বড় ধরনের দরপতনের পরদিনই দেশের শেয়ারবাজারের মূল্যসূচক ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বাজেট-পরবর্তী প্রথম কার্যদিবসে রোববার সূচকের যতটা পতন ঘটে গতকাল সোমবার প্রায় সমপরিমাণ পুনরুদ্ধার হয়।
পর পর দুই দিনে বাজারে দুই রকমের আচরণের যৌক্তিক কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না বিশ্লেষকেরা। কেউ কেউ অবশ্য এটাকে বাজারের ইউটার্ন বা ঘুরে দাঁড়ানো বলে অভিহিত করেছেন।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স এদিন প্রায় ১২৪ পয়েন্ট বা তিন দশমিক ১৯ শতাংশ ও সাধারণ সূচক ১৩৩ পয়েন্ট বা প্রায় তিন দশমিক ২২ শতাংশ বেড়েছে।
রোববার এই দুটি সূচক যথাক্রমে ১৪৫ ও ১৬৭ পয়েন্ট কমেছিল।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক গতকাল ৩৯৫ পয়েন্ট বা তিন দশমিক ২৮ শতাংশ বেড়েছে। রোববার এই সূচক ৪৪৩ পয়েন্ট বা প্রায় সাড়ে তিন শতাংশ কমেছিল।
দুই বাজারে সোমবার সূচক বাড়লেও লেনদেনে ছিল কিছুটা ভিন্ন চিত্র। ঢাকার বাজারে লেনদেন বাড়লেও চট্টগ্রামের বাজারে খানিকটা কমেছে।
জানতে চাইলে বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজনেস অনুষদের শিক্ষক মোহাম্মদ মূসা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ধারণা, বাজেটের পরে প্রথম কার্যদিবসে বাজেট ঘিরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের বিভ্রান্তি কাজ করেছে। তাই ওই দিন লেনদেন শুরুর প্রথম দিকে যখন বিনিয়োগকারীরা দরপতন দেখল, তখন সবার মধ্যে বিক্রির চাপ বেড়ে যায়। এতে বড় ধরনের দরপতন ঘটে। আর গতকালের বাজারের আচরণ দেখে মনে হয়েছে, দিনের শুরু থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা বেশ সক্রিয় ছিল। এ কারণে মূল্যবৃদ্ধি দিয়েই লেনদেন শুরু হয়।
সেটি অব্যাহত থাকায় সাধারণ বিনিয়োগকারীরাওসক্রিয় হয়ে ওঠেন। এর ফলে দিন শেষে সূচকে বড় ধরনের অগ্রগতি ঘটে। ’
মোহাম্মদ মূসা আরও বলেন, রোববার সূচকের যতটা পতন ঘটে গতকাল প্রায় ততটা পুনরুদ্ধার হওয়ায় আপাতত বাজারে বড় ধরনের দরপতনের কোনো কারণ দেখা যাচ্ছে না। বাজেট নিয়ে যে বিভ্রান্তি ছিল সেটি হয়তো আর নেই।
কসমোপলিটন ফিন্যান্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঢাকার বাজারে সোমবার লেনদেনের একটি বড় অংশজুড়ে ছিল বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত।
বিশেষ করে এ খাতের তালিকাভুক্ত সরকারি কোম্পানিগুলো ছিল বেশ এগিয়ে। এদিন বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল প্রায় ৭৭ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের প্রায় ১৬ শতাংশ।
একক কোম্পানি হিসেবে এদিন লেনদেনের শীর্ষে ছিল ইউনিক হোটেল অ্যান্ড রিসোর্টস। এদিন কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ৯ টাকা বা ১০ শতাংশ বেড়ে ৯৭ টাকায় উঠেছে। কোম্পানিটির প্রায় ৩১ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের সাড়ে ছয় শতাংশ।
ঢাকার বাজারে গতকাল মোট ২৮৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদন হয়। এর মধ্যে আগের চেয়ে দাম বেড়েছে ২৭৩টির, কমেছে মাত্র নয়টির আর অপরিবর্তিত ছিল চারটির। ব্যাপক হারে দাম বাড়ার ফলে এদিনের বাজারে দর হ্রাস পাওয়া শীর্ষ দশ কোম্পানির তালিকাটি ছিল অপূর্ণাঙ্গ।
দিন শেষে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৭৩ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে ৪১ কোটি টাকা বেশি।
চট্টগ্রামের বাজারে এদিন মোট ১৯৪টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়।
এর মধ্যে আগের তুলনায় দাম বেড়েছে ১৭২টির, কমেছে ১৯টির আর অপরিবর্তিত ছিল তিনটির। দিন শেষে লেনদেনের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৪২ কোটি টাকা, যা আগের দিনের চেয়ে এক কোটি টাকা কম। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।