আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

~~~ বাংলাদেশের পারমাণবিক প্রযুক্তি এবং অন্তত একটা পারমাণবিক অস্ত্র থাকা খুব প্রয়োজন ~~~

কলম চালাই ,এইগুলো লেখার পর্যায়ে পরে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে :) ব্লগের বয়স বছরের উপরে দেখালেও নিয়মিত লিখছি ১৭ আগস্ট ২০১২ থেকে :) বাংলাদেশের পারমাণবিক প্রযুক্তি এবং অন্তত একটা পারমাণবিক অস্ত্র থাকা খুব প্রয়োজন । কথায় আছে , শক্তের ভক্ত নরমের যম । প্রবাদবাক্যগুলি একদিনের সৃষ্টি নয় । এগুলো শাশ্বত সত্য । *** পারমাণবিক প্রযুক্তি থাকায় এবং না থাকায় সাম্প্রতিক সুফল ও কুফল ভোগকারী দেশগুলিঃ তালেবান ধুয়ো তুলে ( ব্যাক্তিগতভাবে ঐ তালেবানদের সমর্থন করি না ) আফগানিস্থান আক্রমণ করে একরকম দখলই করে রেখেছে আমেরিকা ।

ইরাকে অমুক আছে তমুক আছে , এই ধুয়ো তুলে ইরাকও একরকম দখল করে রেখেছে ওরা । সঙ্গী সাথী আছে আরও কিছু দেশ । উদ্দেশ্য যে দুইটা ছিল তা আমারা সবাই ই জানি – তেল ও পপি ( হেরোইন ) যে কারনে আফগানিস্থান আক্রমণের শিকার , সেই লাদেনকে পাওয়া গেল পাকিস্থানে । হাজার অনিয়মের পাকিস্থানের ( পারমাণবিক শক্তিতে ৭ম স্থানে , অস্ত্রের সংখ্যা ৯০ থেকে ১১০ ) উপরে এখনও কোন মাতুব্বরি করতে যায় নি আমেরিকা । কারণ ওরা জানে , অন্তত ওদের ( আমেরিকার ) বড় ধরনের কোন ক্ষতি করতে না পারলেও , একটা পারমাণবিক বোমা ফাটিয়ে ঐ এলাকায় একটা নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে পারে পাকিস্থান ।

আর সেটা যে ভারতেই পরবে , নিঃসন্দেহ । ভারতও (পারমাণবিক শক্তিতে ৬ষ্ঠ স্থানে , অস্ত্রের সংখ্যা ৮০ থেকে ১০০ ) পাল্টা আক্রমণ করবে । অপর দিকে ভারতের সাথে উত্তরে হিমালয় অঞ্চল নিয়ে বিরোধের সুত্র ধরে পাকিস্থানের নাম ভাঙিয়ে ভারত দুই একটা চীনেও ফেলতে পারে । মোদ্দা কথা , বিশাল বড় একটা গ্যাঞ্জাম হয়ে যাবে । আর সব দোষ পরবে আমেরিকার ঘাড়ে ।

আমেরিকা তা ভালো করেই জানে । তাইতো পাকিস্থানে তালেবান , লাদেন ইত্যাদি ছুতো থাকা সত্ত্বেও আফগানিস্থান কিংবা ইরাকের মত পরিস্থিতির উদ্ভব হচ্ছে না । আজকাল সামরিক স্যাটেলাইটগুলো এতোটাই শক্তিশালী হয়েছে যে , ভূমিতে কিংবা ভূমির গভীরের রেডিয়েশন আর ফুয়েলিং এর ব্যাপারগুলো খুব সুস্পষ্ট ভাবেই ধরতে পারে । ইরাকের ব্যাপারে আমেরিকার শেষমেশ স্বীকারোক্তি ছিল যে তারা নাকি ভুল তথ্য পেয়েছিল !! আপনি কি আসলেই বিশ্বাস করেন যে , ওদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর এতো বড় আস্পর্ধা যে নিজেদের প্রেসিডেন্টকে ভুল তথ্য দিবে ? আমি বিশ্বাস করি না । তাই যদি হয়ে থাকে , এতো বড় একটা ভুলের শাস্তি তাদের কেন দেওয়া হল না ? আর প্রেসিডেন্ট কি এর দায়ভার নিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন ? না !!! নাটক যে কি হয়েছে , তা আপনারাই বলেন এখন ।

ইসরাইল খুব হম্বি তম্বি করছে ইরানের ব্যাপারে । একমাত্র আমেরিকা ওদেরকে কিছুটা আটকে রেখেছে বলতে গেলে । কারণ , ইরানে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যাপারে নিশ্চয়তা না থাকলেও পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট রয়েছে । তাই স্যাটেলাইট রেডিয়েশন চেক করার মাধ্যমেও পুরোটা নিশ্চিত নয় আমেরিকা । কিন্তু তারা লেগে আছে ।

ইরানের এখনও টিকে থাকার রহস্য এখানেই । উত্তর কোরিয়া , বেশ কয়েক বছর ধরে বিশ্বের এলিট (!) এবং সুশীল (!) দেশগুলো ( বিশেষকরে চীন , আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়া ) উত্তর কোরিয়াকে হ্যান করবে ত্যান করবে , বলে কতই না লম্ফ ঝম্ফ করছিল । অক্টোবরের ৯ তারিখ , ২০০৬ পারমাণবিক অস্ত্রের সফল পরীক্ষা চালায় ওরা । জানান দিল ওদের শক্তি । তারপর ? কি হল ? সবাই এখন তাদের সাথে আলোচনায় বসতে চায় ।

ঝাড়ি দেওয়া বন্ধ হয়ে গেল ! *** আমাদের কি সামর্থ্য আছে ? একটা সাধারণ ২০ কিলোটন ফিশন অস্ত্র তৈরি করতে ৫ কেজি হাইলি এনরিচ্‌ড ইউরেনিয়াম ২৩৫ / প্লুটোনিয়াম লাগে । আর লাগে বেরিলিয়াম টাংস্টেন / ডিপ্লিটেড ইউরেনিয়াম টেম্পার কিংবা রিফ্লেক্টরের জন্য এইচ এম এক্স এবং সি – ৪ এক্সপ্লোসিভ । এবং একটি সুপার কম্পিউটার ( টেন ফার্স্ট জেনারেশন পি এস থ্রি ) হলেই চলে । আধুনিক টেলার উলাম ডিজাইন যদি না করা যায় , তাহলে করা যেতে পারে পুরাতন স্টাইলে গান ( জি ইউ এন ) ডিজাইন । এতে করে প্রায় ৪০ কেজি ইউরেনিয়াম / প্লুটোনিয়াম লাগবে ।

আর তার পুরো সাইজ হবে একটা স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেলের প্রায় অর্ধেকের সমান ! প্রচুর ওজনও হবে । এবং এটাকে আকাশে উড়ানো প্রায় দুঃসাধ্য । বিমান থেকে ডিপ্লোয় করতে হয় এগুলো । পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে সবচে’ বেশি খরচ হয় ফুয়েলে । ভালো ফুয়েল সোর্স থাকলে ৫০ মিলিয়ন ডলারে হয়ে যাবে ( ৪০৫ কোটি টাকা ) আর তা না হলে অবকাঠামো , ফুয়েলিং , প্রোসেসিং এ প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার ( ৮১১৯ কোটি টাকা ) খরচ হয়ে যাবে ।

রিসোর্স ভালো থাকলে ছোটখাটো একটা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরিতে ৩ সপ্তাহ সময় লাগে ( যেমন জার্মানি ) আর তা না হলে কয়েক বছর লেগে যায় । আর একটা হলে , অনেক হবে । প্রযুক্তি পাওয়াটাই বড় কথা । সেই সাথে পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্টের থেকে প্রাপ্ত বিদ্যুৎ শক্তি দেশে বিদ্যুতের অভিশাপ থেকে মুক্ত ও করবে । আমাদের যেহেতু তেল কিংবা কয়লার সেরকম মজুদ নেই ( একমাত্র গ্যাস ছাড়া , তাও খুব বেশি নয় ) সেহেতু আমাদেরকে দীর্ঘ মেয়াদী এবং বিকল্প শক্তির উৎস খুঁজে বের করতেই হবে , পারমাণবিক প্রযুক্তি তার মধ্যে অন্যতম ।

যে দেশে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতি হয় , ব্যাংক লোপাট হয় আর মন্ত্রীরা বলেন – চার হাজার কোটি টাকা কিছুই না ! আমি মনে করি ৮১১৯ কোটি টাকা খরচ করে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় প্রতিরক্ষা শক্তিশালী করার সামর্থ্য সে দেশের আছে । *** প্রয়োজনীয়তা কতোটুকু ? আমি খুব ভালো করেই জানি আমাদের অগণিত সমস্যা , ঘাটতি , চাহিদা । দেশের আনাচে কানাচে অনেক অনিয়ম – বিশৃঙ্খলা । অনেক ইস্যুতেই আমাদের নজর দেওয়া প্রয়োজন । তুলনামূলকভাবে আমরা অনেক গরীব দেশ ।

কিন্তু সেই দেশেই আছে বিশ্বের অন্যতম ব্যায়বহুল পার্লামেন্ট ভবন , হচ্ছে বিশ্বের ৪র্থ বৃহত্তম শপিং সেন্টার ! কোন অজুহাত দেখিয়ে এগুলো কিন্তু থেমে থাকছে না । আমি বলছি না এগুলো খারাপ । এই উদ্দেশ্যগুলোকেও সমর্থন দেই । এগুলো দেশের ইমেজ বাড়ায় । কথা হল – একটা কাজ করতে গিয়ে বাকি সব কাজ বন্ধ করে রাখলে তো আর চলবে না ! আমাদের রিসোর্স আর সম্পদের সঠিক ব্যবহার হলে আমরা অনেক দ্রুতই অনেক সমস্যার সমাধান করতে পারি ।

কিন্তু দুর্নীতি আর সুদূরপ্রসারী চিন্তার অভাবে তা হচ্ছে না । রাষ্ট্র একটা বৃহৎ সংসারের মত । এখানে নিত্য দিনের চাহিদার পাশাপাশি আপনাকে আপনার ঘরও মজবুত করতে হবে । আর এই বিশ্বে তা করতে হলে এখন আর ট্যাঙ্ক – বিমানে চলবে না । পারমাণবিক প্রযুক্তি লাগবে ।

আপনার আশেপাশের ঘরবাড়ি যদি পাকা দালান হয় , আর আপনার যদি টিনের – কাঠের ঘর হয় , কিছু থাকুক আর না থাকুক , ডাকাত কিন্তু ডাকাতির জন্য আপনার ঘরটিই সহজ পথটা হিসেবে বেছে নিবে । যদি বলেন – এখনও সময় আসে নি , এদিকে যাবার ! তাহলে বলব – আর কতদিন লাগবে ? ৪৮ ঘণ্টা কবে শেষ হয় ? ডাকাত পরার পরে ঘরের বেড়া ঠিক করবেন ? ভারত স্বাধীনতা পায় ১৯৪৭ সালে । পারমাণবিক প্রজেক্ট শুরু করে ১৯৬৭ সাল থেকে , ঠিক ২০ বছরের ব্যাবধানে । প্রথম সফল পরীক্ষা চালায় ১৯৭৪ সালে । পাকিস্থান ও একই সময়ে স্বাধীনতা পায় ।

তারা পারমাণবিক প্রোগ্রাম শুরু করে ১৯৭২ সালে । ঠিক ২৫ বছরের ব্যাবধানে । সফল পরীক্ষা চালায় ১৯৯৮ সালে । আমরা স্বাধীন হয়েছি আজকে কতো বছর হল ? প্রায় ৪১ বছর ! কি করলাম এতদিনে ? আগারগাওয়ে বাংলাদেশ আণবিক কমিশনের প্রচেষ্টা যে একদম নেই তা নয় । তবে তা যেন অনেকটা ইঞ্জিনবিহীন হাজার টনের জাহাজকে ফু দিয়ে চালানোর চেষ্টা করার মতনই ।

Bangladesh Atomic Energy Commission যাত্রা শুরু করে ১৯৭৩ সালে , প্রয়োজনীয়তার কথা মাথায় রেখেই সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিলো , আজ প্রায় ৩৯ বছর পরে তারা এখনও প্লান / আলোচনা / উদ্যোগ এইসবে আছেন । বিষয়টা কি যথেষ্ট হতাশাজনক নয় ? *** ফলাফলঃ @ প্রথম উপকার হবে , বন্ধুপ্রতীম (!!) দেশ ভারত বর্ডার কিলিং বন্ধ করবে , ইচ্ছামত নদীতে বাঁধ দিবে না , আমাদের পন্যের পেটেন্ট নিয়ে জালিয়াতি করবে না , কাউকে বিনা কারনে আট বছর আটকে রেখে ছেড়ে দেবে আর নুন্যতম ক্ষমাও চাইবে না – এগুলো হবে না । বাঁচবে আমাদের নদীগুলো , বাঁচবে পণ্যগুলো , ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে প্রচণ্ড সূর্যলোকে নিজেরা মাথা তুলে দাড়াতে পারব । @ মায়ানমার রাখাইনরা মুসলমানদের গণহত্যা করার আগে সহস্রবার চিন্তা করবে এবং এইসব অন্যায় নির্যাতন বন্ধ করবে । সমুদ্রসীমা নিয়ে অনৈতিক ক্যাচাল করার স্পর্ধাও দেখাবে না ।

@ যাদেরই পারমাণবিক প্রযুক্তি আছে , তাদেরকে অন্য দেশগুলি সমীহের চোখে দেখে । সেই সমীহের সুবিধা আদায় করা যাবে অর্থ এবং বাণিজ্যতেও । *** শেষকথাঃ এধরনের একটা উদ্যোগের জন্য যে সাহস , নেতৃত্ব আর সুদূরপ্রসারী চিন্তা / বুদ্ধিমত্তা , মনোবল আর ইচ্ছা লাগে , আমার মনে হয় না , এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সেই ধরনের নেতৃত্ব কেউ দিচ্ছেন কিংবা দিয়ে আসছেন , স্বাধীনের পর থেকে । দেশের সামগ্রিক স্তিতিশীলতাও অনুকুলে নেই , যা এই ধরনের উদ্যোগে প্রথম শর্ত । আমি খুব সাধারণ মানুষ ।

খুব সাধারণভাবে বুঝে লিখছি । জ্ঞানীরা আমার অজ্ঞানতার কারনে ক্ষিপ্ত হয়ে নিজেদের অমূল্য সময় নষ্ট করবেন না , প্লীজ । নিজের দেশের উপরে ডিস্ক্রিমিনেশন দেখতে দেখতে আমি ক্লান্ত এটা কোন জঙ্গিবাদী পোস্ট নয় । কেউ আবার জঙ্গি ট্যাগ দিয়ে বসবেন না । এ ধরনের প্রোজেক্ট সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় গভীর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে থাকে ।

আর বানালেই মারতে হবে এমন কোন কথা বা উদ্দেশ্য কিন্তু নেই । এটা অনেকটা শো – আফ করার মত যে ‘’ আমিও পারি , আমার সাথে অকারনে , অনৈতিকভাবে লাগতে এসো না । ‘’ সুত্রঃ ইয়াহু আন্সার , উইকিপিডিয়া , ই নিউজ ।  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।