আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি এক অসহায় বোনের এক ভাই। একটি মৌলবাদী নীরব সন্ত্রাসী কে শায়েস্তা করতে অভিজ্ঞ কেউ সাহায্য করুন।

মানব সেবা, আর ভবিষ্যৎ মুখী জীবন গড়তে চাই। উগ্রপন্থী, গালাগাল করা মুখ দেখতে চাইনা। আবেগ আপনার মত আমার আছে, তাই আমার মত আপনিও নিয়ন্ত্রন করুন, না পারলে আমাকে ত্যাগ করুন। আমি নমনীয়, আপোষকামী, ঝামেলা মুক্ত সৃজনশীল মুসলমান হয়ে মরতে চাই। নারী বাদি কেউ আছেন ? আপনার পরামর্শ চাইছি।

মনটা এত খারাপ যে, ভাল করে লিখতেও পারছি না। আমার একমাত্র বড় বোন। আজ ৯ বছর যাবত এক মৌলবাদী বক ধার্মিক পরিবারে নির্মম মানসিক নির্যাতনের শিকার। নিজের অসহায় অবস্থানের কারনে সব অত্যাচার দাঁতে দাত চেপে সহ্য করছে। আর কোন ভাই বোন না থাকায় এই আপার সাথে ই আমার মা বাবা চাইতেও ভাল সম্পর্ক।

অনেক কিছুই মা বাবা, প্রেমিকা কিংবা বন্ধু কাউকেই বলতে পারিনা সব কিছু তার সাথে সব বলেছি। আর আমি তার বিপদের ভার সইতে না পারলেও শুনেছি। শুনি। কাঁদি। আর বলি খোদা, কার কপালে তুমি কি লিখলা।

চোখের সামনে কত নিচু যোগ্যতার, অসত মেয়েকেও কত ভাল ছেলের সাথে মিলিয়ে দাও। কত ভাল থাকে তারা। আর আমার এই নিস্পাপ , সাধা সিধে বোনের কপালে এমন বর্বর , বেঈমান , ভণ্ড রেখে ছিলে। নির্যাতনের পটভূমি । যার সাথে আপার বিয়ে হয় সে লেখা পড়া শেষ করে সরকারী প্রাইমারি স্কুলে শিক্ষকতা করে।

আপা ও চাকরি করে কিন্তু গতবার পেয়েছে। তো সেই হারামজাদা আমার আব্বুর এক প্রিয় এবং খুব ঘনিষ্ঠ ছাত্রের ছোট ভাই (যাকে আমরা বড় ভাই বলে ডাকি)। সে আজিজুল হক কলেজে সহযোগী অধ্যাপক। তার এক শ্যালীকার সাথে দুলা ভাই এর নাকি বিয়ের আগে প্রেম ভালবাসা লাম্পট্য ছিল যেটা বিয়ের অনেক পরে জেনেছি। কিন্তু বড়ভাই চান নি তার নষ্টা চরিত্রের শ্যালিকার সাথে ছোট ভাইয়ের বিয়ে হক।

শিক্ষকের একমাত্র মেয়ে, সরল সাধা সিধে, দেখতেও ভাল, পারিবারিক অবস্থাও চলার মত। এলাকায় সুনাম আছে । এমন একটি মেয়ের সাথে নষ্ট বিপথগামি ভাই কে বিয়ে দিলে সে হয়ত সুপথে ফিরে আসবে। চরম লোভী সে লোকটা ১০ বছর আগে বিয়েতে নাকি যৌতুক হিসেবে ১০০ সিসি মোটরসাইকেল চেয়েছিল। যেটা কিন্তু বড়ভাই খুব ভাল করে জানত এটা ঘুণাক্ষরে জানলে আমরা বিয়ে দিতাম না।

তাই সে কৌশলে ছোট ভাইকে বলে " এটা তো এমনি দিবে, স্যারের একটাই জামাই হবে তুমি, সব ই তো তোমাদের। যদি স্যার না দেয় তাহলে আমি তোমাকে কিনে দেব। । " চার ভাই ছেলে, ২ বড় দুইটা প্রফেসর, তার পরেরতা হাইস্কুল শিক্ষক, বাবা এলাকার বিখ্যাত মৌলভী। এক নামে সারা থানা এমন কি জেলার অনেকেই চিনে।

ছোট হলেও সরকারী চাকরি, আয়ের একটা নিশ্চয়তা আছে। এইসব দেখে আমার সরল মনের আব্বু তার প্রিয় ছাত্রের প্রস্তাব এ এমন ই রাজি হলেন যে , আমি বিয়ের আগে দুলাভাই কে একবার দেখতেও পারিনি। তো এই খাতা কলমের সুন্দর প্রোফাইলের লোকটির কুতসিত চেহারা কিছুদিন পরেই আপা জানতে পারে। ১>> বিয়ের অনেক পরেও তার বড় ভাই এর শ্যালীর সাথে সম্পরক আছে। আমার কিনে দেয়া ফোনে সে পরকিয়া করে, সেই ফোনে আপার হাত দেয়া নিষেধ।

২>> আমরা কিছু জানতাম না, হঠাত করে আপার সাথে চরম খারাপ ব্যাবহারের মাঝে বলে , বিয়ে করে কিছু পাই নি সে। কিন্তু মজার ব্যপার এই যে বিয়েতে আমরা সাড়ে ছয় ভরি স্বর্ণালংকার আমরা দিয়েছি আপাকে, কিন্তু দুলাভাই সেই ৮/১০ আনা বাদ দিয়ে সব বিক্রি করে জমি কিনেছে । ৩ >> আপার শাশুড়ি যোগ দেয় এবার, কিছু পাই নি। অথচ "আব্বা কিছু টাকা দরকার, ধার দেন" এই বলে দফায় দফায় কমপক্ষে লাখ টাকার মত নিয়েছে, এমন কি আব্বুর কাছে না থাকার কারনে আমার সামান্য আয়ের কিছু টাকাও দিয়েছি আপার কষ্ট হবে ভেবে। ৪ >> একটা ছেলে হয়েছে ৬ বছর হল।

এই ছেলে ৯৫% জামা কাপড়, খেলনা, শখের সব চাওয়া আমি, আব্বু এমন কি আমার বিয়ের আগেই আমার হবু স্ত্রী রাস্না পর্যন্ত দিয়েছি। ৫>> দিন যায় আস্তে আস্তে আপার উপর চরম বাজে ব্যবহার চলে। শাশুড়ি, আর দুলাভাই মিলে আপাকে মানসিক চরম নির্যাতনের শিকারে পরিনত করে। ছোট ছেলে হওয়ার কারনে শাশুড়ির সাথে দুলাভাইয়ের ভাল সম্পর্ক। আপার চাকরি পাবার আগে দুলাভাই স্কুলে গেলেই শুরু হয় শাশুড়ির হাজার কথা।

আমার মা বাবা আমাদের ভীষণ আদরে বড় করেছে। কোনদিন গ্লাসে পানি ঢেলে খাই নি আমরা। আমাদের অ্যায় কম হলেও সুখের অভাব হয় নি। সব ই জানত দুলাভাই ইয়ের বড় ভাই। কিন্তু আজ সেই লোকটির ক্ষমা প্রার্থনা " আজিজা, আমার ভুল হয়ে গেছে বোন, ক্ষমা করে দিও, আমি ভেবে ছিলাম, একটা ভাল মেয়ে পেলে এই জানোয়ারটা ভাল হবে ;কিন্তু এটা আমার চরম ভুল হয়ে গেছে।

" ৬>> এর পরে আপা গ্রামের লোকদের থেকে জানতে পারে আর ২/৩ মেয়ের সাথে তার খারাপ সম্পর্ক ছিল। এমন কি একবার শালিস ও নাকি হয়েছিল। কিন্তু সে নামাজ পড়ে। আপাকে ধর্মের গল্প শোনাই। আর আমাকে নিয়ে বাজে কথা বলে।

"তোর ভাই খারাপ, তোর ভাই প্রেম করে। তোর ভাই ইয়ের বান্ধবীর অভাব নাই, শ্বশুরের সব টাকা তোর ভাই নষ্ট করে দিবে। " ৭>> বিয়ের পর থেকে তাদের এমন খারাপ ব্যবহারের কারনে আপা কিছু চাইত না। আমাদের বাড়ি থেকে ৭০ কিলোমিটারের মত দূরে তাই আম্মা, আব্বুর সাথে সহজে দেখা হয় না। তাই ফোনে কথা বলতে হয়।

তার ২ টা ফোন আমি কিনে দিয়েছি। মোবাইলের খরচ পর্যন্ত আমি, আব্বু দেই। বিয়ের পরে হয়ত ২/১ টা কাপড়, স্যানডাল, ইত্যাদি কিনতে হয়েছে। সব কিছু আব্বু কিনে দেয়। চরম কৃপণ এই লোকটির এত জঘন্য ব্যবহার না দেখলে বিশ্বাস করা যাবে না।

১৭ মাস একটানা সে বেতন তোলে নি। প্রাইভেট পড়ায়ে, আর আমাদের দিয়ে চলে ব্যাংক এ টাকা জমা করে, ছেলে কিছু চাইলে বলে নানার থেকে নিও। ছেলেটি শিখে গেছে কোন কিছু চাইলে মামার কাছে বা নানার কাছে চাইতে হয়। আমার সামান্য আয়। কত যে ছোট হয়ে যায় যখন এই নিস্পাপ ছেলে টি বলে মামা, এবার জিয়া পার্কে নিয়ে যাবা।

আমার জন্য এটা, সেটা নিয়ে আসবেন। এটা খাব সেটা ইত্যাদি। ৭>> আমি সারা রাত জেগে জেগে কয় টা টাকা আয় করি, সেখানে থেকে এইসব করতে যে কষ্ট হয় সেটা আপা আমার ঠিক ই বোঝে। তাই আগে দুলাভাই কে বকা বকি করলে >> তোর বাপ কি করেছে এত দিন চাকরি করে, কয় লাখ টাকা ব্যাংকে আছে, আর দেখ আমি এ কয় বছর চাকরি করে জমি কিনছি। আর অনেক অশ্রাব্য কথা।

তাই আপা আর কিছু এখন বলে না। ৮>> গত কিছু দিন থেকে সে আরেকটা বিয়ে করতে চাচ্ছে। " তোকে বিয়ে করে আমি কিছু পাই নি, তুই অসুখ আলা, তোকে বিয়ে করে ভুল করেছি, বড় ভাই মিথ্যে কথা বলে বিয়ে দিয়েছে। তুই বাপের বাড়ি চলে যা। আমার বাড়ি থেকে বের হয়ে যা।

ছেলে রেখে, না হলে নিয়ে চলে যা, তোর বাপকে, মাকে এসে নিয়ে যা। এখনো আমার বিয়ের বয়স আছে। অযথা আমার জীবন নষ্ট করিস না। আমি চাইলে কালকেই বিয়ে করে আনতে পারি। অনেক বড় লোকের মেয়ে কে আমি বিয়ে করতে পারব।

কত জন ঘুরতেছে। " কিন্তু আপার মান সম্মানের জন্য বলেছে, তুমি শুধু তোমার বাড়িতে একটু থাকতে দিও, তোমার যা ইচ্ছে করো। আমি তোমার কাছে কিছু চাই না। শুধু একটু থাকতে দিও। আজ আব্বুকে ফোন দিয়ে বলেছে আপনার মেয়ে কে নিয়ে যান ।

এর পরে >> তোকে মেরে ফেললে তোর বাপ কিচ্ছু করতে পারবে না। তোকে বটি দিয়ে কুপিয়ে মারবো, তুই যাবি না, তোকে মাইরা তোর লাশ পাঠিয়ে দেব তোর বাপের কাছে। কি মনে করেছিস। আব্বু খুব দুর্বল মনের মানুষ, বয়স হয়েছে। অনেক কথা সইতে পারে না।

তাই আমরা অনেক কিছুই তাকে বলিনা । আপা তার সব কথা আমাকে বলে। আজকের এই হুমকি গুলো শুনে আমার পেপারে দেখা অনেক, পরকিয়া, নারী নির্যাতনের নির্মম ঘটনা মনে হয়ে আঁতকে উঠছি। কাল আপাকে চলে আস্তে বলেছি। আম্মা আর এক খালুকে পাঠাব ভাবছি।

কিন্তু এটা সাময়িক। আমি ভাবছি। যদি বিচ্ছেদ হয় তাহলে আমি এই ধর্মের টুপি মাথায় দেয়া হারামির বাচ্চা কে চরম পরিণতি ভোগ করাব। কিন্তু আমি পুলিশ, কেস ফেস এই গুলো বুঝিনা। যদি আপ্নারা কেউ আমাকে টেকনিক্যালি পরামর্শ দিতেন, উপকৃত হতাম।

আপার নতুন চাকরি, শ্বশুর বাড়ির কাছেই। তাই স্কুল করতে না পারলে হয়তা চাকরি এর সমস্যা হবে। কি করব কিছুই বুঝতেছিনা । এক বন্ধু আইন ও সালিস কেন্দ্রের সাহায্য নিতে বলল। এরা কি সাহায্য করবে সেটাও জানি না।

পরামর্শ দিবেন প্লিজ। আম্মা বলেন, আমার দুনিয়ার আশার জন্য সবচেয়ে বেশি যে চেয়েছে , সে আমার এই আপা। আল্লাহ্‌ সহায় হউ মালিক। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।