কঠিন: মানুষের ভবিষ্যত বড় অদ্ভুত, মনে মনে কত কিছু কল্পনা করে, কত কিছু হতে চায়। পেটের দায় আর সময়ের প্রয়োজন সমস্ত রঙীন স্বপ্নকে সাদাকালো করে দেয়, কঠিন বাস্তবতার মাঝে একটা রং নিয়ে সেই রঙীন স্বপ্নটা চোখের সামনে বেচে থাকে, অনেকটা সাদাকালো টিভির স্ক্রিনে নীল প্লাস্টিকের কাগজ লাগিয়ে চেয়ে থাকার মত। হতে চেয়েছিলাম একজন সংগীতবোদ্ধা, সুরের মূর্ছনায় বাঁচতে চেয়েছিলাম। হয়েছি ' -- ' (ভয়ংকর বাজে শব্দ পড়তে হবে)। তিনদিন অভুক্ত থাকা মানুষ একথালা ভাত যেভাবে খায়, এই '-- ' আমার স্বপ্নকে এভাবে গিলেছে।
যে কোনো গান যদি দরদ দিয়ে গাওয়া হয়, শিল্পীকে আমার গুরু বানিয়ে ফেলি। এভাবে জীবনে কয়েকশ গুরুর ভার্চুয়াল দীক্ষা আমি পেয়েছি।
তরল: সিগারেট বাদে যে কোনো খাবার আমার সামনে দিলে শুরু হয় বাছবিচার। একমাত্র সংগীতের বিষয়ে আমি সর্বভুক, টাটকা, পচা বাসী সব খাই। 'মা নিগা' লিটল ওয়েনের র্যাপ থেকে শুরু করে, গজল, রাগ সব চলে।
শুধু হামদ নাত শয়তানের ধোকায় পড়ে শুনতে ইচ্ছা করেনা, পরে বিদেশে এসে জেনেছি এটা বেদাত। ক্লাসিক্যাল গান যদি দরদ দিয়ে গাওয়া যায়, সেটা আমার কাছে হীরার চেয়ে দামী। ছোটকালে রাগ সংগীত বুঝতাম না তারপরও 'ছায়াছন্দের' বদলে যখন অনুষ্ঠান ঘোষক বলে উঠতেন ' এখন শুনবেন উচ্চাঙ্গ সংগীতের অনুষ্ঠান সুর লহরী'। সবাই টিভির সামনে থেকে হাওয়া, আর আমি বসে সেতার শুনছি (কারন রাগ বুঝিনা)
বায়বীয়: জীবনে যতবার ক্লাবে গিয়েছি শুধুমাত্র গান শুনতে। গড স্যয়ার! আমার কাজ ছিলো ক্লাবে যেয়ে সাউন্ড সিস্টেমের পাশে মুর্তির মত বসে গান উপভোগ করা।
একবার তন্ময় হয়ে অপলক গান শুনছি। হঠাৎ পাশে এক লোক এসে বলল 'আমার বন্ধু আর তার গার্লফ্রেন্ড তোমার উপর প্যারানয়েড হয়ে আছে, তুমি ওই মেয়েটার দিকে ওভাবে তাকিয়ে আছো কেনো?' তাকিয়ে দেখি ছেলেটা আর মেয়েটা দাতমুখ খিচিয়ে আমার দিকে চেয়ে আছে। ছেলেটা ঘুসি দেখাচ্ছে। সম্ভাব্য বিপদের আশংকায় ওখান থেকে চলে গেলাম। মনে মনে বল্লাম 'আল্লায় তগো বিচার করবো, ঠাডা পর্বো তগো উপ্রে'।
আল্লাহ বিচার করেছিলো কিনা এখনও জানিনা। মৃত্যুর পর দোযকে যাবার আগে শেষ ইচ্ছা হিসাবে জানতে হবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।