কিছু মানুষ ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিছু মানুষ স্বপ্নটা সত্যি করার জন্য ঘুম থেকে জেগে উঠে। জীবন আপনার কাছে সেভাবেই ধরা দিবে আপনি যেরকম থাকবেন। মূল গল্পটি কাল্পনিক, চরিত্র সমুহ কাল্পনিক
- আপনি বলতে চাচ্ছেন যে পুরা ব্যাপারটা যা ঘটেছে তা আপনি আগের থেকেই টিভিতে দেখেছেন?
-জ্বি। ঘটনা দেখিনি।
ঘটনাটা টিভি চ্যানেলে রাত দশটায় আসার কথা। আমি রাত আটটায় দেখেছি।
যার সাথে কথা বলছি তার নাম আব্দুর রহমান। এই লোকের কথা বার্তার মাথামন্ডু কিছুই বুঝতে পারছিনা। তিনি সুস্থ কোনো ব্যক্তি না এটা বুঝতে পারছি।
অতি ধুরন্ধর ব্যক্তি। ফেসবুকের সামান্য পরিচয়ে এর সাথে দেখা করতে যাওয়ার কোনো মানে হয়নায়। ভুলটা আমার। এমনিতে কাউকে আমি আমার ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে সরাই না। একে সরাতে হবে।
একে ব্লকই মারতে হবে।
শুনুন আব্দুর রহমান সাহেব। আপনি যে কি পরিমান অসম্ভব কথা বলছেন আপনি বুঝতে পারছেননা। হুমায়ূন আহমেদ স্যারের চরিত্র মিসির আলী সাহেবকে এই ধরনের কিছু শুনালে তিনি রহস্যভেদ করে ফেলতে পারতেন। আমার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা তা হবেনা।
ভাই আপনি অন্তত আমাকে বিশ্বাস করেন। আমি যা বলতেছি তা কোনভাবেই স্বাভাবিক না কিন্তু এটা আমার সাথে হইতেছে। আপনি আমার কথা বিশ্বাস না করলে মনে কষ্ট পাব।
আচ্ছা ঠিক আছে আপনার সাথে দেখা যখন করতে বসছি আপনার কথা শুনব। আর মনে কষ্ট পাইতে হবেনা।
বলেন আপনি কি বলতে চান।
গত বিশ্বকাপের সময়কার কথা। ২০১১ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে বাংলাদেশ ৫৮ রানে অল-আউট হওয়ার পর ইংল্যান্ডের সাথে চট্টগ্রামে খেলা। অনেক চেষ্টা করেও খেলার টিকিট পাইনাই।
বাসার টিভিটা হটাৎ নষ্ট হয়ে গেল। খেলা দেখার জন্য ছোট একটা টিভি কিনলাম। একদম ছোট। নতুন টিভি না। টিভি সাড়ানোর দোকানে পরিচিত কিছু লোক আছে।
তাদের কাছে অনেকদিন ধরে পরে থাকা একটা টিভি। রিমোট নাই। সব মিলায় চ্যানেল আটটা। আমি মনে করলাম খেলা দেখা ছাড়া আমার আলাদা কিছু করার নাই। হাতে বেশি টাকাও নাই।
কেনার আগে দোকানে চেক করে দিল সব ঠিক আছে। বাসায় এসেও ছাড়লাম। সব ঠিক আছে। আট্টা চ্যানেলেই বাংলা চ্যানেল সেট করলাম। খেলা দেখব বিটিভিতে।
ইংল্যান্ডের ব্যাটিং দেখলাম তারা করল ২২৫।
কথার মাঝখানে আব্দুর রহমান পানি খাওয়া শুরু করল। পানি খেয়ে কিছুক্ষন চুপ থেকে আবার কথা বলা শুরু করল।
বাংলাদেশের ব্যাটিং শুরু হতে যাবে টিভি আর চলেনা। কোন কারণ খুঁজে পেলামনা কিন্তু টিভি আর চলেনা।
খেলা দেখার জন্য মন আকুপাকু করতেছে। ফোন করে খবর নিলাম বাংলাদেশের অবস্থা মোটামুটি। তামিম সহ ৩ জন আউট কিন্তু সাকিব ইমরুল ভাল খেলছে। টিভি না চলাতে আবার ফোন করলাম স্কোর জানতে। হটাৎ টিভি চলা শুরু করল।
মাহমুদুল্লাহ চার মেরে জিতিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশকে। অবিশ্বাস্য ব্যাপার কিন্তু এটা খালি আমি জানি আর কেউ জানেনা। খুশিতে বন্ধুকে ফোন দিলাম বন্ধু বলে তখন নাকি মাত্র ইমরুল আউট।
মানে আপনি বলতে চাচ্ছেন আপনি খেলাটার ভবিশত টিভিতে আগেই দেখে ফেলেছেন?
জ্বি। তবে আমার বন্ধু বুঝতে পারেনি আমার কথা।
আমিও আর বুঝাতে যাইনাই।
আব্দুর রহমান সাহেবের কথা শুনলাম। এইসব কথা খালি শোনার জন্যই। ইন্টারেস্টিং ক্যারেক্টার।
আচ্ছা টিভি তার মানে ২-৩ ঘন্টা পরে থাকে?
থাকে।
মাঝে মাঝে ৬ ঘন্টাও থাকে।
হুম। সবসময় এমন হয়?
না তা হয়না। হওয়ার আগে টিভিটা বন্ধ হয়ে যায়। হটাৎ নিজের থেকেই স্টার্ট হয়।
আর কয়বার এটা আপনার সাথে হইছে?
আরও কয়েকবার হইছে। তারেক মাসুদ আর মিশুক মুনীর সাহেবের দুর্ঘটনা আমি আগের থেকে জানতাম।
আপনি তো তাইলে ওনাদের বাঁচাতে পারতেন! আপনি তা করেন নাই কেন?
কিভাবে করতাম? আমি তাদের চিনিনা। আমার ফেসবুকে আপনার মত এত ফ্রেন্ডও নাই যে স্ট্যাটাস দিব আর কোন না কোনভাবে এটা কেউ ছড়িয়ে দিবে। আর আপনি নিজেও কি পারতেন? আপনি দিলেও মানুষ আপনাকে পাগল ভাবত।
তার থেকেও বড় কথা আমি এটা বুঝতে পারিনাই। পরে বুঝেছি।
কিভাবে বুঝেছেন?
আসলে ২-৩ বা ৬ ঘন্টা না। কিছু কিছু ঘটনা আমি ১-২ দিন আগেই দেখি। এটা আমি ঠিক একদিন আগে টিভিতে দেখেছিলাম।
তারপর আমি চিন্তা করেছিলাম কিভাবে ওনাদের সাথে যোগাযোগ করব। কিন্তু কোন পথ পাইনি। এটিএন এর অফিসে গেছি তারা ঢুকতে দেয়নায়। আর কে আমার কথা বিশ্বাস করবে? এমনকি আপনিও এখনও করতেছেন না।
না আমি আসলেই করতেছিনা।
ভবিষ্যত জানার কোন পদ্ধতি থাকতে পারে না। আর আপনি যেটা বলতেছেন সেটা খুবই হাস্যকর। আর আপনার ঘটনা ব্যাখা করার জন্য মিসির আলী সাহেব লাগবেনা। আমার মত বেকুবও এর ব্যাখ্যা দিতে পারবে। আপনি মিথ্যা বলতেছেন।
ওটা হেলুসিনেশন না কি জানি বলে ঐসব ব্যাপারও না। হয় আপনি নিজে একটা বেকুব না হয় আমারে বিশাল বেকুব ভাইবা বইসা আছেন। এটা অবশ্য দোষের কিছুনা। অনেকেই আমাকে বেকুব ভাবে। আপনি একটু বেশিই ভাবলেন।
আপনি বেকুবও না খুব বুদ্ধিমানও না। বেকুব বুদ্ধিমানের প্রশ্ন এখানে না। আমি কিন্তু এখানে আপনি বেকুব না বুদ্ধিমান এটা বলতে আসিনাই বা এমন কোন প্রমাণ করতেও আসিনাই। এমনকি আমি আসতামও না এত কিছু বলতে।
তাহলে কি জন্য আসছেন তাহলে? আমি কোন রুপবতী তরুনী না।
যার সং পছন্দনীয় হওয়ার কথা।
আপনি জানেন কিনা জানিনা আমি আপনাকে বিশেষ পছন্দ করি। আপনার সাথে আগে কখনো দেখা হয়নায় তারপরেও করি। ফেসবুকে আপনার স্ট্যাটাসে বড় মজা পাই।
শুনে খুশি হলাম।
স্ট্যাটাসে বেশি কইরা লাইক দিবেন। বড় ভাল লাগে।
আপনার স্ট্যাটাসে লাইক দেই। আজকেরটাতে দেই নাই।
আজকেরটায় দেননাই কেন? ভাল হয়নায়?
আজকে সকালে ঘুম থেকে উঠার পর টিভিটা অটোমেটিক অন হয়ে যায়।
আমি বুঝতে পারি এইবার ভবিষ্যতের কিছু দেখা যাবে। কতক্ষন পরেরটা জানিনা কিন্তু দেখা যাবে। কিন্তু সেখানে লঞ্চডুবির খবর প্রচার করা হচ্ছে। ফেসবুকে ঢুকলাম। দেখলাম আপনার স্ট্যাটাস।
আপনি কীত্তনখোলাতে করে আজকে বরিশাল যাচ্ছেন। এই লঞ্চের খবরই দেখাচ্ছিল।
আপনি কি ফাজলামী করতেছেন?
আমি আমার কথা বললাম। আমি বললাম যে আমার ছোট টিভিতে এই ব্যাপারটা ঘটছে।
শুনেন।
ভাগ্য ব্যাপারটা আল্লাহর হাতে। আল্লাহ যা কপালে লিখে রাখছে তাই হবে। টিভি কখনো মানুষের ভাগ্য নির্ধারন করবেনা। আমি আপনার কথা বিশ্বাস করলাম না। আমি কিত্তনখোলাতে করেই যাব।
যাইয়েননা প্লিজ।
শুনেন ওই লঞ্চে করে আমি একা যাবনা। আমার সাথে আরও ১০০০ জন যাবে। আপনার কথা বিশ্বাস করতে হলে বাকিদের জীবন বাঁচানো উচিৎ আমার?
কিন্তু সেটা করার কোনো পথ নাই। সেটা করতে পারলে আমি নিজেই করতাম।
ঠিক আছে আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু আমি যাচ্ছি বরিশাল। আমি আপনার কথা বিশ্বাস করিনাই। কিছু মানুষ অধিক পরিমান কল্পনা নির্ভর কথা বলে মজা পায়। আমার ধারনা আপনি সেই শ্রেনীর লোক।
অন্য কিছুও হতে পারে। ভয়াবহ কোন অসুখে ভুগছেন হয়ত।
বিষন্নতা নামক অসুখ অবশ্য আমার আছে। কয়েকবার আত্মাহুতি দেওয়ার কথা ভেবেছি।
ওরকম একটু আধটু সবারই থাকে।
সবাই ভাবে। ব্যাপারনা। ভাল থাকবেন। এখন গেলাম।
বাসায় চলে আসলাম।
সবার আগে যেই কাজটা করা দরকার সেটা হলো আব্দুর রহমানকে ফেসবুক থেকে ব্লক করা। ডেনজারাস লোক। বিকালে সদর ঘাটের উদ্দেশ্যে বের হলাম। ফোরসিনে নিজের মৃত্যু দেখার ঘটনা নিয়ে একটা সিনেমা আছে। ফাইনাল ডেস্টিনেশন।
মৃত্যুকে এড়ানো যায়না, কেউ একজন মৃত্যুর প্যাটার্ন আগেই দেখে ফেলে, এই টাইপ হাবিজাবি। সিনেমা হলো সিনেমা। কোথেকে এক টিভি এসে আগেই মৃত্যুর খবর জানায় দিবে এমন হবেনা।
মানুষ হিসেবে আমি খুব সাহসী না বুঝা যাচ্ছে। কীত্তনখোলা লঞ্চের ডেকে মোটেও শান্তিতে নাই।
কেমন যেন একটা টেনশন লেগেই আছে। অথচ নদী শান্ত। সব কিছু ঠিক আছে। আর যতদূর জানি বরিশালগামী বড় লঞ্চে কখনো ডুবেনা। তবে এমনও না যে আমরা সব কিছু জানি।
জানায় মাঝে মাঝেই ভুল থাকে। নিউটন বলেছিলেন মহাসাগর যদি জ্ঞান হয় তাহলে তিনি মাত্র সীমানায় নুড়ি কুড়াচ্ছেন। নিউটনের মত মহাজ্ঞানীর অবস্থা যদি এই হয় তাহলে আমাদের অবস্থান আর কই হবে। তীরের অনেক দূরে দাড়িয়ে আমরা তাইলে জ্ঞানের পানি দেখতেছি।
কেবিনে শুয়ে ছিলাম হঠাৎ বাইরে হট্টগোল শুনলাম।
লঞ্চে ভয়াবহ দুলুনি। ভয়ে আমার কলিজা শুকায় গেছে, তাহলে কি আব্দুর রহমানের কথা ঠিক আছে? ওই টিভিতে সে আগেই দেখে ফেলেছে। লঞ্চের দুলুনী বাড়ছে। ১০ মিনিট দুলল। ১০ মিনিট পর জান দিয়া পানি গেল।
সব শান্ত, কিন্তু আমি আর শান্ত হইতে পারলাম না। কেমন জানি অজানা এক ভয়ে রাত কেটে গেল। সকালে নিরাপদে পৌছলাম। যাক। আব্দুর রহমানের ব্যাপারটার কোন ভিত্তি নাই।
থাকার কথাও না। পুরাপুরী মিথ্যা ব্যাপার। তিনদিন বরিশাল থাকার কথা। দ্বিতীয় দিনের দিন রাতে কীত্তনখোলা লঞ্চটি ঢাকা যাওয়ার পথে দুর্ঘটনায় ডুবে গেল। আশংকা করা হচ্ছে নিহতের সংখ্যা শতাধিক।
বরিশালে যেখানে ছিলাম সেখানে বসেই খবর পেলাম। আব্দুর রহমানকে এখনও বিশ্বাস করতে চাই না। বরিশালে যেই কাজে এসেছি সেটা ২ দিনে শেষ একদিন ফ্রী সময়। ল্যাপটপ খুলে বসলাম। আব্দুর রহমানকে ব্লক লিস্ট থেকে সরালাম।
তাকে আবার এ্যড করলে কি সে মেনে নিবে? তার প্রোফাইল দেখে খুব বেশি বুঝা যাচ্ছেনা। ফোন নম্বর নেওয়ার সুযোগ নাই। ইনফো খানিকটা দেখা যায়। সেখানে ঠিকানায় লেখা লেখা- অল্ড টাউন। কি মনে করে জানি তাকে একটা মেসেজ দিলাম।
মেসেজে লেখা, কেমন আছেন?
ঢাকা আসার পর সব কিছুই ভুলে গেছি। ফেসবুকে ঢুকি কিন্তু আব্দুর রহমানকে পাওয়ার উপায় নাই। হয় সে তার একাউন্ট ডি-এ্যক্টিভ করেছে না হলে আমাকে ব্লক করেছে। পরেরটার সম্ভাবনা বেশি।
আস্তে আস্তে সব কিছু ভুলেই গিয়েছিলাম।
হটাৎ একদিন আমার নিজের টিভি মানে যেটাতে রহস্যের কোন ব্যাপার নাই সময়মতই সময়ের খবর দেয় সেখানে প্রচার করা হলো পুরান ঢাকায় কোন ফ্যাক্টরীতে আগুন। আগুন আশেপাশেও ছড়িয়ে পড়েছে । কয়েকজন নিহত। খোঁজ নিয়ে জানলাম নিহতের একজনের নাম আব্দুর রহমান!! কি ভয়ানক ব্যাপার। পরেরদিন সেখানে গেলাম কিন্তু বাসা পর্যন্ত যাওয়া গেলনা।
কোন সমস্যা আছে। পুলিশ ঘিরে রেখেছে।
আব্দুর রহমান মারা যাওয়ার একমাস পর সেই বাসায় গেলাম। যেই বাসায় আগুন লেগেছিল। পরিবার নিয়ে থাকা বাসা না আসলে।
মেসের মত। পাশের হোটেলের রান্নার আগুন। আগুন ছড়িয়ে পড়েছিল। জিজ্ঞেস করে জানলাম আব্দুর রহমান কোনরুমে থাকত। কয়েকজনের সাথে কথা বলার চেষ্টা করলাম।
মেসে অনেকেই ডাবল থাকে কিন্তু আব্দুর রহমান একাই থাকত। বের হয়ে যাব তখন ম্যানেজার আসল। বিশা ভুড়িওয়ালা লোক। ঢাকাইয়া মজার ভাষাতে কথা বলে। আপনে কি অমুক? জ্বি বলুন।
আমার অবাক হওয়ার কথা এ কিভাবে আমার নাম জানে! আপনার জন্য একটা জিনিস আছে। মেসের ম্যানেজার ছোট একটা জিনিস নিয়ে আসল। এই জিনিস আমার চেনার কথা। সেই রহস্যময় ছোট টিভি। আজব ব্যাপার এটা এখানে কেন?
আব্দুর রহমান ভাই কইছিল কেউ এটা নিতে আসবে।
উনি মরার আগে এই কথা বলে গেছেন?
হ্যা
উনি মারা যাবেন এটা কি উনি আগে জানতেন নাকি? উনি তো এক্সিডেন্টে মারা গেছেন। উনি কিভাবে বলে যান যে ! ! ! !
সেইটা আমি কি জানি!
আব্দুর রহমান বলেছিল সে বিষন্নতায় ভুগে এবং আত্মাহুতির চেষ্টা করে। এখানে তাই ঘটেছে। সবার মনে করছে এক্সিডেন্ট কিন্তু আব্দুর রহমানের ক্ষ্ত্রে এটা সুইসাইড। এই ছোট অলুক্ষুনে টিভিতে সে আগেই দেখেছে এই এলাকায় আগুন লাগবে।
যেই টিভির নিউজ আমি দেখেছি সেটা সে এই টিভিতে আগেই দেখেছে। সে তাও রুম ছাড়েনায়।
আব্দুর রহমানের টিভি আমার কাছে। কারেন্ট ছাড়া টিভি চলেনা আমিও সুইচ দেইনা। বন্ধ অবস্থায় খেয়াল করার চেষ্তা করি।
একদিন এমনি এমনিই মেকানিকের কাছে দিয়ে আসছিলাম টিভিতে সমস্যার কথা বলে। মেকানিক বলল সব ঠিক আছে কোন সমস্যা নাই। টিভি অবশেষে কানেক্ট করলাম। ভবিষ্যত না টিভি বর্তমানকালেই আছে। কোন সমস্যা নাই।
রাতে ঘুমাচ্ছি। টিভির কানেকশন খুলে রাখতে ভুলে গেছি। টিভি অটোমেটিক অন হয়ে গেল। চ্যানেল আইয়ের খবর। আজ সকাল সাড়ে সাতটায় কাকরাইলে রাস্তা পার হতে গিয়ে শামীম নামের আট বছরের স্কুলের ছাত্র নিহত।
শামীম উইলস লিটল ফ্লাওয়ারের ছাত্র ছিল। স্তম্ভিত হয়ে গেলাম। বাকি রাত আর ঘুমাতে পারলাম না। ভোর পাঁচটায় বাসা থেকে বের হয়েই দৌড়ায় উইলস লিট্ল ফ্লাওয়ার স্কুলের গেটে দাড়িয়ে আছি। গেটের দাড়োয়ান খুলছেইনা।
গেট দাপিয়েই যাচ্ছি। যেভাবেই হোক ক্লাশ টু বা থ্রীতে পড়া শামীমের গার্ডিয়ানদের ফোন নম্বর আমার লাগবে। আমি গেট দাপিয়েই যাচ্ছি। আমার আকুল আবেদন শোনার কেউ নেই। দাড়োয়ান বলে গেছে সাতটার আগে গেট খুলবেনা।
আমি হিসাব করেই যাচ্ছি তাও শামীমকে বাঁচানো যায় কিনা। আব্দুর রহমান ঠিকই বলেছিল। আপনি বুঝালেও বা কিভাবে বুঝাবেন!! আমি বুঝতে পারছি কিন্তু এটা আমি কাউকে বুঝাতে পারছিনা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।