আল্লাহ মহান, যাহা বলিব সত্য বলিব। শেখ হাসিনাকে হত্যার আন্তর্জাতিক চেষ্টা আবারও বিফল হলো?গণমাধ্যমে উদ্দেশ্যমূলক মিথ্যাচার এবং অসাম্প্রদায়িক একটি রাষ্ট্র বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িকতার আবরণে ঢেকে দেবার অপচেষ্টা রুখে দাঁড়াতে হবে। আরাকানে কোন মসজিদ পোড়ানো হয় নি। তার প্রমান ছবিগুল সুত্র ।
গুজব ছড়িয়ে দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী মানুষের মধ্যে চেষ্টা চালাচ্ছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
গুজব তৈরির জন্য তারা বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াসহ (ফেসবুক, টুইটার, লিঙ্কডইন, গুগল প্লাস ইত্যাদি) ধর্মীয় মতাবলম্বী সংবাদ মাধ্যমকেও ব্যবহার করছে। ক্ষেত্রবিশেষে সাংবাদিকদেরও ব্যবহার করার প্রমাণ মিলেছে। অনেক ক্ষেত্রে মূলধারার সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ করিয়েও অস্থিরতা তৈরির পাঁয়তারা করছে ওই চক্রটি। শুধু বাংলাদেশী গণমাধ্যম নয়, ভয়েস অব আমেরিকার (ভোয়া) মতো খ্যাতিসম্পন্ন সংবাদ মাধ্যমেও উঠে আসছে এ ধরনের খবর।
সম্প্রতি কক্সবাজারের রামু ও উখিয়ায় হামলার নেপথ্যেও ছিল ওই গুজব।
সেখানেও মিডিয়াকে ব্যবহার করেছে ওই চক্রটি। কয়েকজন সাংবাদিকই রামুতে প্রথম মিছিল বের করে। পরে এর নিয়ন্ত্রণ চলে যায় উগ্রপন্থীদের হাতে। এদিকে চলতি সপ্তাহে আবার চাউর হয়ে গেছে, মায়ানমারের একটি বড় মসজিদে হামলা হয়েছে। রোহিঙ্গারা ওই মসজিদে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।
অথচ মায়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি। রেফারেন্স হিসেবে তারা মসজিদের ছবিও সরবরাহ করেছে। ছবিতে দেখা যায়, মসজিদটি পুরো অক্ষত রয়েছে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় অনলাইন ‘বাংলানিউজ’ মঙ্গলবার এ বিষয়ে একটি খবর প্রকাশ করে। ওই সংবাদটি
গতকাল বাংলাদেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমেও প্রকাশ করা হয়।
বিএনপি-জামাত জোটপন্থী দুটি পত্রিকায়ও এ খবরটি ফলাও করে প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে বসবাসরত মুসলিম এবং অন্য ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে অস্থিরতা তৈরির জন্য এ ধরনের সংবাদ পরিবেশন করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের জনপ্রিয় ব্লগ সামহ্যোয়ারইনব্লগে গত ৮ অক্টোবর রাত ২টা ৯ মিনিটে ব্লগার রাইয়ান লিখেন “বাংলাদেশের রামুর ঘটনার প্রতিশোধ নিতে মায়ানমারে ৮শ বছরের পুরাতন একটি ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদে আগুন দিয়েছে বৌদ্ধ সন্ত্রাসীরা। তাদের সহায়তায় ছিল প্রায় ৫শ বার্মিজ সেনা। রাখাইন প্রদেশের রাজধানী সিতউইতে আজ দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
’ ‘সাওডুরো বড় মসজিদ’ নামক মসজিদটি প্রায় ৮শ বছরের পুরাতন, যা জাতিসংঘের হিসেবেও বার্মার ঐতিহাসিক নিদর্শন। মসজিদটিতে আগুন দেয়ার সময় পার্শ্ববর্তী আরো অনেক মুসলিম বাড়িঘরেও আগুন দেয়া হয়। সিতউ থেকে এক রোহিঙ্গা জানায়, ‘প্রায় দুপুর ৩টার দিকে অনেক উগ্রবাদী রাখাইন বৌদ্ধরা মসজিদের কাছে জড়ো হতে থাকে এবং এক পর্যায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় পাশে দাঁড়িয়ে থাকা প্রায় ৫শ বার্মিজ সেনা আগুন নেভাতে আসা রোহিঙ্গাদের বাধা দেয়। ’’ পরে তা সরিয়ে ফেলা হয়।
বাংলানিউজে প্রকাশিত খবরেও জানা যায়, মায়ানমারে বাংলাদেশ দূতাবাস সংলগ্ন মসজিদে মঙ্গলবার সকালে আগুন দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। তবে দূতাবাসে কোনো প্রকার অঘটন ঘটেনি। তিনি জানান, মায়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল অনুপ কুমার চাকমা ইয়াংগুনে বাংলাদেশ দূতাবাস দক্ষতার সঙ্গেই সামলেছেন। এর আগে শুক্রবারে বাংলাদেশে বৌদ্ধ বসতি ও মন্দিরে হামলার প্রতিবাদে মায়ানমারে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন স্থানীয় বৌদ্ধ ভিক্ষুরা।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও মন্দির ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। উল্লেখ্য, এর অল্প কিছুদিন আগে বাংলাদেশ সীমান্ত সংলগ্ন মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে স্থানীয় সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ওপর সংখ্যাগুরু রাখাইনদের হামলায় ৯০ জনের প্রাণহানির পর থেকেই সীমান্তের উভয় পাশে বেশ কিছুদিন ধরে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ভয়েস অব আমেরিকা এ বিষয়ে একটি সংবাদ প্রকাশ করে। সংবাদটির শিরোনাম ‘বার্মিজ মঙ্কস মার্চ অন বাংলাদেশী কনস্যুলেট’। এছাড়া ‘প্রেসটিভি’ নামের একটি সংবাদ মাধ্যমও ৭ অক্টোবর এ ধরনের একটি খবর প্রকাশ করে।
তাদের খবরের শিরোনাম ‘মায়ানমার মঙ্কস অ্যাটাক মস্ক ইন রাখাইন স্টেট’।
ব্লগসহ সামাজিক যোগাযোগ রক্ষার বিভিন্ন মাধ্যমে এভাবে অবাধে বিভ্রান্তিকর প্রচার-প্রচারণা দেশে-বিদেশে ধর্মান্ধতা এবং সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বাড়াচ্ছে। কক্সবাজারের রামুতে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ফেসবুকের মাধ্যমে কুরআন অবমাননার অভিযোগ এনে বৌদ্ধমন্দির ও বসতিতে হামলাসহ অগ্নিসংযোগ এবং ভাঙচুর চালায় উগ্রপন্থীরা। এ সময় অন্তত ১২টি বৌদ্ধমন্দিরসহ প্রায় ৩০টি বাড়ি ও দোকান পোড়ানো হয়। এর পরেরদিন রোববার চট্টগ্রামের পটিয়া এবং কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে হিন্দু-বৌদ্ধমন্দিরে হামলার ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় জনগণের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর আতঙ্ক এখনো কাটেনি।
৮ অক্টোবর ইনকিলাবে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয় উগ্রপন্থী বৌদ্ধরা আকিয়াবে মসজিদে কোরআন পুড়িয়ে দিয়েছে। মসজিদে আগুন লাগানোর ছবি ছেপে সূত্র লিখেছে রেডিও তেহরান।
রেডিও তেহরান এ সংক্রান্ত সংবাদ প্রকাশ করেছে ৭ অক্টোবর । এর পর ছবি পরিবর্তন করা হয়
ও সংবাদে প্রচারিত ছবি সত্য নয় বলে ভুল স্বীকার করে কাছে ক্ষমা চাওয়া হয় রেডিও তেহরানের পক্ষ থেকে।
ভুল সংবাদ দেয়ার জন্য কোন দুঃখ প্রকাশ করেনি।
সেই সংবাদ বাংলাদেশের গণমাধ্যম গুলোতে প্রকাশিত হলো না কেন?
৯ অক্টোবর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তির সূত্রে দৈনিক দিনকালে প্রকাশিত সংবাদে দাবি করা হয়েছে আরাকানের ঐতিহ্যবাহী বড় মসজিদ জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে । মসজিদের ভেতরে ঢুকে কোরআন ছুঁড়ে ফেলে জ্বালিয়ে দিয়েছে।
আবার বলা হয়েছে এ তথ্য সেনাবাহিনী ও পুলিশ অস্বীকার করেছে। তাহলে ভিত্তিহীন এ সংবাদেও সত্যতা কি?
তার মানে কি এই যে,ইনকিলাব, ভয়েস অব আমেরিকা, রেডিও তেহরান এবং দৈনিক দিনকাল উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশ করে? তাই যদি হয়, তাদের দেশের প্রচলিত গণমাধ্যম আইনের আওতায় আনা হবে না কেন?
মতভিন্নতা থাকবে , তাই বলে মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে হিংসা আর খুনোখুনিতে ক্ষেপিয়ে সহিংস পরিস্থিতি সংগঠিত করবে- এ কেমন সাংবাদিকতা?
নাকি এটি কোন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র?
প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ই অক্টবর যখন রামু মন্দির সফর করছেন ঠিক ঐ দিনে কেন দেশী বিদেশী সংবাদ মাধ্যমগুল মিথ্যা সংবাদ প্রদানে মেতে উঠল?
কোন সাম্প্রদায়িক দাংগা শুরু হলে কি হত ভাবুন একবার।
তার সুযোগে প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করা সহজ ছিল চক্রান্তকারীদের। তার সম্ভাবনাও ছিল।
তাহলে কেন হত্যা চেষ্টার অভীযোগে অভীযুক্ত হবে না তারা? ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।