তবু দুষ্টের করি উত্থান,করি শিষ্টের বুক চুরমার । তবু অর্থের লোভে ভেঙ্গে দেই বুক,অবাধ্য সুখ দুর্বার একসাথে দুইটা দুইটা কইরা ঢুকায় । ঢুকার আগেই আমার পাশের পোলাটা বকবক কইরা আমার মাথাডা ধরাইয়া দিল । তাও মাথা থান্ডা রাখতে কলিজুর কথা ভাবলাম (আসলে সেইরকম কিছু নাই কিন্তু) আর পোলাটার দিকে তাকায়া সব গুলা কথার জবাবে মিষ্টি কইরা হাসলাম । যাউকগা খুব তাড়াতাড়ি ই ঢুকায়া দিল ।
ভাইভা বোর্ড
দুইজন স্যার,দাড়িওয়ালা একজনকে দেখে ভরসা পাইলাম এবং তার কাছে গিয়েই বসলাম । মনে করলাম সকল মুসলমান ভাই ভাই । হয়ত এই উছিলায় নিয়াও নিতে পারে । কিন্তু আমি তো জানি না যে জীবনের সবচাইতে বড় ভুলটা করে ফেললাম ।
-স্যার আসসালামুয়ালাইকুম
-বস !
-থ্যাঙ্ক ইউ স্যার ।
এবার শুরু হইলো তেনার মেজাজ খারাপ কথা গুলা
-কোন স্কুল থেকে বের হইসো?
- স্যার গভঃ ল্যাব হাই স্কুল?
-এখানে আইসা তো আমাদেরকে খুন করা শুরু করবা ।
(চমকায়া গেসি। মনে পড়ল ২০০৩ সালের ঘটনা। এই স্কুলের কিছু বেদ্দপ পোলা আমাদের স্বপন গোস্বামী স্যার কে খুন করে । শালারা কই এখন জানি না ।
তবে আমারে ব্যাকসাইড বাঁশ ঠিকই দিল । তাদের দশ বছর আগের মারাত্মক পাপের জন্য আমার ভুগতে হইল । তারপরেও ভান ধরলাম শুনতে পাই নাই )
-জ্বি স্যার?
-না বলি আমাদেরকে খুন করবা না আইসা?
-ছি স্যার কি যে বলেন? সবাই তো আর এক রকম হয় না
-হুম কিন্তু তোমার চেহারাই বইলা দিতাসে যে তুমি দুনিয়ার চালাক
(মনে মনে কইলাম শাকালসে ইয়ে লাগতা হ্যায় কেয়া?তারপর ভাবলাম কই যে স্যার আপনারে দেইখাও তো তাই মনে হইতেসে আমার । যাই হোক সব কথা বলা যায় না । তাই কইলাম না )
-স্যার যে কি বলেন না ।
-ঠিকই তো বলি । আমরা মানুষ গড়ার কারিগর । চেহারা দেইখাই বইলা দিতে পারি । তুমি তো আইসাই আমাদের এখানে গেঞ্জাম শুরু করবা ।
(মনে মনে কইলাম একবার ঢুকি ।
তোমার কি অবস্থা করি দেখই না । সম্ভবত চান্স পামু না । তবে পাইলে অবশ্যই স্যারের কথাকে সত্য করার প্রচেস্টা চালাব । )
- ছি স্যার কি বলেন এগুলা । আমি ঐরকম ছেলেই না ।
-রেজাল্ট কি?
-স্যার এ প্লাস
-কিসে মিস গেসে?
-যাই নাই তো স্যার ।
-তাইলে এ প্লাস বল কেন?
-স্যরি স্যার ভুল হয়ে গেসে ।
-হুম এবার বল লেখাপড়া কি এ প্লাসের জন্যই পড়সো নাকি
-হুম এবার বল ইংরেজী পারো তো?
(মনে মনে কইলাম হালা কি কবি ক )
-বললাম জ্বি স্যার পারি বলেই তো মনে হয় ।
-এবার বল তাইলে,চল যাওয়া যাক এটার ইংরেজী কি?
-Let's Go sir
-তাইলে চল যাই এর ইংলিশ কি?
-এইটাও স্যার leT's gO
(তারপর কিছুক্ষন এই সেইম কাসুন্দি নিয়া পেচাইলো )
-পড়ালেখা তো কিছুই কর বলে মনে হচ্ছে না ।
(মনে মনে বললাম সে আর বলতে!)
-স্যরি স্যার ।
প্রাইভেট পড়সো ?
-জ্বি স্যার
-ইংরেজীর প্রাইভেট কবে থেকে পড় ?
-স্যার ক্লাস ফাইভ থেকে ।
-গরু ছাগলের কাছে পইড়া লাভ আসে?? কিছুই তো পার না ।
-আমি বললাম স্যরি সার
(এইবার মাথার ভিতর আগুন ধইরা গেল । আমি বাজি লাগতে পারি বেশির ভাগ মানুষ আমার উত্তরটাই দিব । ইভেন আমি এখনো বুঝি নাই ভুলটা কি ছিল!)
-এবার বল যাইতে থাক এর ইংলিশ কি?
-keep going .
(এই কোয়েসচেন নিয়া সে পেঁচাইতে পারল না ।
তাই দ্রুতই কোয়েসচেন পালটে ফেলল । )
-এবার বল যাইতে শুরু কর এর ইংলিশ কি?
(মাথায় কিছুই আসতেসিলো না । )
-Start going
-সে কি ইঞ্জিন নাকি যে স্টার্ট নিবে?
-স্যরি স্যার । এর থেকে ভাল ইংলিশ জানা নাই ।
-হুম ।
এবার বল আমার বরং যাওয়াই ভাল এর ইংলিশ কি?
-It would be better if i go
-এইটা তো বাংলিশ হইল ইংলিশ না ।
-স্যরি স্যার এর থেকে ভাল উত্তর জানা নাই ।
এবার আমার পাশেরটারে জিজ্ঞেস করল । সে বলে পারব না স্যার, তার পর পরই তাকে ভাগায়া দিল । ঐ শালা আসলে কিছুই পারতেসিলো না ।
............
(এরপর আরো কয়েকটা জিনিস জিজ্ঞেস করল। যেই উত্তরই দেই না কেন সে পেঁচাবেই । এরকমই চলতেসিলো । ভাবলাম আমার ভাইভা আর কখনোই শেষ হবে না । তারপরেই অবাক কান্ড! )
-যাও তোমার জন্য শেষ কোয়েসচেন ।
এইটা পারলে ছাইড়া দিব ,বাইওলজি পারো?
-স্যার চেষ্টা করতে পারি ।
-হুম বল কলা কাকে বলে?
_(: যখন একগুচ্ছ কোষ একই উৎস থেকে উৎপত্তি লাভ করে নিবিড়ভাবে একই স্থানে অবস্থান করে এবং মিলিতভাবে একই কাজ সম্পন্ন করে তখন এ কোষগুচ্ছকে কলা বলে । পুরা বইএর সংজ্ঞা দিলাম । )
-হুম এবার যাও ।
-যাই স্যার আসসালামুয়ালাইকুম
(অত পর স্যারের মুন্ডুপাত করতে করতে বাসায় চলে আসলাম ।
) ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।