জড় এক প্রসঙ্গ কাঠামোর নিবিড় পর্যবেক্ষক :P সকল মুসলমানদের বলছি। আজ যদি আপনার কাছে কেউ এসে ইসলামের চেয়ে সুন্দর কোন জীবন বিধানের কথা বলে আপনি কি তা গ্রহন করবেন?? আপনার উত্তর যদি "না" হয় তবে জেনে রাখুন ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের আগে আপনার জন্ম হলে আপনি ইসলামও গ্রহন করতেন না। তৎকালীন আরবের কথা সবাই জানে। খুন, হত্যা, ধর্ষন, ব্যাভিচারের সেই সমাজে ইসলাম এনেছিল শান্তির বার্তা। তখনকার সমাজে গোঁড়ামি কি এখনকার চেয়ে কম ছিল? না।
সেই গোঁড়ামির মাঝেও মানুষকে ইসলাম কাছে টেনেছিল। এই ধর্মটিকে মানুষ ভেবেছিল অনেক বেশী যৌক্তিক, একটি পুর্নাঙ্গ জীবন বিধান। যুক্তির পথ ধরেই একটা ধর্ম আরেকটা ধর্মের উপর প্রতিষ্ঠিত হয়। তৎকালীন ধর্ম যখন বলেছিল ব্যাভিচারের কথা, ইসলাম তখন তা হারাম ঘোষনা করে, সমাজে যখন বিশৃঙ্খলা নিত্যঘটনা তখন ইসলাম বলে শৃঙ্খলার কথা। মানুষের বিবেক মানুষকে পথ দেখিয়েছিল এই ধর্মের দিকে।
সেই যৌক্তিক-সুন্দর ধর্মটিকে কতিপয় স্বার্থান্বেষী মানুষ আমাদের দেখাচ্ছে অনেক জটিল অনেক দুর্বোদ্ধ করে। অনেকটা স্কুলের গণিত শিক্ষকদের মত, যারা প্রথম ক্লাসে অনেক দুর্বোদ্ধ অংক করান যেন সব ছাত্র তার কাছে প্রাইভেট পড়তে যায়। ইসলামকেও আমাদের নিকট দেখানো হচ্ছে জটিল করে। যদি ব্যাপারটা আমরা খুব সহজে বুঝে ফেলি তবে সমাজে যারা ইসলাম বুঝানোর(!) দায়িত্ব পালন করছেন তাদের প্রয়জনীয়তা অচিরেই ফুরিয়ে যাবে, তারা তা কখোনই হতে দেবেন না। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হল স্কুলের একজন গণিত শিক্ষক যেমন আরেকজন গণিত শিক্ষককে দেখতে পারেন না তেমনি এই সব মহান মৌলভীদের একজনও আরেকজন কে দেখতে পারেন না।
ইসলামে এইরূপ গোঁড়ামি যত প্রবেশ করবে আমরা ততই কোণঠাসা হয়ে পড়ব। আমাদের অন্ধবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে লাভবান হবেন কতিপয় মানুষ। আমাদের যদি প্রতিষেধক দেয়া থাকে তবে ড কুকুরের কামড়ে আমরা ভয় কেন পাব? আমার বিশ্বাস মজবুত থাকলে কোন নাস্তিকের কথায় আমি কেন প্রভাবিত হব? কিন্তু আফসোস আমাদের বিশ্বাস দুর্বল। এজন্য আমরা নাস্তিকের কথাতেও প্রভাবিত হই কিংবা তার কথা শুনলেই পিলে চমকে উঠি এবং ওই নাস্তিককে এক হাত দেখে নেয়ার আগে শান্তি পাই না। আর আমাদের বিশ্বাসের এই একমুখী ভাবকে কাজে লাগিয়ে আমাদের মধ্যে ঢুকিয়ে দেয়া হয় জঙ্গিবাদের বীজ।
আমরা আলী আলী জুলফিক্কার বলে পেটে বোমা বেঁধে ঝাপিয়ে পরি সাধারণ মানুষের উপর। আমরা কি করে মুখ দেখাবো সে সকল বিচার-বুদ্ধি-বিবেচনা সমৃদ্ধ পুর্বপুরুষদের যারা এই ধর্মটিকে যৌক্তিক ভেবে গ্রহন করেছিল।
আমরা কখনই ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করি না। আমাদের মধ্যেই ঢুকানো হয়েছে ইসলাম নিয়ে নিজে চিন্তা করে কিছু বের করা যাবে না। আমাদের যেতে হবে হুজুরের কাছে।
হুজুর আমাদের শিক্ষা দেন খ্রিস্টান ও ইহুদিরা এক ভিডিও বানিয়ে ইসলামের অবমাননা করেছে, কাজেই তাদের দেখা মাত্র খুন করতে হবে। আমাদের মধ্যে রক্ত ফুটতে থাকে আমরা ঝাপিয়ে পড়ি আমেরিকান দূতাবাসের উপর। গ্রামের মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ানো ওই হুজুরের এতে কিছুই যায় আসে না। যায় আসে আমাদের প্রবাসী ভাইবোনদের। পশ্চিমা বিশ্বে তাদের জীবন হয়ে উঠে দূর্বিষহ।
আমরা ভুলে যাই সহিংসতা সব সময় বিজয়ের পথ নয়, এমনকি এটা বুদ্ধিমানের কাজও নয়। প্রতি মুহুর্তে সারা বিশ্বের মুসলিম যার নাম যপছে, প্রতিটি আজানে যার নাম ধ্বনিত হচ্ছে সেই মহানবী(দঃ) কে এক ইহুদীর আনাড়ী হাতে নির্মিত এক ভিডিও অপমান করতে পারে না। সেই ইহুদীটি হয়তো চেয়েছিল মুসলিম উম্মাহর জন্য স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে এই ভিডিও তৈরী করে তামাম দুনিয়ার আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হতে, (মিডিয়ার ফোকাসে আসা পশ্চিমা বিশ্বে একটি ব্যাধি। এজন্যই তাঁর উলঙ্গ হয়ে ফুটবল মাঠে নেমে যায়। জাস্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য) এক্ষেত্রে ওই ইহুদীটিও সারা বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষনে সফল।
আর আমরা মুসলিমরাই তাকে সাহায্য করেছি নানা সহিংস পথে।
" বাবা মা মুসলিম ছিলেন,আমার ছোটবেলায় খৎনা করানো হয়েছে এজন্য আমি মুসলিম " এই মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। এই ধর্মটিকে আমার সবচেয়ে যৌক্তিক ও পুর্ণাঙ্গ মনে হয় বলেই আমি মুসলিম। গোঁড়ামি নয় ধর্মকে পালন করতে হবে নিজের বিবেকের সাথে কথা বলে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।