ভালবাসার মানে আসলে কি হয়। এতটা দ্বৈরথ দুজনের মধ্যে-তবু আনমনে কত যে ওর
ঠোঁট দুটো টেনে শেষে নাকটাতে ধরি! সত্যি বলতে কি-ওর জন্য আমার কাম-বাসনা
একদমই জাগে না। রাস্তায় চোখ পড়লে কত শত মেয়েকে এ দেহ টানে। কিন্তু ওর
বেলায়, কসম করে বলছি ও আসলে আমার কাছে-রবির হিমালয়। গানের পাখির সুরেলা
নারগিস।
ঠিক যেন 'কি অকলঙ্ক শ্রভ্র সে কি নিবিড় পবিত্র'। আমি শুধু ওকে
সম্পদ ভেবে আগলে রাখতে পছন্দ করি। ওর জন্য বুকের ভেতর চিনচিন করে বাজা ব্যাথাটাকে
সুচের খোঁচায় ঢন ঢন বাজিয়ে দিয়ে প্রশান্তি খুঁজি। ও প্রতিটা পরতে, পলকে
পলকে আমারই সাথে থাকে। আমার হয়ে বাজে।
আসলে আমাকে আঘাতে আঘাতে বাজায়।
বুকে ঢেউ তুলে দিয়ে চলে যায়...
আমি আমার কালের কথা বলছি। এখানে কাঞ্চনজঙ্ঘা নেই, ফুল বাগান বা হিমালয়
নেই। নেই তপুদের তপচ্ছায়া। তবু সে আমার হৈম।
আমি যে কতটা ভালবাসি ওরে....
সেতো ভালবাসি বলেই মুখ খুলে, ঠোঁট ঠেলে তাকে কিছু বলি না। ভাল না বাসলে
কবেইতো বলে দিতাম হায়।
এইতো কয়দিন আগে ওর জন্মদিন ছিল। দীর্ঘ প্রতিক্ষায় থাকার পরও তাকে উইশ করা হয়নি।
বল হয়নি 'হ্যাপি বার্থ ডে টু ইউ'।
বাস্তবতা হচ্ছে তাকে উইশ করার কোন
পথই খোলা ছিল না আমার। আমিও হয়তো ঐভাবে চেষ্টা করিনি। ওকে শুভ কমনা
জানাতে কয়টি চরণ প্রস্তুত ছিল ভেতরে। কিন্তু করা হলো না।
ও আসলে কতটা সুন্দর আমি পরিমাপ করতে যাই না।
রঙিন চোখে দেখার-সৌন্দর্য্য ওর খুব
বেশি না। কিন্তু আমি যে সাদা চোখে ওর ভেতরটা দেখেছি। এমনভাবে দেখেছি-
অলিক চাওয়ার মতো ওকে আমার ভাবতে শুরু করেছি।
ওর জন্মদিনের কথাটা আজ মনে করলাম এ জন্য যে - আজ আসলে আমার জন্মদিন। গত বছর ও
আমাকে উইশ করেছিল।
এর আগে তার জন্ম দিনে আমিও উইশ করেছিলাম তাকে। হয়তো আমি তাকে করেছিলাম বলে সে সৌজন্য রক্ষা করতে গিয়ে আমাকে করেছিল।
আজ সারাটা দিন তার ইশের অপেক্ষায় ছিলাম আমি । ভেবেছিলাম,
করুণাভরে ছোট করে হলেও আমাকে উইশ করবে ও । দিনের অপেক্ষা শেষে রাত চলে এলো।
ধীরে ধীরে পেরিয়ে গেল সময়। কে জানে-হয়তো ও ভুলেই গেছে আমার জন্মদিনের
কথা।
বন্ধুর সংখ্যা খুব বেশি না আমার। তবু কতজন উইশ করেছে আজকের এ দিনটিতে।
এগুলো গণনায় ধরলে সংখ্যায় অন্তত তৃপ্ত হওয়ার কথা।
কত বন্ধু উইশ করেছে। এত্ত এত্ত। তবু কোথায় যেন
শূন্যতা। মনে হচ্ছে কেউই আসলে আমাকে উইশ করেনি। সব কিছু পানশে পানশে
লাগছে।
আমি জানি সে আমার হবে না । আমি তার সমতুল্যও না। তবু ভালবাসতে দোষ কি? ও
আমাকে ভাল না বাসুক অন্তত তার জন্য আমার তীব্র ভালবাসা
ছিল, এ সত্যটা জীবনের একটা সময় অনুভব করুক-এতটুকু চাওয়া নিশ্চয়ই আকাশ-কুসুম কোন কিছু না ।
পাদটিকা- আমার এক সিনিয়র কলিগ। ডেন্টাল পড়ুয়া এক মেয়েকে ভালবাসে।
মেয়েটা
তাকে আরও বেশি ভালবাসে। ওর আশংকা মেয়ের পরিবার দু'জনের সম্পর্ক মেনে নিবে
না। যদি না নেয় কি করবেন তিনি ভাবছেন? ভাবতে ভাবতে একসময় বললেন শেষটা
দেখি কি হয়-যদি মেনে নাই নেয়। তাহলে উঠিয়ে নিয়ে আসবো। মিরপুরে কম দামে
একটা ফ্ল্যাট নিয়ে জীবন শুরু করবো।
আমরা কয়েকজন তাকে অ্যাপ্রিশিয়েট করি।
একসময় 'ভালবাসা আসলে কি' এ নিয়ে দুজনের মধ্যে তর্ক শুরু হয়। বিতর্কের
উত্তেজনায় তিনি সিগারেট ধরান। আমি ধোয়া সইতে পারি না বলে তাকে ছেড়ে দূরে
চলে যাই। জীবনতো আসলে এটাই... কে কখন আসলে কোথায় যায়, কিভাবে বন্ধন গড়ে
উঠে।
বোঝে ওঠার সময়টুকুও পাওয়া যায় না।
আমার সব বন্ধুদের শ্রদ্ধা ও ভালবাসা। পুরোটা জীবন যেন আপনাদের বন্ধু হয়ে থাকতে পারি আজকের দিনে শুধু এ কামনা করি। সবার জন্য শুভকামনা। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।