মানবতার গান গেঁয়ে যায়-তারুণ্যের প্রেরণায়
* কেস স্টাডি-১
ঘটনাটি ঘটেছিল ২০০৪ সালের ২২ আগষ্ট। রাজধানী ঢাকার অদুরে সাভারের জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ( আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আজ কি মানুষের পরিবর্তে নরপশু তৈরি হচ্ছে!) । গার্মেন্টস কর্মী রাহেলা আক্তার লিমা নামের ১৯ বছরের এক তরুণীকে একদল নরপশু রাতভর উপর্যুপরি ধর্ষনের পর ধারালো ছুরি দিয়ে তার শরীরকে ক্ষত বিক্ষত করে। গলা কেটে দেয়। তারপর বর্বরোচিত ভাবে তরণী রাহেলার স্পাইনাল কর্ডূ ছুরি দিয়ে ছিন্ন ভিন্ন করে ধর্ষকরা।
এরপর বিশ্বব্দ্যিালয় এলাকায় নীরব নির্জন একটি ময়লা আবর্জনার স্তুপে রাহেলার নিথর দেহ ফেলে চলে যায় ঘাতক দুর্বৃত্তরা। তারা ভেবেছিল রাহেলা মারা গেছে। ঘটনার তিনদিন পর নরপশু ধর্ষকেরা রাহেলার মৃত দেহের হাল জানতে এসে দেখতে পায়, রাহেলা বেঁচে আছে এবং প্রচন্ড পিপাসায় পানি! পানি! বলে অস্ফুট চিৎকার করতে থাকে। রাহেলার এই জীবস্মৃত অবস্থায় পাষন্ড ধর্ষকরা রাহেলাকে পানির পরিবর্তে তার সারা দেহে ঢেলে দেয় এসিড। মেয়েটির মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে বর্বর ধর্ষকরা স্থান ত্যাগ করে।
তারপরেও কিভাবে যেন রাহেলা বেঁচে যায়। দগ্ধ,গলাকাট ও পচর ধরা দেহ নিয়ে রাহেলা বেঁচে ছিল। বার বার পানি পানি বলে চিৎকার করছিল সে। পরের দিন ২৫ শে আগষ্ট সকালে বৈদক্রমে হাঁটতে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাগানের এক মালি স্তুপের ভেতরে নিথর,দগ্ধ,পঁচাগলা শরীরের রাহেলাকে আবিস্কার করে। তখনো রাহেলা জীবিত।
এরপর পুলিশ খবর পেয়ে দ্রুত রাহেলাকে নিয়ে যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানে তিন দিন পর তার জ্ঞান ফিরলে সে জবানবন্দী দেয়। কিন্তু ঘটনার ৩৩ দিনের মাথায় রাহেলা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। স্বামী তার লাশ গ্রহন করেনি, জায়গা হয়নি শুশুর বাড়ীতে। রাহেলা পৃথিবীর ইতিহাসের বর্বরোচিত জঘণ্য ও পাশবিক একটি ঘটনার নির্মম সাক্ষী এবং জঘণ্য নির্মমতার শিকার হয়ে চলে গেছে অবশেষে।
রাহেলার আত্মা এখনো চিৎকার দিয়ে বলে কবে হবে এ বর্বরতার অবসান?
* কেস স্টাডি-২
একটি যুবক,সে ভাল বক্তৃতা করতো,এক সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক সে। এক বুড়ীর বাড়িতে যেত সে। বুড়ী তাকে প্রান দিয়ে ভালবাসতো-স্নেহ করতো; এতটুকু অবিশ্বাস করতো না। বুড়ী উচ্চ হৃদয় সম্পন্ন যুবক কে গৃহে পেয়ে নিজেকে ধন্য মনে করতো। বুড়ীর একটি মাত্র অবলম্বন ছিল তার বার বছরের প্রিয় সন্তানটি।
দেখতে বেহেশতের পরী বালকের মতো। এই যুবক বালকটিকে ভালবাসতো; বড়ী প্রাণ ভরে দেখতো তার পিতৃহীন সন্তানকে যুবক ভালবাসে,স্নেহ করে। প্রাণভরে সে যুবককে আশীর্বাদ করতো। একদিন যুবক এ শিশুর মুখে গোপনে চুম্বনে করলো। সুকুমার স্বর্গের শিশুটি যুবকের মুখের দিকে বিস্ময়ে তাকিয়ে রইল।
তারপর ধিরে ধিরে শিশুটিকে যুবক পাপের পথে আকর্ষন করলো। তার সোনার হৃদয়ে কুসুমে পাপের হলাহল ঢেলে দিল। সইে বালকটিকে দিয়ে যুবকটি তার কামনা-বাসনা চরিতার্থ করতো। বুড়ীর নয়ন পুত্তলির সর্বনাশ হয়ে গেল। বুড়ী তা জানতে পারলো না।
তার সাজানো বাগানে যুবকটি আগুন ধরিয়ে দিল। এখন দেখি বুড়ী পুত্র শোকে অন্ধ। রাস্তায় রাস্তায় সে ভিক্ষা করে । তার সোনার যাদুটি মারা গেছে। বালটি ধিরে ধিরে পাপের পথে অগ্রসর হতে থাকে।
তার স্বাস্থ্য নষ্ট হয়,বিবিধ রোগে সে ভেঙ্গে পড়ে.সে মদ,গাঁজা,ভাঙ্গড়া খায় পরে সে জেলে যায় সেখানেই সে মারা যায়। শিক্ষিত নামের পশু যুবকের কামনার বলি হতে গিয়ে একটি পরিবার তছনছ হয়ে গেলো (ডা: লুৎফর রহমান রচনা সমগ্র)।
উপরের দু‘টো কেস স্টাডিতে ফুটে উঠেছে আমাদরে যুব সমাজের যৌন সন্ত্রাসে আক্রান্ত হওয়ার ভয়ংকর ও ভিবীষিকাময় রুপটি। যা আমাদের সামাজিক অবক্ষয়ের ঘৃণিত দিকটি উলঙ্গভাবে দেখিয়ে দেয়। মূলত যৌন সম্পর্কিত অপরাধ গুলোকেই যৌন সন্ত্রাস বলা হয়।
সন্ত্রাস বর্তমান পৃথিবীর আতংক। কিন্তু বর্তমানে সারা পৃথিবীব্যাপী যৌন সন্ত্রাসের ব্যাপকতা সারা পৃথিবীবাসীকে চরমভাবে ভাবিয়ে তুলেছে। পৃথিবীর সম্ভবনাময় যুব শক্তি আজ ভয়ংকরভাবে যৌন সন্ত্রাসে আক্রান্ত। চির সুন্দরের পুজারী এ তরুন সমাজ তাদের সম্ভবনাময় শক্তিকে যৌন সন্ত্রাসের মাধ্যমে কলংকিত করে চলেছে। কিন্তু কেন আজ তারুন্যের এ অধ:পতন? কেন পৃথিবী গড়ার কারিগররা এত হিংস্র হয়ে উঠল? কেন যৌন শক্তিকে সঠিক পথে,কাজে লাগানোর পরিবর্তে ধ্বংসে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে? এর কি কোন জবাব আছে আমাদের সরকার ও রাজনীতিবীদদের কাছে? বরং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরাকরদলীয় সন্ত্রাসী ও রাজনৈতিক সন্ত্রাসীদের দ্বারায় এ ঘৃণ্য কাজগুলো সংগঠিত হচ্ছে।
বর্তমান ছাত্রলীগের নারী নির্যাতন মিশন এর সর্বোকৃষ্ট প্রমান। যৌন সন্ত্রাসের ব্যাপকতা হতবিহবল পৃথিবীবাসীর প্রশ্ন যৌন শক্তি কি শুধু যৌন সন্ত্রাসের জন্য? তাহলে কেন প্রয়োজন এ যৌন শক্তির? এ যৌন সক্ষমতার ভেতরে কি মানবতার কোন কল্যান নিহিত আছে?
স্কুলের প্রাঙ্গন থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র অঙ্গন পর্যন্ত যৌন সন্ত্রাসের ভীবিষিকায় ভরপুর। ছোট্ট মায়ের কোলের নিষ্পাপ বাচ্চা থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বুড়ী পর্যন্ত কেউও মুক্ত নয় যৌন সন্ত্রাসের কবল থেকে। যৌন সন্ত্রাসের কারণে দেশটা নারী সমাজের জন্য আতংকের মৃত্যুপুরীতে পরিনত হয়েছে।
আল্লাহপাক প্রতিটি সৃষ্টিকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের বৈধ যৌন সম্ভভোগের জন্যই মূলত এ জোড়া সৃষ্টি।
আর সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব হিসাবে মানুষকে তার কামনা বাসনা পূরনের জন্য বিবাহ প্রথা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। পরিবার ও বিবাহ প্রথার মাধ্যমেই মূলত পৃথিবীর সকল সুখ শান্তি ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষা নির্ভর করে। কিন্তু বর্তমানে পর্নো আগ্রাসন, ডিশের নীল থাবা ,ইন্টারনেট পর্নোগ্রাফী ও যৌন রসে সিক্ত চলচ্চিত্রের কুপ্রভাবের কারণে সারা পৃথিবী এখন যৌন সন্ত্রাসের নিরাপদ অভয়ারন্যতে পরিনত হয়েছে। আর এর থেকে মুক্ত নয় আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিও। সবচেয়ে আতংকের বিষয় হচ্ছে যৌন সন্ত্রাসের রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতার কারণে রাজনৈতিক সরকার গুলোর আমলে যৌন সন্ত্রাস মহামারীর রুপ ধারণ করেছে।
বিকৃত রাজনৈতিক কৌশলে পরিনত হয়েছে এ যৌন সন্ত্রাস। ৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে লক্ষ লক্ষ মা বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অর্জিত এ স্বাধীন দেশে নারীরাই সবচেয়ে বেশি যৌন সন্ত্রাসে আক্রান্ত হচ্ছে। তাহলে কি জন্য এত যুদ্ধ ও রক্তপাত ও সম্ভবহানির? রাজনৈতিক কারণে ধর্ষিত একজন নারীর ধর্ষনের ঘটনাকে ধর্ষন নয় শ্লীলতাহানী বলে মন্তব্য করেন বিকৃত রুচির রাজনীতিবীদরা। এটাই হচ্ছে যৌন সন্ত্রাসের রাজনীতিকরণ। যৌন সন্ত্রাসে কবলিত যুব সমাজের যৌন সন্ত্রাসের যৎকিঞ্চিত বিবরন পেশ করা হল ঃ-
১. ধর্ষন ঃ- ধর্ষন হচ্ছে যৌন সন্ত্রাসের সবচেয়ে ভয়ংকর রুপটি।
ধর্ষন সভ্যতার ইতিহাসে সবচেয়ে জঘণ্য অপরাধ। এর মাধ্যমে শুধু একটি নারীকে অকালে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয় না বরং একটি পরিবারকেও অকালে নি:শেষ করে দেওয়া হয়। তাই ধর্ষনরে মাধ্যমে একটি নারীকে নয় একটি জাতিকে ধ্বংস করে দেয়া হয়। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায়-২০০২ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত আমাদের দেশে ৪ হাজার ২১৯ জন ধর্ষনের শিকার হয়েছে। ১ হাজার ৮৪৪ জন গণধর্ষন হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তরের এক প্রতিবেদনে জানা যায়-১৯৯৭ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত গত পাঁচ বছরে ধর্ষনরে শিকার হয়েছে ১৪১২৮ জন। ১৯৯৭ তে ১৩৩৬, ১৯৯৮ তে ২৯৫৯, ১৯৯৯ তে ৩৫০৪, ২০০০ তে ৩১৪০, ২০০১ সালে ৩১৮৯ জন ধর্ষনের শিকার হয়েছে। এ সময় ৩ বছরের শিশু থেকে শুরু করে ৭০ বছরের বুড়ী পর্যন্ত ধর্ষনের শিকার হয়েছে।
বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের ৫ বছরের নারী নির্যাতনের চিত্র তুলে প্রতিবেদনে জানায়- ২০০৫ সাল থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে ৫ হাজার ৪৯৫ টি খুন ও ধর্ষনের পর হত্যা, গণধর্ষন ও ধর্ষন ৩ হাজার ২৪৬ টি।
অপর এক জরিপে দেখা যায়-২০০৩ থেকে ২০০৯ এর অক্টোবর পর্যন্ত বাংাদেশে ৫০০০ নারী ও কন্যাশিশু ধর্ষনের শিকার হয়েছে।
পুলিশের বার্ষিক অপরাধ সম্মেলনে সি আইডির এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয় -২০০৯ সালে ধর্ষনের অভিযোগে মামলা হয়েছে ২৯৭২ টি। দেশে গড়ে প্রতিদিন ৮ টি ধর্ষনের ঘটনা ঘটেছে। মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়-২০০৯ সালের ১ জানুয়ারী থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত এক বছরে শুধু ধর্ষনরে পর হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছেন ৯৭ জন নারী ও কন্যাশিশু। আর ধর্ষনের শিকার হয়েছেন ৪৫৪ জন নারী। এর মধ্যে প্রাপ্ত বয়স্ত নারী ২১১ জন এবং কন্যা শিশু ২৪৩ জন।
গণধর্ষনরে শিকার হয়েছেন ৯৭ প্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও ৭৯ কন্যাশিশু । বর্তমানে বাংলাদেশে ধর্ষনের ঘটনা ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
১. গণধর্ষনের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে।
২. গণধর্ষনের পরে নারীর বাঁচার সম্ভবনাকে শেষ করে দেয়া হচ্ছে। ধর্ষনরে পর তার উপর নিক্ষিপ্ত হচ্ছে এসিড, কখনো তাকে জবাই করে হত্যা করা হচ্ছে, কখনো মাথা ন্যাড়া করে দেয়া হচ্ছে, কখনো হাত পা ভেঙ্গে দেয়া হচ্ছে।
ধর্ষনের পর কখন্ও তাকে টুকরো টুকরো করে কেটে খালে নদীতে বা পুকুরে ফেলে দেয়া বা গলায় ফাঁস লাগিয়ে বাড়ির সামনে গাছে ঝুঁলিয়ে রাখা হচ্ছে যাতে মামলা করতে সাহস না পায়। মাথা উচুঁ করে হাঁটতে না পারে।
৩. অভিভাবক, স্বামী ও সন্তানের সম্মুখে কিশোরী কন্যা বধু ও মাকে ধর্ষন/গণধর্ষন করা হচ্ছে।
৪. স্কুলের ছাত্রীদের অপহরণ করে নিয়ে ধর্ষন করা, ধর্ষনের ছবি তুলে হাটে বাজারে প্রদর্শন করে তার জীবনকে বিষিয়ে তোলা।
৫. ধর্ষনের ভিডিও করা।
ধর্ষন পুরনো বিষয় হলেও উল্লেখিত ধারাগুলো সাম্প্রতিক প্রবণতা যা সমাজের ভেতরের মূল্যবোধের অবক্ষয়কে উলঙ্গ করে দেখিয়ে দেয়। বর্তমান এ চিত্রটি যুব অবক্ষয়ের চুড়ান্ত জগণ্য রুপটি জাতির কাছে প্রকাশ করে দেয়। মানুষকে আতংকগ্রস্ত করে তুলে। নারী জগণ্য হাতিয়ার ধর্ষন এখন আর পুরুষতান্ত্রিক আর সামন্তন্ত্রিক কোন গন্ডিতে সীমাবদ্ধ নয়। ধর্ষন একটি রাজনৈতিক প্রতিশোধ গ্রহনের ঘৃণ্য হাতিয়ার।
নারী যেহেতু পুনরুৎপাদনের শক্তির অধিকারী, সেহেতু নারীর উপর দিয়েই এ জগণ্য, নোংরা, অমানবিক ঘটনা ঘটে যা নারীকে আরো বেশি হেয় অবস্থানে ঠেলে দেয়। মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ এতটাই নীচে নেমে গেছে যে, ধর্ষনরে শতক পূর্ণ হওয়ায় মিষ্টি উৎসবে মেতে উঠতেও দ্বিধাবোধ করছে না। তাও আবার পবিত্র শিক্ষাঙ্গনে । বর্তমানে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের হাতে ছাত্রীরাও ধর্ষনরে শিকার হচ্ছেন। আর ছাত্রলীগের দেশব্যাপী নারী ধর্ষন ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নারাীর সম্ভম হানি এবং দেহ ব্যবসায় ছাত্রীদের বাধ্য করার ঘটনা দেশে নারীর অবস্থানকে আরো অনিরাপদ করেছে।
লক্ষ লক্ষ মা-বোনের উজ্জতের বিনিময়ে সোনার বাংলাদেশ আজ নারীদের জন্য আতংকের পুরীতে পরিনত হয়েছে।
২. ইভটিজিং ঃ- ইভটিজিং বা উত্যক্ত কর্ওা এক ধরনের যৌন সন্ত্রাস। ইভটিজিং হচ্ছে বিকৃত মনের এক বিকৃত যৌন রুচির কাজ। নারী জাতি মায়ের জাতি ইভটিজিংয়ের মাধ্যমে মায়ের জাতিকে অসম্মান করা হয়। মূলত: আমাদের চলচ্চিত্র জগৎ থেকে এবং হিন্দী ফিমের মাধ্যমেই ইভটিজিং নামক এ বিকৃত যৌন রুচি আমাদের যুব সমাজের মধ্যে সংক্রমিত হয়।
দিন দিন ইভটিজিং এর এ মারাত্মক প্রবনতা ব্যাপক আকার ধারণ করছে। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পবিত্র অঙ্গনগুলোও আজ ভয়ংকর ভাবে এ বিকৃত রুচিতে আক্রান্ত। দিন দিন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও যুব সমাজ এ বিকৃত রুচিতে আক্রান্ত হচ্ছে। আর এক্ষেত্রে আমাদের নষ্ট ছাত্ররাজনীতির নষ্ট নেতাকর্মীরাও পিছিয়ে নেই। চলতি বছরে ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে আত্মহত্যার প্রবনতাও বেড়েছে।
শুধু কি ইভটিজিংয়ের শিকার হয়ে নারীরা আত্মহত্যা করছে তা নয়, ইভটিজিং থেকে মেয়েকে বাঁচাতে না পারার দরুন শ্রদ্ধেয় পিতারাও আত্মহত্যার পথ বেঁচে নিচ্ছে। যা আমাদের আইন আদালতের জন্য চরম লজ্জার বিষয়। গত বছর সাড়ে পাঁচ মাসে ইভটিজিং ও প্রেমে ব্যর্থ হয়ে ১৩ জন ছাত্রী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছে। এরা হলো নাসফিয়া আকন্দ পিংকি, বৃষ্টি, ফাহিমা, রেশমা আক্তার, চাঁদমনি, অরুন্ধতী, ইলোরা, নুরিরা সুলতারা প্রভা প্রমুখ।
৩. সমকামিতা ঃ- সমকামিতাও এক ধরণের যৌন সন্ত্রাস।
এটি একটি প্রাকৃতিক নিয়ম বিরোধী জগণ্য কাজ। কারণ পায়ু যৌন সঙ্গমের জন্য নয়। এরপরেও এক শ্রেণীর বিকৃত রুচির মানব এটাতে আগ্রহী। এ বিকৃত যৌনাচার থেকেই এইডস রোগের উৎপত্তি লাভ করে। বাংলাদেশে এ বিকৃত যৌনাচার খুব দ্রুতই বুদ্ধি পাচ্ছে।
যা রীতিমত আতংকের ব্যাপার। জাতীয় এইডস ও এসটিটি প্রোগ্রাম (এনএসপি) এর মতে-বাংলাদেশে ২০০৭ সালের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী এইচ আইভি/ এইডসে অত্যন্ত ঝঁটিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে প্রায় ৩ লাখ মানুষ। এর মধ্যে পুরুষ সমকামী ও খদ্দের ৪০ হাজার থেকে দেড় লাখ এবং হিজড়া রয়েছে ১০ হজেরে থেকে ১৫ হাজার। ডেইলী স্টার পত্রিকার এক রির্পোটে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সোশ্যালজির সহযোগী অধ্যাপক ড: সাইফুল আজমের মতে, বাংলাদেশে সমকামিতা বৃদ্ধির হার বছরে প্রায় ৩.৫%। বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটি জানায়, ২০০৫ সালেই চট্টগ্রামে পেশাদার পুরুষ সমকামীর সংখ্যা ছিল ৩৫০০ জন।
বর্তমানে এ সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের মতে, সব শ্রেণী পেশার লোকজন নাকি রয়েছে পুরুষ সমকামীদের মধ্যে । এমএসএম ও হিজড়া সুমন জানায়- দেশে প্রায় ১২ লাখ হিজড়া এবং প্রায় ১ লাখ এমএসএমরা সমকামী রয়েছে। হোমোসেক্সুয়াল ইউটিলিটি গ্রোরোইন এইডস রিস্ক ইন বাংলাদেশ নামক এক রির্পোটে বাংলাদেশে ১০ মিলিয়ন সমকামী নারী পুরুষের বসবাস বলা হয়েছে। এতো আরো বলা হয়েছে দিন দিন এ সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
বাংলাদেশে সমকামীরা সঙ্গী খুঁজতে আশ্রয় নিচ্ছে ওয়েবসাইটের। নিজস্ব ওয়েবসাইটে তারা ছবি,নাম,ঠিকানা,পেশা,শিক্ষাগত যোগ্যতা, ফিগারের ধরণ উল্লেখ করে বিজ্ঞাপন প্রচার করছে। ওই বিজ্ঞাপন থেকে সমকামীরা তাদের পছন্দমতো সঙ্গী বেছে নিচ্ছেন। কেউ কেউ একাধিক সঙ্গী খুঁজছেন। পাশাপাশি তার তাদের দল ভারী করার জন্য গড়ে তুলেছে এসোসিয়েশন,ওয়েবসাইট ও ম্যাচমেকার প্রতিষ্ঠান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ-যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস বলেন- সমকামিতা আমাদের সামজে আছে। বিভিন্ন স্তরে বিদ্যামান। অনেকেই সমলিঙ্গের সাথে জৈবিক চাহিদা পূরণ করছে। নানা ধরণের আবাসিক হলগুলোতে কিছু কিছু সমকামী রয়েছে। এখন তারা এক হয়ে তাদের অধিকার ফিরে পেতে চেষ্টা করছে।
অনেক ক্ষেত্রে সমকামিতায় আসক্ত যুবকরা দিন দিন বিয়ের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে, সামাজিক কারণে বিয়ে করতে বাধ্য হলেও সংসার ভেঙ্গে যায়। এর কারণে সমাজে তালাক ও বিবাহ বিচ্ছেদের প্রবনতাও বাড়ছে। সমকামিতার কারণে খুন সহ নানা অপরাধের জন্ম নিচ্ছে। রাজশাহীতে মহানগর আওয়ামীলীগের চিরকুমার সাংগঠনিক সম্পাদক খুনের কারণও এ সমকামিতা। আমাদের মতো দারিদ্র দেশে সমকামিতা বৃদ্ধির জন্য গ্রোবাল ফান্ডের সহযোগীয় ৪৫০ কোটি টাকার কমডম ও লুব্রিলিকেন্ট বিতরণ কর্মসূচি পালন করছে বিভিন্ন এনজিও সংস্থ।
বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার নোঙ্গর সহ বিভিন্ন এনজিও সংস্থা সমূহের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে দেশে সমকামিতার মতো বিষাক্ত মহাপাপের বিস্তার লাভ ঘটছে। আর এ বিষাক্ত সমকামিতার মাধ্যমে দেশে এইডসের প্রবনতাও বাড়ছে।
৪. বেশ্যাবৃত্তি ঃ- বেশ্যাবৃত্তিও এক ধরণের যৌন সন্ত্রাস। কারণ এর মাধ্যমে যুব সমাজ অবাধ যৌনাচারের সুযোগ পাচ্ছে। বেশ্যাবৃত্তি এক ঘৃণিত পেশা।
মূলতঃ ডিশ ও ইন্টারনেটের আগ্রাসন এবং পর্ণোগ্রাফীর ব্যাপক সয়লাভের কারণে যৌন ক্ষুধায় আক্রান্ত যুব সমাজ সহজে যৌন ক্ষুধাকে মেটানোর জন্য পতিতালয়ে গমন করে। বাংলাদেশে ৭৫% যুবক বিবাহপূর্ব যৌনতায় অভ্যস্ত, যার অধিকাংশই বেশ্যাদের মাধ্যমে পূরণ করা হয়। বিশ্ব ব্যাংকের আগষ্ট ২০০৭ সালের তথ্যানুযায়ী বাংলাদেশে প্রায় ১ লক্ষ ৫ হাজারের বেশি নারী যৌন ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত। প্রতি সপ্তাহে যৌন পল্লীর যৌন কর্মীরা গড়ে ২৮ জন, রাস্তার ভাসমান যৌন কর্মীরা গড়ে ২৭ জন, হোটেলের যৌন কর্মীরা গড়ে ৪৪ জন খদ্দেরের সাথে যৌন কর্ম করে। এনএসপি ২০০৭ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী এইডসের জন্য অত্যন্ত ঝঁকিপূর্ণ ৩ লাখ লোকের মধ্যে পতিতালয় ভিত্তিক যৌন কর্মী ৩৬-৫৪ হাজার, ভবঘুরে বা রাস্তাকেন্দ্রিক যৌন কর্মী ৩৭-৬৬ হাজার, হোটেল ও আবাসিক যৌন কর্মী ২৪-২৮ হাজার রয়েছে।
বাংলাদেশে সরকার কর্তৃক স্বীকৃত ১৬ টি পতিতাপল্লী রয়েছে, যেখানে ১ লক্ষের অধিক পতিতা বাস করে। এছাড়া সহজ পন্থায় অনেক টাকা রোজগার করা যায় বলে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীও এ পেশায় আসে। এরাই অবাধ যৌনাচারের বিস্তার ও এইচ আইভি এইডস সংক্রমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
৫. নারী ও শিশু পাচার ঃ- যৌন ব্যবসা বা বৃত্তির উদ্দ্যেশে নারী ও শিশু পাচার এবং বিক্রি করা এক ধরণের জঘন্য যৌন সন্ত্রাস। টাকার লোভে এক শ্রেণীর বিকৃত মানসিকতার মানুষ এ ঘৃণ্য পেশার সাথে সম্পৃক্ত,এর সাথে যুক্ত আছেন আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং তাদের তত্ত্বাবধানেই এ ঘৃণিত কাজটি নিরাপদে সংগঠিত হচ্ছে।
এন সাথে যুক্ত হচ্ছে রাজনৈতিক পৃষ্টপোষকতা। দেশে অনেক রাজনৈতিক নেতা কর্মীরাও এ ঘৃণিত পেশায় যুক্ত। বিদেশে চাকুরীর লোভ দেখিয়ে এবং শিশুদের অপহরণ করে বিদেশে পাচার করা হয়। মহিলা পরিষদ ও ইউনিসেফ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়-গত ৩০ বছরে ১০ লাখ নারী পাচার হয়েছে। প্রতি মাসে ৪শ নারী এবং বছরে ১ লাখ ২০ হাজার নারী কে পতিতালয়ে বিক্রি করে দেয়া হয়।
গত ১০ বছরে ১২ থেকে ৩০ বছর বয়সী ৩ লাখ নারী ও শিশু ভারতে পাচার হয়। পাকিস্তানে বিক্রি হয়েছে ২ লাখ নারী ও শিশু। পুলিশের এক প্রতিবেদনে বলা হয়-দেশে থেকে প্রতি বছর ৭০ হাজার নারী ও শিশু পাচার হচ্ছেন। পাচার হওয়া ৪০ হাজারের মতো নারীকে ভারত ও পাকিস্তানে যৌন ব্যবসায় বাধ্য করা হচ্ছে। প্রতিদিন ভারত সীমান্তে কমপক্ষে ৫০ জন নারী পাচার হচ্ছে।
অধিকাংশের শেষ গন্তব্য হয় কলকাতা অথবা মুম্বাইয়ের যৌন পল্লীগুলোতে। ২০০০ সালের জাুনয়ারী মাসে থেকে ২০০৩ সালের জুন পর্যন্ত ২৪০৫ জনের মতো বাংলাদেশী শিশু নিখোঁজ হয়। এদের মধ্যে কমপক্ষে ৫১০ জন ছেলে এবং ৪৫১ জন মেয়ে শিশু। বর্তমানে চার লাখ বাংলাদেশী নারী ভারতে ও ৪০ হাজার মেয়ে শিশু পাকিস্তানের পতিতা পল্লীতে দেহ ব্যবসা করতে বাধ্য হচ্ছেন।
৬. পরকীয়া ঃ- পরিবারই শান্তি ও সুখের নীড়।
ম্বামী স্ত্রীর স্বর্গীয় প্রেম ভালবাসায় পরিবারের মূল ভিত্তি। কিন্তু বর্তমান অবক্ষয়গ্রস্ত এ সমাজে পরকীয়া নামক আরেক যৌন সন্ত্রাস আমাদের শান্তি সুখের নীড় পরিবার প্রথাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। পরকীয়ার করুণ শিকার ছোট্ট শিশু তালহা ও সামিউলের করুণ মৃত্যু দেশবাসীকে হতবাক করেছে। পরকীয়ার কারণে স্নেহময়ী মা‘র প্রত্যক্ষ ইন্ধনে খুন করা হলো নিষ্পাপ এ দুটি শিশুকে। ঢাকার এ দুটি ঘটনাই জানান দিচ্ছেন আমাদের পরিবার প্রথা আজ পরকীয়া নামক যৌন সন্ত্রাসের কবলে পড়ে ক্ষত-বিক্ষত হতে চলেছে।
স্বামীকে বাদ দিয়ে অবৈধ যৌন ক্ষুধা মেটাতে গিয়ে পথের কাটা সাফ করার জন্য মায়ের হাতেই খুন হলো নিষ্পাপ এ দৃটি শিশু। পরকীয়া আমাদের সমাজের অবোধ নারীদেরকে বানিয়েছে নিজের জন্মদানকারী সন্তানের হত্যাকারী। পরকীয়ার কারণে মা হলো সন্তান হত্যাকারী খুনী। মূলতঃ বিবাহিত জীবনে স্বামী স্ত্রী পরস্পরকে বাদ অপর কারো সাথে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনকেই পরকীয়া বলা হয়। ডিশের আগ্রাসনের কারণে স্বামী স্ত্রী পরস্পরের প্রতি সন্তুষ্ট হতে পারছে না, স্বামীর যৌন দূর্বলতা এবং বিয়ের পর দীর্ঘদিন পর্যন্ত প্রবাস যাপন ইত্যাদী সমস্যার কারণেই অধিকাংশ পরকীয়া সম্পর্কের সূত্রপাত।
এটি আমাদের দেশের প্রবাস যাপনকারী প্রতিটি পরিবারেই এখন প্রধান সমস্যাতেই পরিনত হয়েছে। বিবাহিত জীবনে স্বামীর দীর্ঘদিন প্রবাস যাপনের কারণে স্ত্রী তার যৌন চাহিদা মেটাতেই মূলতঃ পরকীয়া সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। আর অনেক ক্ষেত্রে স্বামী তার স্ত্রীর প্রতি সন্তুষ্ট হতে না পারলেও পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। অনেক ক্ষেত্রে এক স্ত্রী দিয়ে পরিতৃপ্ত হতে পেরেও অনেক পুরুষ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে। অনেকে আবার টাকা পয়সার লোভে পরকীয়ায় সম্পৃক্ত হয়।
অনেক ক্ষেত্রে পরকীয়া আসক্ত নারী তার স্বামীর টাকা পয়সা নিয়ে পরকীয়ার বন্ধুর সাথে উধাও হয়ে যায়। পরকীয়ার কারণে আমাদের সামাজিক জীবনে খুনাখুনি সহ নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। পরকীয়া সম্পর্কেন কারণে স্বামী খুন হচ্ছে স্ত্রীর হাতে আর স্ত্রী খুন হচ্ছে স্বামীর হাতে, সন্তান খুন স্নেহময়ী বাবা-মায়ের হাতে। পরকীয়া একজন মানুষকে এমনই নিষ্ঠুর করে তোলে। পরকীয়ার কারণে সংগঠিত জোরাইন ট্ট্যাডেজীতে আত্মহত্যাকারী মা ও দুই সন্তানের করুণ মৃত্যু আমাদের জাতীয় জীবনকে নাড়া দিয়েছে।
আহত করেছে দেশের সচেতন জনসাধারণকে।
এছাড়া পরকীয়ার কারণে তালাক বিবাহ বিচ্ছেদ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন সহ সামাজিক সমস্যার জন্ম নিচ্ছে।
৭. নিষিদ্ধ সম্পর্ক ঃ- অবক্ষয়গ্রস্ত এ সমাজ ভেঙ্গে দিয়েছে মা-ছেলের,বাবা-মেয়ের শ্রদ্ধার দেয়াল । উধাও হয়েছে ভাই-বোনের পবিত্র সম্পর্ক। জন্ম নিচ্ছে পশু পাখির মতো নিষিদ্ধ সম্পর্কের ।
মানুষকে পরিনত করেছে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট কীটে। নিষিদ্ধ সম্পর্কের এ অপকর্মগুলো মাঝে মধ্যে মিডিয়ার কল্যানে প্রকাশিত হয়। নিষিদ্ধ সম্পর্কের এ জগৎ এখন আর নিষিদ্ধ নেই, মানব পশুরা এসব অপকর্ম করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না,বরং ইন্টারনেটের কল্যানে ছড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীময়। বাংলাদেশে এরকম দুই কীটের ইন্টারনেটে প্রকাশিত লেখার কিছু অংশ পাঠকদের জ্ঞাতাত্বে তুলে ধরা হলঃ
‘‘ আমার নাম রেজা (নষ্ট কীট) । আমার অন্যরকম অভিজ্ঞতা (ছি! ছি! ছি!) হয়েছে তা আমি সবার সাথে শেয়ার করতে চাই।
আমি আমার আম্মার সাথে শারীরিক সাথে শারীরিক সম্পর্ক করেছি (ছি ছি ছি ) এটা আমার অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এখন আম্মার সাথে আমার নিয়মিত শারীরিক সম্পর্ক হয়। যখন আমার বয়স দশ তখন আমার আব্বা মারা যান। আমার এক বড় বোন আছে। তিন বছর আগে বোনের বিয়ে হয়ে গেছে।
তাপর থেকেই আমি আর আম্মা থাকি। আমি ছোট বেলা থেকেই অশ্লীল গল্প বেশি পছন্দ করতাম। ইন্টারনেটে এরকম অনেক গল্প পড়েছি। হঠাৎ একটা ওয়েবসাইটে মা-ছেলের শারীরিক সম্পর্কের কথা পড়লাম,তারপর থেকেই আমি মায়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। আম্মা যখর গোসল করে তখন আমি লুকিয়ে দেখতাম,আর আমি যখন গোসল করি আম্মা তখন লুকিয়ে দেখতেন এভাবেই আমার আর আম্মার শারীরিক সম্পর্কের সূত্রপাত।
’’ মূলত এখানে ভোগ বাদী মানসিকতা আর ইন্টারনেটের কল্যানে এ অপকর্মের সূতপাত হচ্ছে। তাই এব্যাপারে আমাদের সচেতন হওয়া জরুরী।
‘‘ আমি রাজিন । আমার বয়স ২২ বছর। আমার জীবনের একটি ঘটনা আমি আপনাদের শেয়ার করতে চাই।
আমাদের পরিবারের সদস্য সংখ্যা কাজের মেয়ে সহ চারজন। আমি,মা আর দুই বছরের বড় বোন, বাবা দেশের বাইরে থাকে। আপা সবে মাত্র কলেজে পা দিয়েছে। আমার আপার নাম রোজি। আম্মা প্লান করলো এক সপ্তাহের জন্য মামার বাসায় বেড়াতে যাবে।
আমি একা থাকবো সে কথা চিন্তা করে আপাকে হোস্টেল থেকে নিয়ে এল। আম্মা রাতের বাসে রওনা দিল। রাতে আপা আর আমি এক সাথে খাওয়া শেষ করলাম। আপা ঔষধ খেল, আমি জিজ্ঞেস করলাম কিসের ঔষধ বলল ঘুমের ঔষধ। ইদানিং নাকি ওর মোটেই ঘুম আসেনা।
কিছু ক্ষনের মধ্যেই আপা ঘুমিয়ে পড়ল। আমি ডেকে টেস্ট করলাম ঘুমিয়ে গেছে না জেগে আছে। দেখলাম ঘুমিয়ে গেছে। তারপর উঠে টিভি চালু করলাম। এক্স এক্স চ্যানেল করতেই দারুন মুভি চলছে।
রাত ২ টা পর্যন্ত মুভি দেখলাম। মুভি দেখতে দেখতে আমার অবস্থা একেবারে খারাপ। আপার দিকে তাকাতেই আমার শরীরের উত্তেজনা আরো বাড়ল। আপার ঘুমের মধ্যে লাফালাফির করার অভ্যাস ছোটকাল থেকেই। আজকেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
পায়জামাটা হাটুর উপরে উঠে গেল, বুকের ওড়না কোথায় চলে গেল। তা দেখে আমি উত্তেজনায় তর তর করে কাঁপছি। আমার মাথায় তখন কুবৃদ্ধি এল। আপার সাথে সেক্স করব। আপা যেহেতু ঔষুধ খেয়েছে।
যেমন চিন্তা তেমন কাজ। আপা এত বাধাঁ দিল না। আমি মনে করেছিলাম আপা বিষয়টি জানতে পারে নাই। কিন্তু পরবর্তীতে জানলাম সে সব কছিু জানে। এবং সেও এরকম কিছু আশা করছিল।
এভাবে আমরা ভাই বোনের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের সূত্রপাত। পরবর্তীতে আমরা নিয়মিতই মিলিত হতাম। ”
এখানেও ভোগবাদী মানসিকতা আর ডিশের অশুভ প্রভাব এ নিষিদ্ধ সম্পর্ক স্থাপনে উদ্বুদ্ধ করেছে। ধিক ! নরপিশাস ধিক !!।
উপরের দুটো বর্ণনা থেকে বুঝা যাচ্ছে আমাদের এ নিয়ন্ত্রিত সামাজিক ব্যবস্থার মধ্যে এ বিকৃত অপকর্ম কিভাবে বিস্তার লাভ করছে।
ইউরোপ আমেরিকার পশু সভ্যতাকেও আমরা হার মানাচ্ছি। মাফ করবেন পাঠক সমাজ শুধু মাত্র কিভাবে এ নিষিদ্ধ সম্পর্ক আমাদের এ নিয়ন্ত্রিত সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে ভাইরাসের ঢুকে আমাদের সামাজিক সৌন্দর্য ও সুখ শান্তিকে শেষ করে দিচ্ছে তা দেখানোর জন্যই তাদের লিখিত বর্ণনার আংশিক তুলে ধরা হয়েছে।
৮. প্রতারণামূলক প্রেম ঃ- শহরের বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের সামনে থমকে দাড়ালো ব্লু রোস্টার গাড়ি। সেই গাড়ি থেকে নেমে এলো উগ্র আধুনিক যুবক। গম্ভীর মুখ।
বিচিত্র সাজ সজ্জা। সে প্রিন্সিপাল রওশনের সাথে দেখা করতে চায়। বয়স কম হলেও মিস রওশন কঠিন নিয়মানুবর্থিতার আবরনে ঢেকে রেখেছেন তাঁর কোমল ব্যক্তিত্বকে। প্রগতিশীল হলেও কঠোর অনুশাসনে ভরা। ছেলেটি বলল-আমি শাহানার ভাই, মায়ের বড় অসুখ ওকে বাড়িতে নিয়ে যেতে হবে।
ছেলেটির কথা বার্তার মধ্যে এমন দৃঢ়তা লুকিয়েছিল যে প্রিন্সিপাল শাহানাকে ডাকবার জন্য লোক পাঠালেন। একটু বাদে শাহানা এসে হাজির। পনোরো বছর বয়স স্বপ্নময় নীলাভ দুটি আখিঁ। সোনালী কুঞ্জিত কেশদাম পুঞ্জে পুঞ্জে হয়ে আছে কপালে। সুকোমল স্বর্গীয় তার মুখশ্রী।
আধ ঘন্টার মধ্যে শাহানা বেরিয়ে এলো ভাইরুপী সাকিবের সঙ্গে। এরপরের ঘটনা জানতে হলে অতি সন্তপর্নে নজর রাখতে হবে ঔ ছেলেটির ওপর। ওর নাম সাকিব। ও আসলে কুৎসিত নারী ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ওরা বিভিন্ন অভিজাত স্কুল কলেজের সুন্দরী মেয়েদের পথে টেনে নিয়ে আসে।
ওরা বাছাই করে সেইসব মেয়েদের যারা যৌন জ্ঞানের দিক থেকে একেবারেই অদক্ষ। তাছাড়া পুরুষদের সাথে মেলামেশার সুযোগ না থাকায় স্বভাবই তারা পিপাসার্ত ও ক্ষুধার্ত। সাকিবের গাড়ি দাড়িয়েছিল কিছু দূরে । দশ মিনিটের মধ্যে শাহানা পৌছে গেল শহরের প্রান্ত সীমায়। যেখানে কার্জন হোটেলের বেডরুম তার জন্য অপেক্ষা করছিল কার জন্য।
রিসেপশনে কাউন্টারে সাকিব তাদের পরিচয় দিলো সদ্য বিবাহিত দম্পতি হিসাবে । এমনকি ম্যারেজ সার্টিফিকেট জমা দিল সে। এমন নিখুঁত তার কাজ। তারপর সাকিব গিয়ে হাজির হলো রুম নম্বর ফরটি ওয়ানে। সম্পূর্ণ অপরিচিত একটি লোকের কাছে নিজেকে নি:শেষে সপে দিয়ে শাহানা অনুভব করলো উলঙ্গ আলিঙ্গনের অনুভূতি।
যা গত পনের বছরে সে পায়নি। বিবাহিত স্বামী স্ত্রীর মত দু‘দিন কাটালো তারা সেখানে। তারপর শাহানা ফিরে এলো স্কুলে। এরপর থেকে প্রতি মাসে সাকিব হাজির হতো শাহানার স্কুলে। প্রতিবারই সে মিথ্যা বলে জয় করত মিস রওশনের হৃদয়।
আর শাহানাকে নিয়ে উঠতো সেই হোটেলে যা তাদের জন্য অপেক্ষায় প্রহর গুনছে। সাকিব মোটেও বোকা ছিল না। প্রতিবার শারীরিক সম্পর্কের আগে নিয়মিত পিল খাওয়াত শাহানাকে। তাই এতবার শারীর সংযোগ হওয়া সত্ত্বেও শাহানাকে অবাঞ্ছিত মাতৃত্বের অভিশাপ বহন করতে হয়নি। পরবর্তীতে সাকিব উধাও হয়ে যায়।
সাকিবের শোকে শাহানা পাগল হয়ে যায়।
এটি কোন কল্প কাহিনী নয়, বরং এটি একটি বাস্তব উদাহারণ। এভাবে সাকিব নামক পশুরা শাহানা নামক নিরীহ মেয়ে/ছাত্রীদের সাথে মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করে তাদের সর্বস্ব কেড়ে নিয়ে উধাও হয়। প্রযুক্তির উৎকর্ষতার কারণে মোবাইল ও ইন্টারেনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজতর কারণে ছেলেরা মিথ্যা প্রেমের অভিনয় করে মেয়েদের সর্বস্ব নি:শেষ করে দিচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে টাকা পয়সা নিয়ে মেয়েটিকে পাচারকারীর হাতে তুলে দেয় অথবা বেশ্যাখানায় বিক্রি করে দেয়।
৯. লিভটুগেদার ঃ- বিয়ে না করে একত্রে বসবাস মানে লিভটুগেদারও এক ধরণের যৌন সন্ত্রাস। বিয়ে ছাড়া দাম্পত্য সম্পর্ক তৈরি করারা ক্ষেত্রে আগ্রহ বাড়ছে বর্তমান তরুণ প্রজন্মের মধ্যে। এরকম জুটির মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়ী,শিল্পপতি, চাকরীজীবি, ছাত্র-শিক্ষক,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব্যসহ নানা ধরণের মানুষ। বিয়ে না করেও তারা বাড়ি বা ফ্যাট ভাড়া নিচ্ছ স্বামী স্ত্রী পরিচয়ে। কেবল অবিবাহিত নারী পুরুষরা লিভটুগেদার করছে তা নয়,বিবাহিত নারী পুরুষরা স্ত্রী স্বামী সন্ত্রান থাকার পরও এ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন।
কেন এ ঘূণ্য জীবনে পর্দাপন কারণ হিসাবে তারা বলছেন একাধিক নারী পুরুষের জৈবিক চাহিদা পূরণ আর মানসিক শান্তি। ইদানিং ছাত্র ছাত্রীদের মধ্যেও এ মারাত্মক হারে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অনেকে ধর্মান্তরিত না হয়ে বিয়েতে সামাজিক বাধাঁর কারণে লিভটুগেদার করছেন। বর্তমানে ফেসবুক ইন্টানেট আর মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরিচয়ের ক্ষেত্রেই তা বেশি হচ্ছে। পরে প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ার পর হত্যা বা আত্মহত্যার মতো ঘটনাও বাড়ছে।
অনেকে সামাজিক বিধি নিষেধ বয়স আর বিয়ের করতে যে অধিক অর্থকড়ি প্রয়োজন তা মেটাতে না পেরে লিভটুগেদারে জড়িয়ে পড়ছেন। অনেকেই পারিবারিক অশান্তির কারণে শান্তির প্রত্যাশাই এ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ছেন। আবার অনেকে পারিবারিক সম্পর্কের বাইরে গিয়েও এ লিভটুগেদারে জড়িয়ে পড়ছেন। উচ্চাকাঙ্খা বেশি এমন মেয়েরাই লিভটুগেদারের প্রতি বেশি আকৃষ্ট। আর পুরুষেরা ঝামেলা এড়ানো মানসিক ও জৈবিক শান্তির জন্য ঝামেলাবিহীন সঙ্গী খুঁজে নেই আর এক্ষেত্রে লিভটুগেদারই উত্তম।
সমাজে লিভটুগেদার যেমন বাড়ছে সেভাবে লিভটুগেদারের সাথে পাল্লা দিয়ে ব্ল্যাকমেইলে অপতৎপরতাও বাড়ছে। ফলে বাধ্য হয়ে অনেক তরুণী আত্মহরনেন পথ বেছে নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ সম্পর্কে বলেন, নারী পুরুষের সম্মতিতে তারা লিভটুগেদার মতো সম্পর্কে লিপ্ত হচ্ছে। এতে কারো উপর কোন চাপ থাকে না। তাদের যতদিন ভালো লাগলো তারা এক সঙ্গে থাকলো আর ভালো না লাগলে আলাদা হয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, লিভটুগেদার সমাজে অনেক বেড়ে গেছে। আগামীতে আরো বাড়বে। ১৫-২০ বছর পরে এটি এমন পর্যায়ে যাবে এটা বিয়ে নামক সম্পর্কে ব্যাপক ধাক্কা দিবে। এখন মানুষ কোন ঝামেলা এড়াতে চায় না। সাংসারিক জীবনে আবদ্ধ হয়ে নিজের ক্যারিয়ারও নষ্ট করতে চায় না।
সেই সঙ্গে তারা চায় জীবনটাকে উপভোগ করতে। এজন্যই তারা বিয়ে করতে চাইছে না। তারা লিভটুগেদার করছে। অনেকে বিয়ের নাম দিয়ে লিভটুগেদারে জড়িয়ে মেয়েদের জীবনের সবকিছু কেড়ে নিচ্ছে। লিভটুগেদারের কারণে ভূলবুঝাবুঝি, আত্মহনন,খুন সহ সামাজিক নানা অপরাধের জন্ম নিচ্ছে।
বিশেষ করে লিভটুগেদারে আসক্তরা পরবর্তীতে বিয়ের আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
১০. ভিডিও ব্ল্যাকমেইল ঃ- ভিডিও ব্ল্যাকমেইল এক ধরণের মারাত্মক যৌন সন্ত্রাস। মিথ্যা প্রেমের নামে মেয়েদের পঠিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে সেগুলোর ভিডিও ধারণ করে বাজারে সিডি করে বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছে এক শ্রেণীর নষ্ট যুব সমাজ। কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ও এক শ্রেণীর ছাত্র সহপাঠী ছাত্রীদের প্রেমের নাম দিয়ে কোন হোটেল বাসা বাড়িতে নিয়ে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে সেগুলোর ভিডিও চিত্র ধারণ করে ইন্টারনেটে বা বাজারে সিড়ি আকারে ছাড়া হচ্ছে। অনেকে এ ঘটনাগুলোকে চাঁদাবাজীর মাধ্।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।