জীবন যেখানে দ্রোহের প্রতিশব্দ মৃত্যুই সেখানে শেষ কথা নয়। সেদিন আমি ঢাকা শহরে কপর্দক শূন্য। রাত বারটায় কেন জানি মাউন্টেন ডিউ খেতে ইচ্ছা করছিল। হাটা দিলাম মুজিব হলের দিকে। মোবাইলে মাত্র দুটো টাকা , গেটে এসে বাবুকে বললাম নিচে নাম।
বললাম চল ডিউ খাই। দুজন রওনা হলাম। কোথাও নেই , শেষ ভরসা মাস্টারদা সূর্যসেন হলের টঙ দোকান। বাবুর মন সেদিন খারাপ , কেন জানি না , জানতেও চাই নি। টঙ দোকানের মামাকে চিনি না।
ডিউ খাবার পর বললাম , বিল দে বাবু। বাবু হতবাক। আমি জানতাম না যে সে ও সেদিন কপর্দক শূন্য। সেদিন দোকানি মামা হাসি দিয়ে বললেন থাক মামা , কাল দিয়েন।
পরদির ঠিক রাত বারটা , আমি আর বাবু বসে আছি , দুজনের পকেটে মোট আঠার হাজার টাকা।
বিকেলেই দুজন বেতন পেয়েছি। কিন্তু অবাক হলেও সত্যি সেদিন কিছু খেতে ইচ্ছা করছিল না। মামা আমাদের দেখে বললেন , মামা ডিউ / দই চিড়া? আমি হেসে বললাম দই চিড়া।
ছাত্র জীবনে শুধু লেখা পড়াই না সাথে আরো অনেক কিছুই থাকে। থাকে জীবনের কিছু ক্রান্তিকাল , কষ্ট কী জিনিস তা অনেকেই জানে না , শুধু দেখে ছেলে মেয়ে গুলো ভাল ফল করে , সেরা জায়গায় চাকুরী পায়।
কত জনের যে মা বাবা নেই আর কতজন যে নিজের খরচ চালিয়ে বাসায় টাকা পাঠায় আর কতজন যে তীব্র দাবদাহে পাখা ছাড়া খোলা ছাদে ঘুমায় তা হয়তো অনেকেই জানে না , জানবেও না কোনদিন।
আজ এক ছোট ভাই নিজের দোষে হল ছাড়া , তার বাবা নেই , ঘুমানোর জায়গা নেই , হলের কেউ তাকে দেখতে পারে না , আমি অসহায়ের মত বললাম কোথাও জায়গা না পেলে আমার খাটে গিয়ে ঘুমাস , চোখ মুছে বলল থাক দাদা , আপনাকে আর বিপদে ফেলতে চাই না।
কষ্ট , কষ্ট শুধুই কষ্ট .... কত কিছু চাপা পড়ে আছে ... হয়তো কোনদিনই বলা হবে না .... ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।