নয়া দিল্লিতে সফররত অর্থমন্ত্রী এক মত বিনিময় সভায় বলেন, “সার্কের ৮ দেশে না হলেও অন্তত ভারত-বাংলাদেশের বাণিজ্যে একক মুদ্রা ব্যবহার সম্ভব। ”
ভারতের ব্যবসায়ী নেতাদের শীর্ষ সংগঠন কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজ (সিআইআই) এর সাবেক সভাপতি শেখর দত্ত বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য বাড়াতে ভারতীয় মুদ্রা ‘রূপি’ ব্যবহারের কথা প্রস্তাব দেন।
“বেশ কিছুদিন ধরে মার্কিন ডলারের সঙ্গে বাংলাদেশি টাকা ও ভারতীয় রূপি উঠানামা করছে। ডলারের এই অস্থিরতার কারণে ভারত ও বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় এই দুই দেশ ভারতীয় রূপিভিত্তিক বাণিজ্য চালু করতে পারে।
এতে দুই দেশই লাভবান হবে। ”
এ ব্যাপারে বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সহায়তা চান শেখর।
নয়া দিল্লিতে শুক্রবার সিআইআই সদর দপ্তরে এই মতবিনিময় সভায় মুহিত ‘একক মুদ্রা’ ব্যবহারের প্রস্তাবে একমত হলেও সেটি কোন মুদ্রায় হবে তা বলেননি।
দুই দেশের ব্যবসায়ীদের এই বিষয়ে কাজ শুরু করারও আহবান জানান অর্থমন্ত্রী।
মুহিত বলেন, “১৯৯৮ সালে পাকিস্তানে এক সেমিনারে আমি উপস্থিত ছিলাম।
সেখানে সার্কভূক্ত দেশের বাণিজ্যমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন। ঐ অনুষ্ঠানে সার্কের দেশগুলোর মধ্যে কমন কারেন্সি চালু প্রস্তাব আসলে পাকিস্তানের বাণিজ্যমন্ত্রী তা সম্ভব নয় বলে সে প্রস্তাবের বিরদ্ধে জোরালো অবস্থান নেন। কিন্তু ঐ অনুষ্ঠানেই পাকিস্তানের একজন তরুণ ব্যবসায়ী দাড়িয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়ে বলেছিলেন, সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে কমন কারেন্সি চালু করা সম্ভব এবং এর ফলে আমরা সবাই উপকৃত হবো। ”
অর্থমন্ত্রী বলেন, “এখন সময় এসেছে। আমরা এটা চালু করতে পারি।
এটা অসম্ভব নয়। সার্কের আট দেশের মধ্যে না হলেও দুইটা দেশের মধ্যে আমরা কমন কারেন্সি শুরু করতে পারি। ”
মুহিত বলেন, “আমাদের আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্য মোটেও ভালো নয়। সাম্প্রতিক বিশ্বমন্দা থেকে আমরা শিক্ষা নিতে পারি। আশিয়ান দেশগুলোর আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যে মজবুত অবস্থানের কারণে চীন, মালয়েশিয়া ও ভিয়েতনামে বিশ্বমন্দার প্রভাব পড়েনি।
”
বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য ঘাটতি প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি ডলার।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সীমান্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে দুই দেশের সরকারকে একসঙ্গে কাজ করার পরামর্শ দেন শেখর দত্ত।
নয়া দিল্লিতে অনুষ্ঠিত চার দিনের এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৪৬তম বার্ষিক সভায় যোগ দিতে আসা বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সম্মানে সিআইআই এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত।
অনুষ্ঠানে বিদেশি বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশের সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশে বিনিয়োগে ভারতীয় উদ্যোক্তাদের অনুরোধ জানান মুহিত।
মতবিনিময় বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতাউর রহমান, ইন্দো-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমদ, ভারতে নিযুক্ত বালাদেশের ভারপ্রাপ্ত হাই কমিশনার মাহবুব হাসান সালেহ, সিআইআই বাংলাদেশ কমিটির সদস্য পংকজ ট্যান্ডন বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের সাতজন সংসদ সদস্য ছাড়াও ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।