God's rules for traveling the road of life: STOP at least once a day, LOOK for the beauty around you, LISTEN to what your heart is saying.
সম্পর্ক গড়া যতটা সহজ, রক্ষা করা আরো কঠিন। একটা আবেগ থেকে ভালবাসার জন্ম হয়। ঠিক নিষ্ঠুর আবেগের মধ্যে দিয়ে সম্পর্কগুলো নষ্ট হয়। সম্পর্ক নষ্ট হবার অনেক কারণ রয়েছে। দুইজনের ভাবের আদান প্রদান দিয়ে সম্পর্ক শুরু হয়।
একটা আলোচনা হয়। বোঝাপড়া হয়। ভাললাগা মন্দ লাগাগুলো নিয়ে আলোকপাত করা হয়। কিছু বিধিনিষেধ আরোপিত হয় একে অপরের মধ্যে। (এই বিধিনিষেধগুলো প্রথম প্রথম ভাল লাগে, যদিও কারো কারো নিকট এগুলো পরবর্তীতে তিক্ততায় রূপান্তরিত হয়)
কয়েকটি প্রকৃত উদাহরণ নিয়ে কথা বলতে আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াস........
সম্পর্কের ভাঙ্গনের কারণসমূহ:[/sb]
১. একই সময়ে অধিক সম্পর্ক বজায় রাখা: এই বিষয়টি সম্পর্ক নষ্ট করার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশী দায়ী।
একই সাথে একাধিক মানুষকে তার জীবনে স্বাগতম জানানো অন্যায় বৈকি। এটা মনের সাথে প্রতারণার শামিল। এটা এক ধরণের মানসিক অসুস্থতা। এই অসুস্থতা মহামারী আকারে ধারণ করেছে আমাদের বর্তমান সমাজে। যখন কোনোভাবে প্রকাশ পায়, তার প্রিয় মানুষটি অন্য একজনকেও মন দেওয়া নেওয়া করছে, তখনই দেখা দেয় বিপত্তি।
মানসিক সংঘর্ষের সাথে সাথে শারিরিক সংঘর্ষও দেখা দেয়। অতিরিক্ত আবেগের কারণে অনেকে আত্মহননের পথ বেছে নেয়। অনেক ক্ষেত্রে প্রিয় মানুষকে ভাড়াটে গুন্ডা দিয়ে খুন পর্যন্তও করাতে পারে। অনেক সময় একটা বিষয় দেখা যায়, একজনের সাথে যায় যায় অবস্থা; এমন সময় নতুন কারো সাথে সম্পর্কে জড়ায়। আগাম দু:খকে লাঘবের জন্য।
যখন নতুন মানুষের সাথে সম্পর্ক ভাল হয়ে ওঠে, তখন আগের মানুষটি পুরোনো হয়ে যায়। আবার কোনো কারণে নতুন মানুষটির সাথে সম্পর্ক টানাপোড়েন দেখা দিলে, পুরোনোকে স্বাগতম জানায়। এভাবে দোটানা সম্পর্ক তৈরী হয়। একই সাথে কয়েকটি জীবন নিয়ে খেলায় মত্ত হয়ে ওঠে। কোনো একটা সম্পর্কের বুলি হয়।
এটা সাংঘাতিক অন্যায়।
২. বিশ্বাস ভঙ্গ করা: ভালবাসার পূর্ব শর্ত হলো বিশ্বাস। এটা ভাঙ্গলে আর সেটা ভালবাসা থাকে না। ঘৃণায় পরিনত হতে থাকে ক্রমে ক্রমে, অথচ ভালবাসা চালিয়ে যায়। কিন্তু পূর্বের মতো আর পূর্ণ ভালবাসার স্থানে চিন্তা করা যায় না।
ভীতটা নড়বড়ে হয়ে যায়। শেয়ারিং বা যত্নটা যখন কমতে শুরু করে, তখনই ভাঙ্গনের রূপরেখা অংকিত হতে শুরু করে।
৩. মিথ্যা বলা: ভালবাসা সত্য, শ্বাশ্বত। মিথ্যার উপর বেশিদিন কোনো ভালবাসা টিকে থাকতে পারে না। প্রশ্ন হলো, ভালই যদি বাসবে, তাহলে মিথ্যা কেন? যখনই প্রিয় মানুষটার পছন্দের বাইরে কোনো কাজ করে ফেলে, তখনই মিথ্যার আশ্রয় নেয়।
আর প্রিয় মানুষটি জেনে ফেললে হয় বিপত্তি। ঝামেলা, চেঁচামেচি, ঝগড়া-বিবাদ এর সৃষ্টি হয়।
৪. অসুস্থ ভালবাসার প্রকৃতি অনুশীলন: ভালবাসা মানে প্রিয় মানুষটির নির্দেশ পালন নয়। ভালবাসা মানে আবদ্ধ পাখির মতো আটকে থাকা নয়। ভালবাসাটা ভেতর থেকে আসে।
যদি তা না আসে, জোর করার দরকার নেই। জোর করলে তা ধরে রাখা আরো কঠিন। কোনো পাখিকে একবার আটকে রেখে ছেড়ে দিয়ে দেখো, সে তোমার কাছ থেকে কত বেগে ছুটে চলে !! তুমি কি তার জন্য বৃথা অপেক্ষা করতে পারো? নিশ্চই পারো না ! বরং ভালবেসে তাকে কাছে রাখার চেষ্টা করতে পারো। যখনই একটা মানুষ দেখে যে তার সাথে চললে সে পরাধীনতার শৃঙ্খলায় আবদ্ধ হয়ে যেতে পারে, তখনই সে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে। আর সেটাই স্বাভাবিক।
৫. মনের মনুষকে অন্য কারো সাথে তুলনা করা (উচ্চাকাঙ্খা): এই বিষয়টি এখন অনেক বেশি দেখা যায়। তার প্রিয় মানুষটি ওর মতো ভাল না, ওর মতো চেহারা না, ওর মতো সুন্দর করে কথা বলে না, ওর বয়ফ্রেন্ড বা গার্লফ্রেন্ড এর মতো দামী দামী গিফট দেয় না, ওর মতো মোবাইলে কল দেয় না, ওর মতো ফার্স্টফুডে ঘন ঘন যায় না, ওর মতো হাজারটা অভাববোধ নিজের মনকে বিতাড়িত করে। ভালবাসার মান হয়ে যায় সস্তা। কেউ বুঝতে চায় না যে ভাল'র ভাল আছে। এক জায়গায় স্থির না হলে বা পূর্ণ মনোযোগী না হলে সম্পর্ক নষ্ট হবেই।
৬. সামাজিক যোগাযোগের সাইট (ফেসবুক, টুইটার, স্কাইপি, গুগল প্লাস, বেশতো): সামাজিক যোগাযোগের কারণে বিভিন্ন মানুষের সাথে সহজেই যোগাযোগ স্থাপন হচ্ছে। তার কিছু খারাপ প্রভাবগুলোও চোখে পড়ার মতো। নিজেকে সস্তা করে বিক্রি করে দেওয়াটা কয়েকটা মুহূর্তের ব্যাপার। ভালবাসার মানুষটিকে চোখের সামনেই দেখছে অন্য মানুষগুলোর সাথে ভাবের বিনিময় করতে। কিছু ব্যাপার হয়তো মেনে নিতে পারে না।
আর সম্পর্কগুলো তখন বুলি দেওয়া হয়। মুরগী জবাই করার মতো।
৭. দৈহিক সম্পর্ক: এখন থেকে ১০ বছর আগেও এটি স্বপ্ন ছিল। আর এখন এটা ডাল-ভাত। কয়েকদিনের সম্পর্ক হয়ে উঠলেই এটি দৈহিক সম্পর্কে রূপ নেওয়াটা ঐতিহ্যগত হতে শুরু করেছে।
আর সেখানেই যত বিপত্তি। যখন কয়েকদিনের পরিচয়ে খুব ঘনিষ্ঠ সম্পর্কে লিপ্ত হয়, তখন সে ভাবতে শুরু করে, তাহলে এই ছেলে বা মেয়ে অন্যদের সাথেও ঠিক এমন করেছে। শংকা তৈরী হয়ে যায়। এটা ভাবতে শুরু করে, দৈহিক সম্পর্কের পরে। আগে এটা চিন্তা করে না।
ইচ্ছা করেই। কারণ সে সাময়িক আনন্দ নিজেও ভোগ করতে চায়।
৮. পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমে যাওয়া: একজনের অগোচরে কোনো খারাপ কাজে লিপ্ত হওয়াটা সত্যিই ভালবাসার পরিপন্থি। এটা কমিটমেন্টের ব্যাপার। কথা দিয়ে কথা রাখার ব্যাপার।
ভালবাসার মানুষের প্রতি হৃদয়ের অন্ত:স্থল থেকে যদি টান অনুভব না করা যায়, তাহলে ভালবাসার তো কোনো প্রয়োজনই নেই !! ভালবাসার মানুষের প্রতি পরম শ্রদ্ধা না থাকলে ভালবাসা টিকে থাকে না। অন্য মানুষগুলোর কাছে ভালবাসার মানুষের সম্মান বজায় রাখাটাও জরুরী। ভালবাসার মানুষগুলোর পছন্দের বা খারাপ লাগাগুলোকে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করাটা সবচেয়ে জরুরী। এটা না থাকলে; ভালবাসা বলতে কিছু থাকে না।
ভালবাসা রক্ষায় করণীয়:
১. একটা সম্পর্ক পূর্ণভাবে নি:শেষিত না হলে নতুন কোনো সম্পর্কে জড়ানো যাবে না।
ক্ষেত্রবিশেষে নতুন কোনো সম্পর্কে না জড়ানোই ভালো। পারিবারিকভাবে বিয়ে করলে অধিকতর সুখের সন্ধানের সম্ভাবনা আছে। একই সাথে একাধিক সম্পর্কে জড়ানো যাবে না।
২. বিশ্বাস ভঙ্গ হয় এমন কোনো কাজে লিপ্ত হওয়া যাবে না। ভালবাসার মানুষকে যত্ন বা অবহেলায় রাখা যাবে না।
৩. কখনোই কোনোভাবেই মিথ্যা বলা যাবে না। সত্য যত নির্মমই হোক না কেন, তা বলতে হবে।
৪. জোর করে কোনো ভালবাসাকে টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করা যাবে না। যে চলে যেতে চায়, তাকে সহজেই সুন্দরভাবে যেতে দিতে হবে। স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করা যাবে না।
তবে উভয়েরই উচিত ভালো বিষয়গুলো অনুশীলন করা। পরস্পরে শ্রদ্ধাভক্তি করা।
৫. মনের মানুষকে অন্য কারো সাথে তুলনা না করে তাকে যোগ্য আসনে বসান। স্থির হোন। সারাজীবন এই মানুষটার নিচে একই ছাদের নীচে বসবাস করতে হবে, এই মানসিকতাকে মনে লালন ও ধারণ করতে হবে।
৬. ভালবাসার মানুষটির ছোট্ট উপহারটির যথাযোগ্য সম্মান দিতে হবে।
৭. সামাজিক যোগাযোগের সাইট এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
৮. দৈহিক সম্পর্ক এড়িয়ে চলুন। পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাভক্তি বজায় রাখতে হবে।
৯. দেখে শুনে বুঝে প্রিয় মানুষ নির্বাচন করতে হবে।
ভবিষ্যত ভাবনাটা বেশি জরুরী। মনের মানুষ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আবেগকে প্রশ্রয়ই দেওয়া যাবে না।
বি.দ্র. কারো সাথে এই নোটটির কোনো অংশ আংশিক বা সম্পূর্ণ মিলে গেলে আমি কোনোভাবেই দায়ভার গ্রহণ করবো না। গঠনমূলক মন্তব্য করবেন। ব্যক্তিগত আক্রমণ এই নোটে গ্রহণযোগ্য বা কাম্য নয়।
সবার সহযোগিতা কামনা করছি। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।