আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

¤ ভাবতে খারাপ লাগে কিন্তু এইটাই বাস্তবতা *বাস্তবতার গল্প* ¤

রহিম,ফাতেমা আর বাকের সবাই অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করছে। সবার বয়স সাত থেকে নয়ের মধ্যে... সবার পরনে ছেড়া ফাঁটা জামা কাপড়। বাকের সবার বড়। লোভী চোখগুলো বড় বড় হয়ে আছে তিনজনেরই। রহিম বার বার বাকেরের দিকে তাকাচ্ছে আর অনিশ্চায়তার ভঙ্গি নিয়ে বারবার হাতের উল্টো পিঠ দিয়ে নাক মুছচে।

ফাতামার কোন নড়াচড়া নেই যেন শক্তি জমা করছে। তিনজনেরই ভাবের পরিবর্তন ঘটল যখন পাশের কুকুর দুইটা ঘেউ ঘেউ করে উঠল... পশু পাখিরা নাকি অনেক কিছু আগে ভাগে বুঝে যায়। কারন কুকুরের ডাকের সাথে সাথে কাক গুলোও কা কা শব্দে রব তোলে । সেই কথার সত্যতা প্রমান করতেই যেন কিছুপর 'ঝুপ' করে একটা শব্দ সবাই এক সাথে লাফ দিয়ে উঠে। লাফিয়ে পড়ে যে যা পারে থলের মধ্যে ভরতে থাকে... সবার হাতে পায়ে মাংসের ঝোল লেগে যায় ... ঘাটাঘাটি চলতেই থাকে কুকুরগুলোও কম যায় না... কাকগুলো বারবার উড়ে এসে ছো মারে কাকগুলোকে তাড়নোর কোন প্রয়োজন অনুভব করে না কেউ কিছুদুরে একটা বিড়াল মিয়াও করে অলস ভঙ্গিতে ডাক দিয়ে উঠে... রহিম কয়েকহাত সামনে একটা আধখাওয়ামাংসের টুকরো দেখতে পায়।

তড়িঘড়ি করে সেদিকে এগিয়ে যায়, কিন্তু মাঝপথে বাকেরের হাতের ধাক্কা খেয়ে পরিত্যক্ত ভাতের মাঝে পরে যায়...বাকের মাংসের টুকরোটা নিয়েই ছোট ছোট দুইটা কামর বসিয়ে দেয়। তৃপ্তি নিয়ে চিবোতে চিবোতে বাকিটুকু থলের মাঝে ফেলে দেয়... ফাতেমা নিপুন হাতে বেছে বেঁছে হাড্ডি আর মাংস ভরছে পলিথিনের থলেতে হাড্ডির পরিমান বেড়ে যাওয়ায় হঠাত্‍ করে থলে ছিড়ে যায়। কুকুর দুটো হয়তো সে অপেক্ষাতেই ছিল। কারন সাথে সথেই দুটো মাংসযুক্ত হাড্ডি নিয়ে কুকুর দুটো ছুট দিল... নিজের ভাগ্যকে গালমন্দ করতে করতে ছিড়ে যাওয়া থলেতে খাবার ধরে রাখার চেষ্টা করতে লাগলো... হঠাত্‍ পিঠে শক্ত কিছুর বাড়ি,প্রথমে কোন হুশ থাকে না। পিছন ফিরে দেখে সেই দারোয়ান।

তিনজনই ছুট দেয় পিঠে অল্পবিস্তর ব্যাথা নিয়ে । কুকুর গুলো 'কেউ' করে চিত্‍কার দেয়... ফাতেমা ভাবে সে যদি খাবার গুলো পলিথিনের থলেতে না নয়ে অন্য কিছুতে... ... অন্তত ছোট ভাইটার জন্যে কিছু নিতে পারতো... বেলা ৩টা মতন হব... বিয়ের ক্লাবের পিছনে তিনজন অপেক্ষারত তিনজনই ভাবছে আবার যাবে কিনা । দারোয়ান বেটা পরিত্যক্ত খাবারের স্তুপের সামান্য দুরে দাড়িয়ে পানচিবুচ্ছে । এরই মাঝে আবার খাবার ফেলে গেছে ... ক্লবে বাজনার ধুম ধুম আওয়াজ যেন তাদের হৃদপিন্ডের দুপ দুপ শব্দকে বাড়িয়ে দিচ্ছে... গাড়ির হর্ন!!! আবর্জনা সরাতে আসছে গাড়ি, তিনজন কয়েকজন জাঁদরেল টাইপের লোক থাকে ওটায়। আজ আর আশা নেই... *ক্লাবের ভেতরে তখন হয়তো কোন মা তার ছেলেকে খাইয়ে দিচ্ছে আর বলছে 'বাবা,প্লিজ বাবা!! আরেকটু ...' আর ছেলে ততোই অনীহা প্রকাশ করছে।

আর ছেলে ততোই অনীহা প্রকাশ করছে... ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।