খবরে ধান্দাবাজি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অফিস। আজ অফিস থেকে বেরিয়েছি রাত ৯ টার দিকে। বসুন্ধরা গেট পাওয়ার আগেই দেখলাম বড় একটা জটলা। ভিতরে মুখ ঢুকিয়ে দেখি বিশাল একটা গরু বিক্রির চেষ্টা চলছে। দাম প্রায় ৫০,০০০ টাকা।
এটা ছাড়িয়ে এগিয়ে দেখি আরেকটা জটলা। ভিতরে বড় একটা ছাগল। দাম ৩০ হাজার টাকা। এসব জটলা পার হয়ে আরো সামনে গেলাম। বসুন্ধরার গেট পার হয়ে জোয়ার সাহারার দিকে মোড় নিলাম।
এবার আরেকটা জটলা। ফুচকার দোকানের মতো টং ঘর। আলো জ্বলছে। চারপাশে মানুষ দাঁড়িয়ে আছে। কিছুই বুঝতে পারছিনা।
লোকজনের পাশে দাঁড়িয়ে কিছুক্ষণ ভিতরে মুখ ঢোকানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। কি করি, কি করি। বুদ্ধি করে দোকানদারের পিছনে দাঁড়িয়ে ঘাড়ের পাশ দিয়ে দেখলাম, ছোট বড় নানা সাইজের ছুরি চকচক করছে। তখনই বুদ্ধিটা মাথায় এলো।
ইন্টারনেটে হেনো জিনিস নাই পাওয়া যায়না।
বই-বউ-বাড়ি-গাড়ি-শাড়ি-কাচাবাজারসহ সব। সামনে বছর কোরবানির ঈদের আগে গরু-ছাগল ও চাকুর দোকান দিমু। পরে ভেবে দেখলাম এই তিনটার কদর সারা বছরই আছে। গরু-ছাগল মানুষ সারা বছরই খায়। এছাড়া বিয়ে, জন্মদিন, থার্টিফাস্ট, ষোলোই ডিসেম্বর, একুশে ফেব্রুয়ারি, দুই ঈদে মাংস ছাড়া চলেই না।
যে হারে বুফে, অভিজাত রেস্টুরেন্ট বাড়ছে এদের পার্মানেন্ট কাস্টমার বানায়া নিলে আর চিন্তা কি!
তয় চাকুর ব্যবসা নিয়া দ্বিধায় পড়লাম। এইটাতো সারা বছর চলবো না। আমার এক বন্ধু যে কিনা ছাত্রজীবনে পার্টি করতো। সে অনেকদিন আগে বলেছিল ব্যবসার কথা। নতুন কোনো ব্যবসা করলে তাকে যেন সাথে রাখি।
তো এই সুযোগে দিলাম তারে ফোন। সে বললো, চিন্তা করিস না দোস্ত। চাকুর কদর দিনে দিনে বাড়তাছে। আমি এমন কোনো লিডার দেখি নাই, যার ঘরে দুই-চারটা চাকু নাই। বড় বড় লিডারগো ঘরে তো পিস্তলও থাকে।
তাদের চাকুর দরকার নাই। কিন্তু ছাতি নেতা, পাতি নেতা, পদধারী নেতা, পদছাড়া নেতা, উঠতি নেতা, পড়তি নেতা সবারই দুই-একটা চাকু ছাড়া চলেনা। ক্যাডার ও তাদের সহযোগীদের কাছে চাকু রাখা বাধ্যতামূলক। তুই শুরু কর। ব্যবসা কিভাবে হিট করতে হয় সেইটা আমি দেখুম।
তুই আমারে চাকু প্রজেক্টের ম্যানেজার বানায়া দিস। আর যত টাকা লাগে আমারে কইস। চাকুর ব্যবসা কিভাবে জনপ্রিয় করাইতে হয় সেইটা আমি দেখুম। প্রয়োজনে পাবলিকরে চাকুর ব্যবসা শিখামু। তাতেও যদি না হয়, আইন কইরা চাকু রাখা বাধ্যতামূলক কইরা দিমু।
তুই কুনু চিন্তা করিস না।
তাড়াতাড়ি ফোন রাখলাম। ওর কথা শুনে আমি ভয় পাইলাম। শেষে কিনা আমারেই একদিন চাকু মারে! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।