আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

না বলুন পলিথিন কে

বাউন্ডুলে পরিব্রাজক আমার কাছ থেকে ঘণ্টাখানেক জাটকা সম্পর্কে জ্ঞানগর্ভ লেকচারের পর মুনাওয়ার হালকা গলায় বলল, “তুই না খেলেই পারিস”। আমি থমকে গেলাম। বলে কি ব্যাটা। একজন নাগরিক হিসেবে কোন দায়িত্ব নেই? এটা কেমন কথা? মুনাওয়ার ফালতু কথা বলার ছেলে না। বাল্যবন্ধু।

সুদীর্ঘ ২৪ বছরের বন্ধুত্ব আমাদের। না ভেবে একটা কথা বলবে এটা হবার কথা নয়। মনটা খারাপ হয়ে গেলো। কিন্তু কিছুক্ষন পরেই ভালো লাগা শুরু হলো। সত্যিই তো।

আমরা কিনছি বলেই তো জাটকা আসছে। সরকারের ঘাড়ে সব দায়িত্ব দিয়ে দিলেই হবে? গোড়ায় হাত না দিলে এ ক্যান্সার কমার নয়। জাটকা প্রসঙ্গ এলো আমার বছর দুয়েক আগে নেয়া এক সিদ্ধান্তের কথা জানাতে। সিদ্ধান্ত ছিলো, আমি আর পলিথিন ব্যবহার করবো না। দু বছর হলো এ অভ্যাস চলছে।

মানতে পারছি? ১০০% হয়তো নয়। কিন্তু খুব প্রয়োজন না হলে পলিথিন ব্যবহার করি না আমি। আমার বাসার কেউই নয়। আগে যে কোন দরকারেই বাসায় পলিথিন খুঁজে পাওয়া যেত, এখন পাওয়া দূরহ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। মুনাওয়ারের বুদ্ধি কাজে লেগেছে।

আপনারাও চেষ্টা করে দেখুন। পারেন কি না? প্রথমেই বলে নেই পলিথিন কি কি ক্ষতি করতে পারে তা বিস্তারিত বলতে পারছি না। মাটির উর্বরাশক্তি কমায়, বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরন করে ইত্যাদি ইত্যাদি। পলিথিন অপচনশীল বিধায় বহুবছর পরেও মাটিতে গলে যায়না এবং নর্দমায় পচে যায় না। নর্দমাগুলো বন্ধ হয়ে যাবার মূল কারনগুলোর মধ্যে পলিথিন একটি।

পরিবেশের যাবতীয় দূষণের মূলে এই পলিথিন। সে যাই হোক, অভ্যস্ত হয়ে যাবার কারনে পলিথিন ব্যবহার শুন্য করাটা অসম্ভব। তবে কিছু কিছু চেষ্টা করে ব্যবহার কমানো যেতে পারে। ১। হাতে বয়ে নিয়ে আসার উপযোগী জিনিস পলিথিনে আনবেন না।

আমি বিস্কুট, তরল দুধ, চিপ্স, চাপাতি, চানাচুর আনতে কখনোই পলিথিন ব্যবহার করি না। এমনকি কখনো যদি দু/চারটা ডিম আনতে বলা হয় (মাঝে মধ্যেই আনতে হয়) আমি দুইহাতেই ডিমগুলো নিয়ে আসি (কাগজের ঠোঙ্গা না পাওয়া গেলে অবশ্য)। ২। বাজারে যেতে হলে চটের ব্যাগ হাতে করে নিয়ে যান। বিশ্বাস করুন, অনেকগুলো পলিথিন ম্যানেজ করা কষ্ট।

তারচেয়ে চটের ব্যাগেই সব আনুন। একেবারেই পলিথিন ব্যবহার করতে পারবেন না এমনটি নয়। অন্তত ঢালাওভাবে ব্যবহার বন্ধ করুন। ৩। অন্তত এক জনকে (তার পরিবার সহ) টার্গেট করে এই অভ্যাস গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করুন।

পরিশেষে একটা কথাই বলি, এখনই সাবধান না হলে পরে হয়তো আর সাবধান হওয়ার সময়ও না পাওয়া যেতে পারে। আফটার অল, দেশটাতো আমাদেরই। না কি বলেন? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।