ব্লগিং হোক আগামীর...
একবার খুলনায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। রাত বাজে ১০ টার মতো। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। হঠাৎ এক মন্দিরের পাশে দেখি, কয়েকটা যুবক বয়সী ছেলে উলু ধ্বনি দিচ্ছে, হিন্দুদের ধর্মীয়াচারকে ব্যঙ্গ করার জন্য। ধরে নিলাম তারা মুসলিম সম্প্রদায়ের, কিন্তু ওদের উপর বিরক্ত হওয়ার কিছু নাই।
পোলাপান যা দেখে তাই শিখে। আমাদের সাংসদরাইতো মাঝে মাঝে সংসদে উলুধ্বনি বাজায়, ইন্ডিয়া দেশ নিয়ে যাচ্ছে এইটা বোঝানোর জন্য। সেই সাংসদরাই আবার ছুটে যায়, সংখ্যালঘুদের নির্যাতন থেকে রক্ষা করতে!!
আমাদের দেশের মন্দির এবং গীর্জাগুলির সামনে সতর্কবার্তা লেখা থাকে। “ইহা ধর্মীয় উপাসনালয়, পবিত্রতা রক্ষা করুন”। অর্থাৎ তাদের মধ্যে শংকা আছে, পবিত্রতা রক্ষা নাও হইতে পারে।
মসজিদের সামনে লেখা থাকে “মা-বোনরা মসজিদের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় মাথায় কাপড় দিয়ে চলুন, মসজিদের পবিত্রতা রক্ষা করুন”। এইটা অবশ্য পরিস্কার না, তারমানে কি ‘মা-বোনরা’ ভিন্ন সম্প্রদায়ের?!
এইসব হাস্যরস বাদ দিয়ে সিরিয়াস কথায় আসি। বিশ্বব্যপী অনেকদিন ধরেই চলছে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষদের সাথে ইহুদী-খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের মারামরি। অতিসম্প্রতি মার্কিন একটা মুভি নিয়ে বেশ ভালো তোলপাড়ো হলো। এইসব ফুটবল খেলা দেখতে দেখতে আমরা অভ্যস্থ।
কখনো ইউরোলীগ, কখনো ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ, এইতো। কিন্তু খুব সম্প্রতি আমাদের দেশেই এরকম একটা ‘দু:খজনক’ ঘটনা ঘটলো। বাঙালী ফুটবল খেলায় খুব কমই খ্যাতি কুড়াইছে। তারপরেও এই বেটে বামনদের ফুটবল খেলার সাধ মিটে নাই। টিভিতে খেলা দেইখা কি পোষায়না তোদের?
কিছু ব্যতিক্রম বাদ দিলে, আমাদের দেশের মানুষ সাধারনভাবে সাম্প্রদায়িক না।
এটা আমাদের সংস্কৃতির সাথে যায় না। গরীবের সম্প্রদায় থাকা শোভনীয়ও না। মুসলিম জঙ্গী উত্থানের সময়ও দেশের মানুষ ঘৃনা ভরে জঙ্গীবাদকে ‘না’ বলেছিল। কিছু লোকের প্রানান্তকর আস্ফালন সত্বেও পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান বন্ধ করা গেল না। এক প্যঁচে লাল পাড়ের সাদা শাড়ী, লাল টিপ, লাল চুড়ি এখনো দেখা যায়।
একুশে ফেব্রুয়ারীর বইমেলায় এখন আরো বেশি মানুষ আসে। এখনো নববধূরা হাতে মেহেদী মাখে, গায়ে হলুদ দেয়, আলতা লাগায়, লাল শাড়ী পরে। সাথে যোগ হইছে ছেলেদের গায়ে হলুদ। কেকও কাটা হয় একটা করে। কয়দিন পর ছেলেরা আলতা মাখা শুরু করলেও আশ্চর্য হবো না!
অল্পকিছু মুসলিম ‘হুজুর’ বা বিভিন্ন ধর্মের ধর্মীয় নেতা আর কিছু ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা হয়তো সাম্প্রদায়িক।
হুজুর বা ধর্মীয় নেতাদের জন্য এটাই স্বাভাবিক, ধর্মই তাদের ব্যবসা। তারা এটা করে রুটি রুজির খাতিরে, মনের বিশ্বাস থেকে না। তাদের জন্য ধীরে ধীরে বিকল্প কর্মসংস্থান করা হচ্ছে। সরকার তাদের জন্য প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা করেছে (ইমাম প্রশিক্ষন), অন্যদের (ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চাদের) সুস্থ জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দিয়েছে । এটা ভালো উদ্যোগ।
ধর্মীয় নেতারাও আস্তে আস্তে বুঝতে পারছেন/ চিনতে পারছেন তাদের গতিপথ।
সত্যজিতের “গুপি গাইন বাঘা বাইন” ছবিতে দেখানো হয়েছে বাংলাদেশ একটা স্বপ্নরাজ্য। (অবিভক্ত বাংলা – আমার মনে হয়, সত্যজিৎ রবীন্দ্রনাথের চেয়ে বাংলাকে বেশি ভালোবাসতো। ‘আমার সোনার বাংলা’ সত্যজিতের রচনা হইলে খুশি হইতাম। ) বাংলার মানুষ জানে না কিভাবে যুদ্ধ করতে হয়, মারামারি করতে হয়।
ভিনদেশীদের কাছেই বাঙালীরা এটা শিখেছে।
“গুপি বাঘা ফিরে এলো”র মতো সত্যিই কখনো যদি গুপি বাঘা ফিরে আসে, কিছু বাঙালীর ফুটবল খেলা দেখে তাদের যেন চিরতরে পালাইতে না হয়। এই “কিছু” যেন কিছুই থাকে। সম্ভব হইলে 'কিছু'ও যেন না থাকে।
সৃষ্টিকর্তার কাছে এইটাই অধমের ফরিয়াদ।
(ঘুমাইতে গেলাম, কোনো মন্তব্য থাকলে পরে উত্তর দেব)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।