীন করেছিলেন যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। তাঁদের স্বপ্ন ছিল দেশের সবাই তাদের মৌলিক অধিকারটুকু পাবে,খাদ্য,বস্ত্র,বাসস্থান,শিক্ষা,চিকিৎসা।
এই জন্য একটা সংবিধান-ও ছিল আমাদের,যেখানে স্পষ্ট করে লিখা ছিল,দেশের সব নাগরিক সমানভাবে উপরের সব অধিকার পাবে। কিন্তু আস্তে আস্তে সব চলে গেল কোটা অধিকারীদের দখলে,নানা রকম কোটা তৈরি হলো আর সেটা নেয়ার জন্য শুরু হলো অসুস্থ প্রতিযোগিতা। মেধাবীরা ধীরে ধীরে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইট দিয়ে ঢুকারই সুযোগ পেল না। তোর বাবা তো এমপি বা মন্ত্রী না,আর আমার-ও কোন কোটা নেই। তাই তোদের পড়াতে পারছি না।
"
উপরের ঘটনা কাল্পনিক,আমি মনে প্রাণে চাই ঘটনাটি যেন কাল্পনিক-ই থাকে। খুব ধীরে ধীরে আমাদের পড়াশোনার ব্যপারটা সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। অনেক কোটার সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হবার জন্য যুক্ত হতে যাচ্ছে মন্ত্রী এমপি কোটা। যায় দিন ভালো,আসে দিন খারাপ। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।