আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হেই বাংলাদেশ, গেট রেডি টু হ্যাভ আ পলিটিকাল প্রষ্টিটিউট এজ ইউর প্রেসিডেন্ট, ইফ!

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি অনেকের ধারনা আগামী নির্বাচনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট ক্ষমতায় আসবে। বিশেষ করে বেগম খালেদা জিয়ার ইদানিং কালের বত্তৃতা আর রাষ্ট্রনায়কসুলভ বিদেশ সফর থেকে উনাকে বেশ কফিডেন্ট মনে হচ্ছে যে উনি আবারো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক আর পরিসংখ্যান থেকে কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন - কারন ভোটের ক্ষমতা জনগনের আর বাংলাদেশের জন্যে সেই হিসাব নিকাশ করা খুবই কঠিন। কঠিন কারন রাজনৈতিক বিশ্রেষকরা ঢাকায় বসেই নিজেদের বিশ্লেষন তৈরী করে - যা ১৯৯১ সালে সবচেয়ে বড় ভুল প্রমানিত হয়েছিলো - পরেও ভুল হয়েছে। আর পরিসংখ্যানের বিষয়ে বাংলাদেশে তেমন কোন নির্ভরযোগ্য সংস্থা কাজ করছে বলে জানা নেই।

যাই হোক - ভোটের বিষয়ে পরে কথা বলি। আপাতত একজন পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউটের উত্থান এবং বিরোধী দলের কেন্দ্র বিন্দুতে চলে যাওয়ার ঘটনাই দেখা যাক। যার শুরু বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা মামলার জুনিয়র উকিল হিসাবে। যিনি স্বাধীনতা সংগ্রামে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে কোরাস গান আর ইংরেজী অনুবাদ করেছে। পরে বঙ্গবন্ধু সরকার উনাকে নতুন দেশের পোষ্টমাস্টার জেনারেল হিসাবে নিয়োগ দেন।

সেখানে জার্মানী থেকে ডাক টিকিট এবং খাম ছাপিয়ে আনার কাজ থেকে অর্থ কেলেঙ্কারীতে চাকুরী হারান। পরে বিদেশী দুতাবাসের সাথে দহরমহর এবং রাষ্ট্রীয় তথ্য পাচারের অপরাধে সাজা প্রাপ্ত হয়ে জেলে যান। এর পর ১৯৭৫ সালের সামরিক সরকার ক্ষমতায় এলে তার প্রতি আনুগত্য দেখিয়ে বিএনপিতে ভিড়ে যান এবং উপমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ পান। কিন্তু পল্লী বিদ্যুতের খাম্বা ক্রয়ে দূর্নীতি অভিযোগে তাকে মন্ত্রীত্ব থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং জিয়াউর রহমানে মৃত্যুর পর প্রেসিডেন্ট সাত্তার সরকারের সময় আবারো দূর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হন এবং এরশাদের সামরিক আদালতে দন্ডপ্রাপ্ত হলেও গোপনে এরশাদের প্রতি আনুগত্যের সুবাদে আবারো রাজনীতিতে ফিরে আসেন এবং এরশাদ সরকারে মন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রী এবং পরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হন। এরশাদের পতনের সময় উনি ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে পদত্যাগ করে বিচারপতি শাহাবুদ্দিনকে ভাইস প্রেসিডেন্ট নিয়োগের পথ করে দেন - এবং এরশাদ পদত্যাগ করলে শাহাবুদ্দিন অস্থায়ী প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।

কিন্তু এখানে আলোচ্য ব্যক্তি রাজনৈতিক ডিগবাজী থেমে থাকেনি - উনি ১৯৯১ নির্বাচনে নিজের আসন নোয়াখালী থেকে পরাজিত হলেও এরশাদের ছেড়ে দেওয়া আসনে উপনির্বাচন করে এমপি হন। পরে আবারো বিএনপিতে ফিরে যান এবং এবারও নিজের আসনে পরাজিত হয়ে বেগম খালেদা জিয়া ছেড়ে দেওয়া বগুড়া আসনে উপনির্বাচনে এমপি হয়েছেন। বিগত ১/১১ সরকারের সময় উনি বাড়ীতে বিদেশী মদ রাখার অপরাধে গ্রেফতার হয়েছিলেন আর বর্তমানে দুদকের মামলায় উনি লন্ডনে বাড়ী কেনার জন্যে মানি লন্ডারিং মামলায় আসামী বটে! তা ছাড়া কর ফাঁকি দেওয়ার মামলাতো কোন ব্যাপারই না - কারন উনার দলের নেত্রী থেকে শুরু করে অর্থমন্ত্রীও করফাঁকির কালচারের চর্চা করেছেন। বিএনপির রাজনীতিতে এখন উনি মধ্যমণি - উনার সাথে যাদের দ্বন্ধ হয়েছে - যেমন সাকাচৌধুরী এবং নাজমুল হুদা - এরা আর পার্টিতে নেই। আর যারা আছে তাদের মাঝে এমন কেউ নেই যে উনাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে।

গত কয়েক বছর ধরে বিএনপি সাংগঠিক ভাবে অনেকগুলো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে শুধুমাত্র উনার ইচ্ছার বিরুদ্ধে যাচ্ছে বলে - যেমন সংসদে বিরোধী দলের উপনেতা পদ এখনও খালি - কারন উনি সেই পদের দিকে তাকিয়ে আছেন - কিন্তু সিনিয়র নেতারা সেই পদের যোগ্য। তেমনি একজন মহাসচিব নিয়োগ করা যাচ্ছে না - কারন উনি সেই পদেরও আকাংখী। মোটামুটি বিএনপি চলছে এক ডিগবাজী বিশারদের নেতৃত্বে - যিনি কোন সময় আন্দোলনকে একমাত্র পথ বলেন - তখন বিএনপি আন্দোলনে যায় - উনি যখন বলেন কুটনীতিকদের কাছে যেতে হবে বিএনপি সেখানে যায়। যদিও এই লোকের বুদ্ধিতে বিএনপি বিগত নির্বাচনে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে - এবং পরবর্তীতেও দুইটা ঘটনায় বিএনপি ইমেজ নষ্ট হয়েছে ( খালেদা জিয়ার বাড়ী এবং নেতাদের গ্রেফতার এড়ানোর জন্যে লুকোচুরি খেলা) - তারপরও বিএনপিতে তার উত্থান এবং একক প্রভাব বিস্তার নিয়ে কেউই প্রশ্ন তুলতে সাহস করে না। এই লোকের দুইটা বিশেষ কৃর্তির কথা না বললেই নয় - জিয়া এবং এরশাদ সরকারের সময় উনি সমানভাবে আইনপেশা চালিয়ে গেছেন এবং উনি ৭১ এ পালিয়ে যাওয়া পাকিস্তানী এবং বিহারীদের পরিত্যাক্ত সম্পত্তির মালিকানা নিয়ে আইনগত প্যাচ তৈরী করে ওদের ফিরিয়ে দিয়েছেন - যা ওরা বিক্রি করে অর্থ পাচার করেছে পাকিস্তানে।

সাম্প্রতিক উনি যুদ্ধাপরাধে বিচারে আদালত নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বাতিলে দাবী করে বিএনপি অফিসে সংবাদ সন্মেলন করেছেন। যাই হোক - এই লোকের ডিগবাজী এবং রাজনৈতিক পতিতাবৃত্তির ইতিহাসতো জানা গেল- দেখে শুনে বুঝা যাচ্ছে - খালেদা জিয়ার জীবদ্দশায় প্রধানমন্ত্রী পদের জন্যে কোন বুদ্ধিমান মানুষ চিন্তা করবে না। আর উনি ইতোমধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসাবে কাজ করেছেন - তাই বাকী আছে রাষ্ট্রপতির পদ। আশা করা যায় - ঘটনা যেভাবে এগুচ্ছে - তাতে উনি আগামীতে দেশের রাষ্ট্রপতি হবেন - যদি বিএনপি ক্ষমতায় যায়। আশা করি পুরো বয়ান থেকে পাঠক ইতোমধ্যেই বুঝে গেছেন যে এই পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউটটা কে...উনি হলে ব্যারিষ্টার মওদুদ - যিনি ইতোমধ্যে বহুরূপী মওদুদ নামে পরিচিত হয়ে গেছেন।

আর আশা করি যারা বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে আশাবাদী হতে চান তারা এই বহুরূপী পলিটিক্যাল প্রস্টিটিউট থেকে কি আশা করবে? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।