আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইতিহাসের আলোকে হযরত আলীর সাথে হযরত আবু বকর, উমর ও ওসমানের সম্পর্ক:

আমি সত্যে অবিচল। মুসলমানদের একটা অংশ নাকি মনে করে যে, মহানবী(দঃ)এর ইন্তেকালে খিলাফতের হকদার ছিলেন হযরত আলী। তাকে বঞ্চিত করে অন্যরা খিলাফত দখল করেছিলেন। কিন্তু ইতিহাস ঘেটে এ কথার তো কোন সত্যতা পাওয়া যায় না। কেননা আবু বকর খলিফা হওয়ার সাথে সাথেই হযরত আলী তার বাইয়াত গ্রহন করেছেন।

অনুরুপভাবে হযরত উমর ও ওসমানের কাছেও তিনি নিঃশর্তে বাইয়াত নিয়েছেন। তাদের কারো বিরোধিতা তিনি করেননি। খলিফা ওমর অন্যদের সাথে তাকে পরামর্শ সভার অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এর দ্বারাই প্রমাণিত হয় যে, সাহাবায়ে কেরাম তাকে উপযুক্ত মর্যাদা প্রদান করেছেন, তার ব্যাপারে কোন যুলম বা বাড়াবাড়ি করেননি। যে যখন ক্ষমতার হকদার ছিলেন, তাকেই তারা ক্ষমতা প্রদান করেছেন।

আলী নিজে কখনোই বলেননি যে ক্ষমতার হকদার কেবল তিনিই। ফাতেমা (রাঃ)-এর মৃত্যুর পর হযরতআলী (রাঃ) উম্মুল বানিন বিনত হিজাম ইব্‌ন দারেমকে বিয়ে করেছেন, তার গর্ভের এবং আলীর ঐরশের সন্তানের নাম- উসমান ইব্‌ন আলী ইব্‌ন আবু তালেব। পরবর্তীতে তিনি লায়লা বিনতে মাসউদ আদ-দারিয়াহকে বিবাহ করেন। তার গর্ভের সন্তানের নাম - আবুবকর ইব্‌ন আলী ইব্‌ন আবি তালিব। হযরত আলী উম্মে হাবিবা বিনতে রাবিয়াহ নামক এক মহিলাকেও বিবাহ করেছিলেন, তার গর্ভের সন্তানের নাম- ওমর ইব্‌ন আলী ইব্‌ন আবি তালিব, তিনি পয়ত্রিশ বছর বয়সে মারা যান।

এখন প্রশ্ন হলো, তিনি যদি আবু বকর, উমর আর ওসমানকে অপছন্দই করতেন, তাহলে নিজ সন্তানদের নাম এইসব সাহাবীর নামে কেন রাখলেন ? বনু হাশেমের মধ্যে সর্ব প্রথম আলী (রাঃ) নিজ সন্তানের নাম রেখেছিলেন আবু বকর। আবু বকর ইব্‌ন আলী ইব্‌ন আবু তালেব কারবালার ময়দানে তার ভাই হুসাইনের সাথে শাহাদাত বরণ করেছিলেন, অনুরূপ হুসাইনের এক সন্তান শাহাদাত বরণ করেছিলেন, যার নাম ছিল আবু বকর! এবং মুহাম্মদ আসগর, (হুসাইনের ছেলে) যার উপনাম ছিল আবু বকর। তারা সাহাবাদের নামে নিজ সন্তানের নাম রাখতে পছন্দ করতেন। সাহাবাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষনের কোন প্রশ্নই উঠে না। আলী (রাঃ)যখন খিলাফত গ্রহণ করেন, তখন তিনি তার পূর্বের খলিফাদের বিরোধিতা করেননি।

পূর্বের খলিফাদের যুগে মুসলিমদের নিকট সংরক্ষিত কুরআন ব্যতীত অন্য কুরআন তিনি পেশ করেননি। তিনি কুরআনের কোন বিষয়ে মতবিরোধও করেননি। বরং তিনি বারবার বলেছেন : “নবীর পর এ উম্মতের সর্বোত্তম ব্যক্তি হচ্ছে আবু বকর ও ওমর”। হযরত উসমানের(রাঃ) শাসনকালে ফাসাদ সৃষ্টিকারী বিদ্রোহীরা যখন হযরত উসমান (রাঃ)কে গৃহ বন্দী করে, আলী (রাঃ)তার পক্ষে লোকদের প্রতিহত করেন এবং তাদেরকে তাড়িয়ে দেন। আর তাকে সুরক্ষা দেয়ার জন্য প্রেরণ করেন নিজের প্রাণপ্রিয় দুই সন্তান হাসান ও হুসাইন এবং ভাতিজা আব্দুল্লাহ ইব্‌ন জাফরকে।

কাজেই আলী ও উসমানের মধ্যে শত্রুতা ও বিদ্বেষ থাকার বিষয় ইতিহাসে প্রমাণ হয় না। অবশ্য হযরত মুয়াবিয়া এই অভিযোগ তুলেছিলেন। কিন্তু মুয়াবিয়ার যথেষ্ট ইজতিহাদী ভুল ছিল, যা ইতিহাসের পাতায় লিপিবদ্ধ আছে। আলী এবং উসমান এরাও ইজতিহাদী ভুলের বাইরে ছিলেন না। কিন্তু এইসবকে পুজি করে সাহাবাদের সম্পর্কে ভুল ধারনা পোষন করা কোন মুসলমানের কাম্য নয়।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০ বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।