নাফ নদীতে বোটে করে শুভলং যাচ্ছি , অদ্ভুদ সুন্দর প্রকৃতি , কেমন যেনো ছায়া ঘেরা মায়াবী পরিবেশ। সবার মুখে শুনি নাফ নদী ধরে ৬/৭ ঘন্টা গেলে একটা বাক ঘুরার পরমুহুর্তে সামনে তাকালেই নাকি স্বর্গ দেখা যায় । প্রকৃতি তার প্রসাধনীর সর্বোচ্চ ব্যবহার নাকি ঐ বাকের শেষেই করেছে। কয়েকবার আসছি কিন্তু কোনোবারই যাওয়া হয় নাই , আজকে যেভাবেই হোক যাব বলেই বেরিয়েছি। শরীরটা একটু বাকিয়ে নদীর বুকে ঝুকে হাত বাড়িয়ে পানি ছুয়ে দেখছিলাম , পানির ছিটা আমার মুখে, আমার পায় , আমার সারা গায়।
ভাবলাম সামনে গিয়ে পানিতে পা ডুবিয়ে বসি। সামনে যাবার জন্য যেই পা বাড়িয়েছি , সাথেই সাথেই দম বন্ধ হয়ে যাবার মত ঘটনা , আমি আমার বিছানায় , বাইরে তুমুল বৃষ্টি , জানালা খোলা , বৃষ্টির তোপ এত বেশি যে আমার পা পুরোপুরি ভিজে গেছে। মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেলো শুভলংয়ের শেষটা আজকেও দেখা হলো না। ঘড়িতে তখন ৫:৪৫, জানি আর ঘুম আসবে না শুভলংয়ের দু:খে। বিছানা ছেড়ে বারান্দায় গেলাম, বারান্দায় গিয়ে তো পুরাই মাথা নষ্ট ।
আমার বাসার ঠিক সামনের অংশে প্রচুর গাছপালাবেষ্টিত অনেকখানি খোলা মাঠ , একটা ছোট্ট পুকুর আছে। অদ্ভুদ সুন্দর চারপাশ , মায়াবী ছায়াঘেরা , মনে হচ্ছে সারারাত গাছগুলোতে কেউ রং করেছে , কোমল সবুজ আর পুকুরে যেভাবে বৃষ্টির তীর পড়ছে দেখে মনে হচ্ছে সারা পুকুর জুড়ে বাচ্চারা দাপাদাপি করছে। ধূলাবালি , গরম , জ্যাম আর ইট পাথরের বস্তিতে যেন আমার এক টুকরো মুনশিগন্জ। এমন একটা সকালেই আমার সবসময় ছোটবেলার মুনশিগন্জের কথা মনে পড়ে যায় । বৃষ্টি বাড়ছে , বাড়ছে সকাল , সাথে বাড়ছে আমার রক্তে কাঁপন , এমন বৃষ্টিতে ফুটবল না খেলতে পারার বেদনা পৃথিবীর কাউকে বুঝানো যাবে না যারা তুমুল বৃ্ষ্টিতে ভিজে ফুটবল না খেলেছে।
ওহ বৃষ্টি , ওহ ফুটবল , ওহ সবুজ মাঠ , ওহ ভরা পুকুর , ওহ আমার ছোট্টবেলার মুনশিগন্জ ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।