আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তুরস্কের তাকসিম চত্বর ও মিডিয়ার রহস্যজনক নিরবতা ।

স্বাধীনতা, সে তো আমার প্রিয় মানুষের এক সাগর রক্তের বিনিময়ে কেনা নব্য উপনিবেশবাদের শৃঙ্খল থেকে মানুষ এখন বের হয়ে আসতে চাচ্ছে । মার্কিন সাম্রাজ্যবাদপন্থী শাসকদের পতন হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র !দেশে দেশে মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ পন্থী শাসকদের শনির দশা শুরু হয়েছে। তাহরির স্কয়ারের পরে ইতিহাসে নাম লেখাতে যাচ্ছে তুরস্কের তাকসিম চত্বর ! কয়েকদিন আগে তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে যে বিক্ষোভের আগুন জ্বলেছে তার শিখা এখন রাজধানী আঙ্কারায়ও ছড়িয়ে পড়েছে। আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র ইস্তাম্বুলের তাকসিম চত্বরে গত কয়েকদিন ধরে হাজার হাজার মানুষ বিক্ষোভ করছে। ইস্তাম্বুল শহরের গাজি পার্কের গাছ কাটা ও সেখানে একটি শপিং মল তৈরিকে কেন্দ্র করে বিক্ষোভ শুরু হয়।

তবে সে বিক্ষোভ এখন সরকার পতনের আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। অনেকে বলছেন, তুরস্কের অবস্থা মিশরের তাহরির চত্বরের মতো হতে পারে যদিও সে সম্ভবনা খুবই ক্ষীণ। তবে এরদোগান সরকার নিশ্চিৎভাবেই একটা বড় ধরণের ধাক্কা খেল যা দলটির দীর্ঘকালীন ক্ষমতার ইতিহাসে নজিরবিহীন। অবশ্য অনেক বিশ্লেষক এটাকে তুর্কি সরকারের সিরিয়া নীতির প্রতি জনগণের স্বত:স্ফূর্ত ক্ষোভের বহি:প্রকাশ বলেছেন যদিও আন্দোলনের সূত্রপাত পার্ককে কেন্দ্র করে, কিন্তু এটা ঠিক তুর্কি সরকারের অতি মার্কিন ও ইসরায়েল প্রীতি বেশিরভাগ তুর্কি জনগণকে ক্ষুব্ধ করেছে যা সময় ও সুযোগমত ক্ষোভের বহি:প্রকাশ এই তাকসিম আন্দোলন । তুরস্কের ইস্তাম্বুলের তাকসিম চত্বরে এখন চলছে পুলিশ জনতা সংঘর্ষ ।

এই সংঘর্ষ চলছে গতকাল সকাল থেকে। অবশ্য কয়েকদিন থেকে হাজার হাজার জনতা একটি পার্কে ধ্বংস করাকে কেন্দ্র করে সরকারী সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে আসছিল এবং সরকারের কঠোর মনোভাবের কারণে তা সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নেয় । বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে দেয়ার জন্য পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, রাবার বুলেট ও পানি কামান ব্যবহার করেছে। তবে তুরস্ক সরকার যদি আমাদের সরকারের কাছে একটু পরামর্শ নিত তাহলে মনে হয় ১০-১৫ মিনিটেই রাতের অন্ধাকারেই হোক আর দিনের আলোতেই হোক সমস্যার সমাধান হয়ে যেত ! তাকসিম চত্বরে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী কয়েকদিন ধরে অব্যহত সরকার বিরোধী বিক্ষোভ দেখিয়ে আসলেও রহস্যজনক কারণে পশ্চিমা মিডিয়া এ বিষয়ে নিবর ও অনেকটা দায়সারা গোছের প্রতিবেদন তারা দিয়েছে বা দিচ্ছে বা প্রতিবেদন এমন স্টাইলে দিচ্ছে সেখানে এরদোগান সরকারের পক্ষেই যাচ্ছে । তাদের রিপোর্ট পড়ে মনে হচ্ছে বিক্ষোভকারীরা সন্ত্রাসী ! এ থেকে আমাদের প্রথম আলোও পিছিয়ে নেই ।

কয়েকদিন আগে প্রথম আলোতে দেখলাম ইরান বিরোধী এক বড় সড় রিপোর্ট করতে ইরানি প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে যা বিবিসি ও সিএনন নামক পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদীদের মিডিয়ার কাছ থেকে নেওয়া । আমি ইরানের নির্বাচন পদ্ধতির ব্যাখ্যা দিয়ে একটা কমেন্টও করেছিলাম কিন্তু আমার কমেন্ট প্রথম আলু ছাপেনি উল্টো আমাকে ঐ রিপোর্টে কমেন্ট করা থেকে ব্লক করে দিয়েছিল ! যাইহোক, তাকসিমের এই বিক্ষোভ তুরস্কে নয় এবার কল্পনা করুন এ ধরণের একটা বিক্ষোভ হচ্ছে ইরানে, ভেনেজুয়েলায় বা কিউবায় । পশ্চিমা মিডিয়া এ নিয়ে কি করত, ফুলে , ফেপে বিক্ষোভটাকে একটা বড় সড় ঢোল বানিয়ে ছাড়ত ও সরকার পতনে যত হলুদ সাংবাদিকতা আছে সবই প্রয়োগ করত আর আমাদের প্রথম আলোর মত পত্রিকায় প্রতিবেদনগুলি কোন পাতায় ছাপানো হত ? তার শিরোনামের ধরণ কি হত ? আসলে সাম্রাজ্যবাদীদের দালাল হলে স্বৈরশাসক বা নীপিড়ক সরকারের বিরুদ্ধে যতই আন্দোল ও বিক্ষোভ হোক না কেন এইসব হলুদ মিডিয়াগুলো সেই বিক্ষোভরত জনগণকে সন্ত্রাসী হিসাবেই তুলে ধরে আর মার্কিন বিরোধী দেশগুলিতে তারা কোন ছুচোর বিক্ষোভকে তিলে তাল করে ফেলে । এ থেকে আমাদের দেশের মিডিয়াগুলো সাম্রাজ্যবাদীদের দালালের ভূমিকায় নিলর্জভাবে অবতীর্ণ হয় যা সত্যিই আমাদের জাতির জন্য লজ্জাজনক ! ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।