ব্লগার না পাঠক হওয়ার চেষ্টায় আছি সবাইকে বাসী গরু মোবারক থুক্কু ঈদ মোবারক জানিয়ে ইশটারট করতে যাচ্ছি ঈদের আগে এবং পরে ঘটে যাওয়া কিঞ্চিত অথবা পূর্ণ লুলীয় ঘটনাবলী। কিছু ভূমিকা লেখা দরকার মনে করেছিলাম। কিন্তু হঠাত আমাদের ইশকুলের এক শিক্ষকের কথা মনে পড়ে গেল যিনি বলেছিলেন যাদের ভূমিকা অতি সুন্দর হয় তাদের বর্ণনা হয় অতি ফালতু! কাজেই কোন ভূমিকায় না গিয়ে সরাসরি ঘটনায় চলে যাচ্ছি। উল্লেখ্য, আমার ভূমিকা এবং বর্ণনা উভয়ই ফালতু! ভাবছি দেখা হলে স্যারকে এ ব্যাপারে কিছু জিজ্ঞাসা করব।
লুল ঘটনা একঃ ঈদের বেশ কিছুদিন আগের ঘটনা।
নীলক্ষেত গিয়েছি বই কিনতে। হঠাত এক বড় আপুকে ফোন দিলাম। আপু আমার দুই বছরের বড়। তিনি পূর্ণাঙ্গ ডাক্তার হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। ঘটনা চক্রে আপুও ফ্রেন্ডদের সাথে টিএসসি এলাকায় আড্ডা মারছিলেন।
তো আপুর সাথে টিএসসিতে দেখা করলাম। এদিকে তার বন্ধু নীলক্ষেতে বই কিনতে গেল। আমি আর আপু ধুমাইয়া আড্ডা দেওয়া শুরু করলাম। ভার্সিটি বন্ধ এবং পুজা চলছিল দেখে সম্ভবত কাপলদের আনাগোনা অতিশয় কম ছিল। তাই রাস্তার লুল ভাইয়ারা হা করে আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিল।
এতে আমি কিঞ্চিত মজাই পাচ্ছিলাম। আপুও ঘটনা দেখে হাসছিল। এই পর্যন্ত কোন সমস্যা ছিল না! সমস্যা শুরু হল রাত সাড়ে আট ঘটিকায়! আমি প্রস্থানের জন্য উদ্যত হতেই আপু তার বন্ধুকে ফোন দিল। বন্ধু তাকে ফেলেই বাসায় চলে গেছে! আমি পড়লাম বিপদে! আপুর বাসা পুরান ঢাকায়। অতঃপর তাকে বাসায় পৌছানোর জন্য রিকশায় উঠলাম।
এদিকে রিকশায় এগিয়ে চলছে আর আপুর খোলা চুল আসমানে উড়ছে! রাস্তার আশেপাশের লুল ভাইয়ারা হা করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। এদিকে রিকশা পুরান ঢাকায় উনাদের বাসার কাছে চলে আসল। হঠাত দেখি আপু হাসতে হাসতে পড়ে যাচ্ছে। ঘটনা কি জানার জন্য তাকে জিজ্ঞাসা করতেই অনেক কষ্টে সে হাসি থামিয়ে বলল, “ওই দেখ, ওই বুড়া বেটা কেমনে তাকাইয়া আছে!” বলেই আবার হাসা শুরু করল। আমি পাশে তাকিয়ে দেখি এক আঙ্কেল হা করে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে! এমনে তাকিয়ে থাকার কারণ আমি নিজেও বুঝলাম না! আঙ্কেলের এরকম তাকানো দেখে আমি নিজেও উম্মাদ হাসি হাসা শুরু করলাম।
আমাদের উভয়ের এই হাসি দেখে রাস্তায় দাঁড়ানো এক বড় ভাই কমেন্ট করলেন, “হায়রে প্রেম, হায়রে ভালবাসা!”
লুল ঘটনা ২: এই ঘটনা প্রথম ঘটনা ঘটার পরদিনই ঘটল। ফ্রেন্ডরা মিলে পুজা দেখতে গেলাম। চারদিকে অত্যন্ত সুন্দর সুন্দর হিন্দু রমনী দেখলাম আর মনে মনে আফসোস করতে লাগলাম ইশশ, কেন যে হিন্দু মেয়েরা এত্ত সুন্দর হয়! এদিকে আমরা দাঁড়িয়ে ছিলাম প্রবেশদ্বারে। কিন্তু অচিরেই রমণীরা ঠেলতে ঠেলতে প্রতিমার সামনে নিয়ে এল। কিছু পরে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই এক মেয়ে আমাকে ডেকে বলল, ভাইয়া হাতের মালাটা একটু ঠিক করে দিবেন।
এটা প্রায় খুলে গেছে! আমি তার চাঁদ মুখের দিকে তাকিয়ে ক্ষণকাল চুপ ছিলাম। অতঃপর মালাটা ঠিক করে দিলাম। মালা ঠিক করার সময় মুখ থেকে আচমকা বেড়িয়ে এল তপুর গান, “হাওয়াতে এল চুল মুখে এসে পড়ে; যদি না থাকি তা কে সড়াবে!” এদিকে মালা ঠিক করার পর উনি অতিশয় মিষ্টি করে একটা ধন্যবাদ দিল এবং বলল, আপনার গানের গলা অনেক ভাল। বলেই চলে গেল! পুজা থেকে বাসায় আসার পরও এমনকি এখনও আমার কানে কথাগুলো রেকর্ড প্লেয়ারের মত বাজছে!
লুল ঘটনা ৩: গতকালকের ঘটনা। গ্রামের বাড়িতে ঈদ করছিলাম।
তো গতকালকে ঢাকা থেকে আমার এক বোন আসল। ও আমাদের সমবয়সী। চরম মজা করছিলাম। বিকালে ঢাকায় আসার পূর্বে শেষবারের মত গ্রাম পরিদর্শনে বের হলাম। এদিকে হাঁটতে হাঁটতে সিগারেট টানছিলাম।
গ্রামের মেঠো পথে কয়েকটা বাচ্চা ছেলে দৌড়াদৌড়ি করছিল। এদিকে আমার ওই বোন সিগারেটের ধোঁয়ায় ক্লান্ত হয়ে বলছিল, আর কত টানবি! আমি তাকে থামিয়ে বললাম, তুই টাইনা দেখ। এ দিকে পাশের এক পিচ্চি এ কথা শুনে আমাদের দিকে হা করে তাকিয়ে ছিল। এদিকে পিচ্চির এই তাকানো দেখে ঐ পিচ্চিকে পুরাই চমকে দিতে আমার বোনটা ফাজলামি করে হাতে সিগারেট নিল। আর সাথে সাথে অই পিচ্চি চিল্লাতে লাগল, ঐ ছেড়ি বিড়ি খায়! ঘটনা চক্রে ১০-১২ টা বাচ্চা ছেলে-মেয়ে এক দল হয়ে গেল এবং চিল্লায়ে চিল্লায়ে বলতে লাগল, “ঐ ছেড়ি তুই বিড়ি খাস?” আমি তো হাসতে হাসতে শেষ! নানুবাড়িতে আসার আগ পর্যন্ত পিচ্চি গুলোর চিল্লানিতে কান পুরা ঝালাপালা হয়ে গিয়েছিল।
আরও বেশ কিছু লুলীয় ঘটনা ঘটেছে! হয়ত আরেক পর্বে শেয়ার করব।
পুনশ্চঃ এই প্রথম কোন রম্য চলিত ভাষায় লেখলাম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।