জীবন কখনোই সংগ্রাম বিহীন হতে পারে না ভারতের অনাকাংক্ষিতভাবে জন্ম নেয়া কন্যাশিশুদের দুধে চুবিয়ে কিংবা মাটির পাত্রে রেখে সে পাত্রের মুখ বন্ধ করে জীবন্ত অগ্নিদগ্ধ করে কিংবা বিষমিশ্রিত দুধ খাইয়ে হত্যা করা হয়। তবে আজকের দিনে কাজটি আরো সহজ উপায়ে করা যায়। আর তা হচ্ছে মাতৃগর্ভেই মেরে ফেলা।
পুত্রসন্তানের আকাংক্ষায় ভারতে কন্যাসন্তানদের কিভাবে পাইকারি হারে হত্যা করা হচ্ছে সে ব্যাপারে একটি নতুন গ্রন্থে এ সংক্রান্ত লোমহর্ষক তথ্য বেরিয়ে এসেছে। ভারতের প্রতি ১ হাজার পুরুষের বিপরীতে মহিলার সংখ্যা মাত্র ৯২৭ জন।
বিশ্বব্যাপী মহিলাদের গড় সংখ্যার তুলনায় এটা অনেক কম। বিশ্বে প্রতি হাজার পুরুষের বিপরীতে মহিলার সংখ্যা ১ হাজার ৫০। ২০১০ এ ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবরশন এর কারণে ভারত প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার কন্যা শিশু হারাচ্ছে।
ব্রিটেনের মেডিক্যাল জার্নাল দ্য ল্যানসেটের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত দুই দশকে ভারত ১ কোটির বেশি কন্যাসন্তান হারিয়েছে।
‘ডিসঅ্যাপিয়ারিং ডটারস’ নামক গ্রন্থের প্রণেতা সাংবাদিক গিতা আরাভামুদান বলেন, প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে এখন গর্ভধারণের শুরুতেই মানব ভ্রূণের লিঙ্গ শনাক্ত করা সহজ হয়ে যাওয়ায় এ সংখ্যা কেবল বৃদ্ধিই পাবে।
আরাভামুদান তার বইতে লিখেছে, .........কোনো কোনো মহিলার পুত্রসন্তান না হওয়ার কারণে পাঁচ বছরে চারবার পর্যন্ত গর্ভপাত ঘটানো হয়েছে।
এক সাক্ষাৎকারে সে বলে, একজন ধাত্রীর কাছ থেকে এ সংক্রান্ত লোমহর্ষক তথ্য পাওয়া গেছে। ওই ধাত্রী শত শত নবজাতক কন্যাসন্তানকে হত্যা করেছে। তবে কত সংখ্যককে হত্যা করেছে সেই সংখ্যা সে ভুলে গেছে। ভারতে পুত্রসন্তানকে আয়-রোজগারের উপায় বলে মনে করা হয়ে থাকে।
তা ছাড়া হিন্দুরা বলে থাকে যে, পিতা-মাতার মৃত্যুর পর পুত্রকেই মুখাগ্নি করতে হয়।
অপরদিকে কন্যাসন্তানদের পরিবারের বোঝা বলে মনে করা হয়। কেননা বিয়ের সময়
বরকে প্রচুর পরিমাণ অর্থসম্পদ যৌতুক হিসেবে দিতে হয়। বহু পিতা-মাতাই চান না তাদের মেয়েরা স্বামীর বাড়িতে গিয়ে স্বামী, শাশুড়ি বা দেবর-ননদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হোক।
একজন মহিলার উদ্ধৃতি দিয়ে লেখিকা বলে, ‘পরের বাড়িতে আজীবন লাথিগুঁতো আর ঝাটার বাড়ি খাওয়ার চাইতে সরাসরি তাকে স্বর্গে পাঠিয়ে দেয়াটা শ্রেয়।
’নাউজুবিল্লাহ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।