ব-দ্বীপ মানে বদ্ দের দ্বীপ না কিন্তু। দয়া করে কেউ ভুল বুঝবেন না। যদিও বাংলাদেশের অবস্থা দেখে ভুল বোঝা স্বাভাবিক। উত্তাল সারা বিশ্ব। এক আমেরিকান ছবির জের ধরে, যেখানে নোংরাভাবে অবমাননা করা হয়েছে আমাদের প্রিয় নবীকে।
ইসলামকে নোংরাভাবে উপস্থাপন করা, নবীকে ব্যংগ করা এখন একটি সাধারন ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। যেই এখন নাস্তিকতার ছোয়া পাচ্ছে তার প্রথম কাজ হয়ে দাড়াচ্ছে ব্লগে আর ফেসবুকে ইসলাম নিয়ে নোংরা কুরুচিপূর্ন আচরন শুরু করা। এটা এখন নিয়মিত ব্যাপার। কিন্তু এইসব নিয়মিত ব্যাপারের মধ্যেও কিছু কিছু ব্যাপার থাকে যখন তা মাত্রা ছারিয়ে যায়। গতকাল সামুতেও এমন একটি ঘটনা ঘটে গেছে।
ব্যাক্তিগত কাজে গতকাল ব্লগে না থাকায় ডিটেইলস জানতে না পারলেও যে ব্যাপারগুলো বুঝতে পেরেছিঃ
১)ব্লগার দাড়িপাল্লা ইসলামের নবীকে নিয়ে কুরুচিপূর্ন ছবি দিয়ে একটি পোস্ট দেন রাত ১১টা ১০ এ। এই ব্যাপার নিয়ে সাধারন ব্লগারেরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকলেও ঐ পোস্টটি দীর্ঘ সময় ব্লগে থাকে (সম্ভবত আজ সকালে এসে সরানো হয়)
২) এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সামুতে একের পর এক পোস্ট আসতে থাকে, যেখানে জানা আপু ও আরিল ভাইকে নিয়েও নোংরা পোস্ট ও কমেন্ট আসতে থাকে।
পোস্ট পরবর্তি রিয়েকশানঃ
পোস্ট পরবর্তি রিয়েকশান হিসেবে ব্লগারেরা এই পোস্ট দীর্ঘক্ষন ব্লগে থাকার জন্য মডারেটরদের দোষ দিচ্ছেন, একই সাথে নাস্তিকতাকে প্রমোট করার ও তাদেরকে ইন্ধন এবং আসকারা দেওয়ার অভিযোগো আসছে ব্লগ কর্তৃপক্ষের দিকে। সেই হিসেবে মহানবী(সাঃ ) কে অবমাননা করার জন্য শুধু ব্লগার দাড়িপাল্লাই নয় একই সাথে ব্লগ কর্তৃপক্ষকেও দোষির কাঠগড়ায় দার করানো হচ্ছে।
অন্য দিকে ব্লগ কর্তৃপক্ষের কথা অনুযায়ি ( জানা আপা ও বিভিন্ন ব্লগারের কমেন্ট পরে যা বুঝলাম)রাতে ঐ সময় একজন পোস্ট নির্বাচক ছিলেন যার মডারেশনের ক্ষমতা নেই।
বরং সকালে এই পোস্ট দেখে আর সবার মত জানা আপা ও ব্লগের অন্যন্যরাও এই পোস্ট দেখে স্তম্ভিত। এবং সঙ্গে সঙ্গেই তারা এর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন। (Click This Link ১০৭ নম্বর কমেন্ট দ্রস্টব্য)
এরপরো ব্লগারদের অভিযোগ মডারেশনের ব্যর্থতা নিয়ে, কারন এরকম একটি সেন্সিটিভ ইস্যুর পোস্ট এর ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে একটি ব্লগের কর্তৃপক্ষের কালবিলম্ব তাদের ব্যার্থতাকেই ইংগিত করে।
কিছু সন্দেহঃ
ব্লগে কর্তৃপক্ষের ব্যার্থতাকে ছাপিয়ে এখন দেখা দিচ্ছে কিছু সন্দেহঃ
সামুকে অনেকেই নাস্তিকদের প্রভাবিত ব্লগ বলে ধারনা করে থাকে সেই হিসেবে কেউ কেউ ব্লগ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাকৃত বিলম্বকে সন্দেহ করছেন, তাদের যুক্তি যে পোস্ট নির্বাচক এরকম একটি সেন্সেটিভ পোস্টকে ব্লগে ঝুলতে দেখেও কেন ব্লগ কর্তৃপক্ষের হেল্প নিল না, বরং তিনি নির্বিঘ্নে পোস্ট সঙ্কলনের কাজ করে গেলেন ( অনেকেই বলছেন, ঐ পোস্ট আসার পর, অন পোস্ট সংকলিত পাতায় গেছে, তার মানে সঙ্কলক একটিভ ছিলেন)।
আবার কেউ সন্দেহ করছে যে এটা ব্লগ কর্তৃপক্ষের চালাকি, ব্লগকে অস্থিতিশিল করে হিট বারানোই এর উদ্দেশ্য, না হলে রাত ১১টা এমন কোন গভীর রাত নয় যে মডারেশন বন্ধ হয়ে যাবে।
এবার আসি আমার অনুভুতির ব্যাপারে, আমি নিজেও ব্যাপারটা আজ রাতে ব্লগে এসে যখন জানতে পারলাম তখন যেমন আতকে উঠি তেমনি আমার প্রথম রাগটি যেয়ে পরে ব্লগ কর্তৃপক্ষের উপর। বিভিন্ন ইস্যুতে নাস্তিকদের যেভাবে ব্লগে আস্কারা দেওয়া হয় সেই অভিজ্ঞতা থেকে আমার কাছেও মনে হয়েছে এটা ব্লগ কর্তৃপক্ষের দোষ। কিন্তু একটু ঠান্ডা মাথায় চিন্তা আর জানা আপার কমেন্ট পরে যে কথাগুলো মনে হলঃ
১ এখানে হিট বাড়ানোর জন্য ব্লগ কর্তৃপক্ষের ইচ্ছাতেই পোস্ট দেওয়া হয়েছে ( না হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল ও আশা করবো এটা যেন না হয়)
২ যেভাবেই হোক একজন চুলকানি নাস্তিক একটি পোস্ট দিয়েছে এবং সেই সময় কর্মরত পোস্ট সংকলক( মডারেটর হতেও পারে) তার আদর্শ ও ধ্যান ধারনার সাথে পোস্টটির বক্তব্য মিল পাওয়ায় পোস্টটির ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয় নি
৩। আসলেই সামু কর্তৃপক্ষের কোন কিছুই করার ছিল না, তারা সকালে উঠে এই পোস্টটি সম্বন্ধে জানতে পেরে আন্তরিকতার সাথে পোস্টটি ডিলেট করার সাথে সাথে ব্লগারের শাস্তি নিশ্চিত করেছে।
উপরের তিনটি কারনের কোনটি সত্যি আমি জানি না, তবে এই ঘটনার পরবর্তি রিয়েকশান যা হতে পারেঃ
১ সমালোচনায় অস্থির, অনলাইন নীতিমালা তৈরিরত সরকার ( যে সরকার নিজেদের অসাম্প্রদায়িক দাবি করে, এবং নিন্দুকের মতে এই সরকারে অধার্মিকের প্রভাব বেশি) হঠাতই ধার্মিক হয়ে যাবে এবং ধর্ম রক্ষার জিহাদে ব্লগ প্লাটফর্মের গলা টিপে নিজেদের গাজী ঘোষনা করবে।
২ ব্লগ প্লাটফর্মের ছাগু সম্প্রদায়ের ধর্মানূভুতি এতই চাংগা হয়ে উঠবে যে তারা শুধু সামুর ব্যানই চাইবে, শুধুমাত্র সামুর ব্যানের মাধ্যমে দেশে তারা ইসলামের রাজত্ব কায়েমের একনিষ্ট সৈনিকে পরিনত হবে।
৩ সাধারন ব্লগারদের মধ্যে সামু সম্বন্ধে বিরুপ প্রতিক্রিয়া পরবে
৪ অনলাইন ব্লগিং সম্বন্ধেও সাধারন মানুষের নেতিবাচক ধারনা জন্মাবে।
পরিশেষে এটুকু বলতে চাই ইচ্ছাকৃত হোক আর অনিচ্ছাকৃত হোক, একটি ভয়ানক ঘটনা কিন্তু ঘটে গেছে এটা নিসন্দেহ বলা যায়, একই সাথে বলা যায় সামু কর্তৃপক্ষ এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। একটি ঘটনা ঘটলে যে সমস্যাটা প্রকট আকারে দাঁড়ায় সেটা হল অপরচুনিস্টদের আবির্ভাব ও ঘটনাটিকে নিজেদের স্বার্থে ব্যাবহার করা।
বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি আমার প্রিয় ব্লগিং প্লাটফর্ম সামুকে নিয়েও একই আশকা করছি।
তাই দোহাই লাগে ব্লগ কর্তৃপক্ষ ও জানা আপার কাছে আপনারা শুধু একটি ব্যাপার নিশ্চিত করুনঃ
ব্লগে ইসলাম বিদ্ধেসি যেকোন কর্মকান্ড কঠোরভাবে দমন করুন। মুকচিন্তা ও মুক্তকন্ঠের নাম করে যেকোন হেট স্পিচ, যেকোন ধর্ম জাতির অবমাননাকর পোস্ট, গালাগালির পোস্ট, কমেন্ট এর ব্যাপারে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহন করে শুদ্ধ সুন্দর ব্লগিং এর প্রতি আপনাদের আন্তরিকতা প্রকাশ করুন একই সাথে চলমান ঘটনাটি নিয়ে আপনাদের একটি বিবৃতি দিয়ে এবং নোংরা ঘটনাটির সাথে জড়িত ও নোংরামির হোতাদের শাস্তি নিশ্চিত করে সামুকে অভিশাপ মুক্ত করুন। একজন সাধারন ব্লগার হিসেবে এই আকুতিটুকু দয়া করে একটু শুনুন।
(পোস্টের শিরোনাম নিয়ে কিছু কনফিউশান দেখা দিয়েছে। আসলে সমস্যা হয়ে গেছে অতি তাড়াহুরো করতে গিয়ে শিরোনামকে জাস্টিফাই করে এমন কিছু লাইন বাদ পরে গেছে যেটা পরে খেয়াল করেছি, আমার বক্তব্যটি ছিল সামুতে যে ভুল বোঝাবুঝি হলো এর ফলে ছাগু ও সুবিধাবাদীদের খপ্পরে পরে কয়েকদিন পর হয়তো এই পোস্টের শিরোনামের মতই খুব স্বাভাবিকভাবে সামুর ব্যান চাওয়া শুরু হবে, এতে গলা মেলাবে ছাগু ও অনলাইন কন্ঠরোধ করতে চায় এমন শক্তিগুলো।
আলপিনের মত জনপ্রিয় ফিচারপাতা বন্ধ হয়ে গেল কিন্তু এমনি এক ঘটনার জন্যই, তখন কিন্তু খুব স্বাভাবিকতার সাথেই এমন এক ভাব নেয় হলো যে এর চেয়ে বাজে কাজ আর হতে পারে না। কার্টুনিস্টকেও জেলে যেতে হলো। অথচ এর চেয়ে ভয়ঙ্কর অপরাধ দেশে হয়, মাজারে মাজারে ইসলামকে যেভাবে অবমাননা করা হয় সেগুলো নিয়ে কখনোই কেউ কথা বলে না। জাস্ট এই কথাগুলোই বলতে চেয়েছিলাম, শিরোনামটি কনফিউশান সৃস্টি করায় দুঃখিত)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।