মরণ আমার ভালো লাগে
খাঁ সাহিব উস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁ (এপ্রিল ২, ১৯০২ - এপ্রিল ২৫, ১৯৬৮) ছিলেন হিন্দুস্থানি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের সর্বকালের অন্যতম সেরা কণ্ঠশিল্পী। 'পাতিয়ালা ঘরানার' শত বর্ষের সেরা শিল্পী হিসাবে তিনি সঙ্গীত-বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত। অনেক সঙ্গীতজ্ঞই, তাঁকে 'বিংশ শতাব্দীর মিয়াঁ তানসেন' বলে থাকেন।
ব্রিটিশ ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের কসুর নামক গ্রামের এক সঙ্গীতজ্ঞ পরিবারে খাঁ সাহিব জন্মগ্রহন করেন। তাঁর বাবা, উস্তাদ আলী বকশ খাঁ, ছিলেন সে সময়ের সুখ্যাত উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতশিল্পী।
তাঁর চাচা ও গুরু, উস্তাদ কালে খাঁ, ছিলেন স্বনামধন্য সারেঙ্গী বাদক। মাত্র ৭ বছর বয়সে, উস্তাদ কালে খাঁ'র কাছে সারেঙ্গী ও উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তালিম নিতে শুরু করেন তিনি। কয়েক বছর পর, উস্তাদ কালে খাঁ পরলোকগমন করলে, খাঁ সাহিব বাবার কাছে কিছুদিন তালিম নেন। সেসময় তিনি 'কানুন' নামক তুর্কী / পারসিক বাদ্যযন্ত্র বাজাতে শেখেন এবং সেই অল্প বয়সেই তিনি তাঁর সুবিধা অনুযায়ী বাদ্যযন্ত্রটিকে কিছুটা পরিবর্তন করে নেন। সেই পরিবর্তিত বাদ্যযন্ত্রটি বর্তমানে 'স্বরমণ্ডল' নামে পরিচিত এবং খাঁ সাহিবের 'ট্রেডমার্ক' হিসাবে সুবিখ্যাত।
১৯২৩ এ সঙ্গীত জীবন শুরু করার উদ্দেশ্যে খাঁ সাহিব চলে যান বেনারসে। সেটি ছিল নবাব, জমিদার আর বাইজীদের আমল। তাঁর প্রথম কর্মসংস্থান হয় 'জারা বাঈ' নাম্নী বেনারসের বিখ্যাত বাইজী'র সারেঙ্গী বাদক হিসাবে। পরে তিনি অপর বিখ্যাত বাইজী, বেনারস ঘরানার উচ্চাঙ্গ কণ্ঠশিল্পী ও ঠুমরী গানের অন্যতম সেরা শিল্পী, রাসুলান বাঈ-এর সাথে সারেঙ্গী সঙ্গত করেন। এর পাশাপাশি তিনি পাতিয়ালা ঘরানার উস্তাদ আখতার হুসেন খাঁ ও উস্তাদ আশিক আলী খাঁর কাছে তালিম নিতে থাকেন।
সীমিত সুযোগে তিনি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত পরিবেশন করতে থাকেন এবং তাতেই তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়ে। এর অব্যবহিত পর, তিনি কোলকাতায় একটি অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশনের সুযোগ পান। সেই অনুষ্ঠান থেকেই তাঁর সুনাম ছড়িয়ে যায় এবং একজন জীবন্ত কিংবদন্তী হওয়া পর্যন্ত তাঁর জয়যাত্রা অব্যাহত থাকে।
খাঁ সাহিবের কণ্ঠ ছিল অনন্যসাধারণ, স্বরের ব্যাপ্তি ছিল 'তিন অকটেভ' পর্যন্ত সুবিস্তৃত। তাঁর কণ্ঠ ছিল সুমিষ্ট, স্বরের ওঠানামা ছিল পরম সাবলীল ও অনায়াস।
তাঁর সঙ্গীত পরিবেশনের ধরনটি ছিল শান্তিময়, শুচিতাপূর্ণ, স্বচ্ছ ও আন্তরিক। অসাধারন প্রতিভা, টেকনিক ও কণ্ঠের আবেদনের কারনে, তিনি খেয়াল, ঠুমরী, গজল, ভজন, এমনকি লোকগীতিতেও সমান পারদর্শী ও জনপ্রিয় ছিলেন।
১৯৪৭ এ দেশ বিভাগে খাঁ সাহিবের জন্মস্থানটি পাকিস্তানের অন্তর্ভুক্ত হয় ও তিনি লাহোরে আবাস গড়েন। তবে ভারতে ফেলে আসা সঙ্গীত জীবনে ফিরে যাওয়ার ইচ্ছা তিনি লালন করতে থাকেন এবং ১৯৫৭ সালে তিনি ভারতের নাগরিকত্ব পেয়ে ভারতে ফিরে যান - বম্বেতে হয় তাঁর নতুন আবাস। উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতে তিনি যতটা আসক্ত ছিলেন, ততটাই বিরুপ ছিলেন ঠুমরী বা অন্য সেমি-ক্ল্যাসিক্যাল সঙ্গীতের প্রতি।
নিয়তির খেলায় কালক্রমে তিনি ঠুমরী গানের অপ্রতিদ্বন্দ্বী শিল্পীতে পরিনত হন। তাঁর আবাস বোম্বে হওয়ায়, ফিল্মে প্লেব্যাকের আবেদন তাঁর কাছে আসতেই থাকে এবং তিনি বিরক্তিভরে সেসব প্রত্যাখ্যান করতেই থাকেন। তবে সঙ্গীত পরিচালক নওশাদ-এর মুঘল-এ-আজম এ দুটি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের প্লে-ব্যাক করতে তাঁকে (হাতেপায়ে ধরে) বাধ্য করা হয় বলা চলে। এই প্লে-ব্যাক করতে শেষ পর্যন্ত রাজী হলেও, খাঁ সাহিব ঠিক করেন যে এমন সম্মানী তিনি নেবেন যেন ভবিষ্যতে প্লে-ব্যাকের অনুরোধ না আসে। মুঘল-এ-আজমের জন্য তিনি গানপ্রতি ২৫ হাজার রুপী সম্মানী নেন (সেই সময় প্লে-ব্যাকের সবচেয়ে দামী শিল্পী মহম্মদ রফি ও লতা মঙ্গেশকরের গানপ্রতি সম্মানী ছিল ৫০০ রুপী)।
সঙ্গীতামোদীদের চরম দুর্ভাগ্য, ১৯৬১ সালে, সঙ্গীত জীবনের ও খ্যাতির শীর্ষে অবস্থানকালে খাঁ সাহিব, আংশিক পক্ষাঘাতের শিকার হয়ে শয্যাশায়ী হয়ে পড়েন। দৃঢ় মনোবল ও সন্তান, উস্তাদ মুনাব্বর আলী খাঁ সাহিবের সহায়তায় দুই বছর বাদে তিনি সঙ্গীতে কিছুটা হলেও ফিরে আসতে সমর্থ হন। ১৯৬৮ সালে খাঁ সাহিব উস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁ ইন্তেকাল করেন।
'অর্জুনের তীর' ভাইয়ের ফরমায়েশে উত্তোলিত ও তাঁর উদ্দেশ্যেই নিবেদিত
খাঁ সাহিব উস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁ - কালজয়ী ঠুমরী
অ্যালবাম ১
উস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁ - সিংস ঠুমরীস
০১। ঠুমরী - রাগ তিলক কোমদ - তান মান ধন টোপে ভারনা
০২।
ঠুমরী - রাগ মিশ্র খাম্বাজ - জল যমুনা ক্যায়সে যাউঁ
০৩। দাদরা - আব তো আও সাজনা
০৪। রাগ ভৈরবী - বাজুবন্ধ খুল খুল যায়
কোয়ালিটি - ১৯০ কেবিপিএস ভিবিআর এমপি৩
ফাইল সাইজ - ৫৯ মেগাবাইটস
ডাউনলোড - উস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁ - সিংস ঠুমরীস
অ্যালবাম ২
উস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁ - ঠুমরী : দ্য মিউজিক অফ লাভ
০১। কঙ্কর মার জাগায়
০২। আয়ে না বালাম
০৩।
সাঁইয়াঁ বোল
০৪। ইয়াদ পিয়া কি আয়ে
০৫। প্রেম কে ফান্দে মে
০৬। প্রেম কি মার কাটার
০৭। কাটে না বিরাহা কি রাত
০৮।
তিড়ছি নাজারিয়ে কি বান
০৯। প্রেম আগান জিয়ারা
১০। মারান মুঠে ইয়ুঁ
১১। ন্যায়না মোরে তারাস রাহে
কোয়ালিটি - ১৯০ কেবিপিএস ভিবিআর এমপি৩
ফাইল সাইজ - ৪৭ মেগাবাইটস
ডাউনলোড - উস্তাদ বড়ে গুলাম আলী খাঁ - ঠুমরী : দ্য মিউজিক অফ লাভ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।