... কালজয়ী কিংবা আকাল জয়ী; দুনিয়ার প্রায় সব বইয়েরই রিভিউ লেখা হয়ে গেছে। নতুন এমন কোনও বই নাই যেখানে পুস্তক প্রকাশের আগেই রিভিউ প্রকাশ হয় না। তদুপরী অবিশ্বাস্য হলেও সত্য অতি প্রয়োজনীয় কিছু পুস্তকের রিভিউ আজবধি রচিত হয়নি। অথচ সে সব পুস্তকের দ্বারস্থ হয়নি জীবনে কখনও, এমন মানুষ পাওয়া যাবেনা। কিন্তু আর কত? সময় এসেছে ইতিহাসের দায় শোধরাবার।
স্বার্থপরতা ঝেড়ে ফেলে নিজেই উদ্যোগ নিলাম সেই সব ভাগ্যাহত পুস্তকের রিভিউ রচনায়।
১) ডিকশনারি বা অভিধানঃ আমার অত্যন্ত প্রিয় একটা বই। জন্ম থেকেই পড়োছি, এখনও শেষ করতে পারিনি। দোয়া রাখেন, যেন শিগগিরই সমাপ্ত করতে পারি। অত্যন্ত স্বাস্থবান এই বইটা প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই মানুষের ঘরে ঘরে।
জ্বলন্ত জলিল থেকে রজনীকান্ত, সাহারা থেকে মমতা, বাজপেয়ি থেকে গিলানি; এমন কোনও সুপার হিরো নাই যে ডিকশনারির দ্বারস্থ হতে হয়নি। লেখকঃ লেখক অজ্ঞাত। পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ হাজার দেড়েক। চমৎকার এই বইটি কিনে দেখবেন আশা করি। মূল্য বিফলে যাবে না।
২) ব্যাংকের চেক বইঃ অতি মূল্যবান একটি বই। লেখকঃ নাম না জানা কত শত মাছি মারা কেরানি। প্রকাশকঃ ব্যাংক। এই পুস্তকটি পরম যত্নের সহিত বাসা বাড়িতে সংরক্ষন করা হয়। এর স্থান উন্মুক খোলা জায়গায় নয় বরং সিন্দুকে, আলমারিতে; তালাবদ্ধ করে রাখা হয়।
সবথেকে কষ্টকর ব্যাপার হল এই বইয়ের এক একটা পাতা ছিঁড়তে কারও কারও যেন প্রিয়জন বিয়োগের সমান শোকের আবহ সৃষ্টি হয়। এবং এই পুস্তকের ব্যাবহার সমাপ্ত হয় অত্যন্ত মর্মান্তিক ভাবে। বিশেষ বৈশিষ্টঃ এই পুস্তকের মূল্য এতই বেশী যে, যে কোনও অঙ্ক সেখানে মামুলি বলে গণ্য হয়। পাঁচ টাকা থেকে পাঁচ লক্ষ, পাঁচ লক্ষ থেকে পাঁচ কোটি; যত বড় হোক না কেন, সকল অঙ্কই এখানে 'মাত্র' বিশেষনে বিশেষিত হয়। যদিও সর্বশেষ জাতীয় রেকর্ড অনুসারে চার হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত 'মাত্র' উপাধিতে ভুষিত।
৩) গাইড বই/নোট বইঃ খুবই প্রয়োজনীয় একটা বই। ওরস্যালাইনের মত এই বইটাও বলা যায় হাজার ছাত্র/ছাত্রীর জীবন বাঁচায়। ইতিহাস থেকে সাহিত্য, ব্যাকরণ থেকে পদার্থ; যে বিষয়ই হোক না কেন, নোট বইয়ের আশীর্বাদ পেলে বোর্ড কর্তৃক টেক্সট বই অনায়াসেই ত্যাগ করা যায়। লেখকঃ লেখকের নাম সেখানে লেখা থাকে বটে, তবে এক একটা নোট বইয়ের ডি.এন.এ. পরীক্ষা করলে দেখা যাবে তা অগ্রজ একই বিষয়ক বাজারে প্রচলিত আরও দশটা বইয়ের ক্লোন মাত্র, আর অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে এই কাজ সম্পন্ন করেন লেখকের স্থানে থাকা নামের ব্যাক্তি তথা 'ওমুক' স্যারের নিষ্ঠাবান ছাত্রবৃন্দ।
আজ আপাতত এ' পর্যন্তই।
*ছবির সূত্রঃ গুগল। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।