আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অসৎ সাংবাদিকতা না অপসাংবাদিকতা?

তারুণ্যের শক্তিতে জাগুন এই দেশ। ছিনিয়ে আনুক নতুন সকাল নতুন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন অসত সাংবাদিকতাকে থামিয়ে রাখাটাই তার বড় চ্যালেঞ্জ। খুব ভাল কথা এবং বিকৃত তথ্য যে সমাজে সংকট সৃষ্টি করে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কিস্তু থামাবেন কি করে সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। কারণ সরকার অনলাইন সাংবাদিকতাকে থামিয়ে দিতে নতুন নীতি তৈরি করছেন।

বেসরকারী টিভি চ্যানেলগুলোকেও নিয়ন্ত্রণের একটা চেষ্টা আছে। তথ্য অধিকার আইন পাস হলেও তথ্য অবাধে জনগনের কাছে যেতে পারছে না। সেক্ষেত্রে তথ্য বিকৃত পন্থায় যাচ্ছে জনগণের কাছে। সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তারা যা বলবেন তার সবটাই সঠিক।

অসংখ্য সাংবাদিককে দেখেছি সেমিনারে উপস্থিত থেকে সম্মানীর জন্য কাইজ্জা করে। সম্মানী পেলে সংবাদ হয় না পেলে হয় না। বেসরকারী অনেক সাহায্য সংস্থা তাদের কর্মকাণ্ড প্রচারের জন্য বড় ধরনের বাজেট বরাদ্দ রাখে যার বড় অংশ ফেলোশীপ, পুরষ্কার, প্রমোদভ্রমণ ইত্যাদির নামে সাংবাদিকদের দেওয়া হয়। আবার অনেক ব্যবসায়ী সাংবাদিক পুষেন। যারা প্রয়োজনে প্রতিপক্ষকে বিপাকে ফেলার জন্য এগুলো ব্যবহার করেন।

আবার অনেক ব্যবসায়ী তারা সাধু না শয়তান তা মানুষই জানেন-- পত্রিকা বের করেন। মিডিয়া হাউস চালু করেন। তাইতো বেসরকারী টিভি চ্যানেলগুলোতে মালিকের স্ত্রী রাতারাতি সঙ্গীতশিল্পী হয়ে যান, অনেকে হয়ে পড়েন বুদ্ধিজীবি। চ্যানেল আই মানেই শাইখ সিরাজ, এটিএন বাংলা মানে মাহমুদুর রহমান-- এরকম হাজার উদাহরণ। মাহমুদুর রহমান সংস্কৃতি শব্দটিও সঠিকভাবে উচ্চারণ করতে পারেন না অথচ তিনিই বাংলাদেশের ‌ "সাংস্কৃতি"র প্রধান পৃষ্ঠপোষক।

শাইখ সিরাজ উড়চুঙ্গা লেদা পোকা চিনতে পারেন কিন্তু সুন্দরী প্রতিযোগিতার বিচারক হয়ে যান কেবল মাত্র চ্যানেল মালিক হওয়ার সুবাদে। এই হলো সাংবাদিকতা বা সংবাদ মাধ্যমের নমুনা। অনেক সংবাদপত্র তথ্যভিত্তিক সংবাদ না ছেপে 'জানা গেছে শোনা গেছে, খবরে প্রকাশ' ইত্যাদি সূত্রে সংবাদ প্রকাশ করেন। কালের কণ্ঠ, যুগান্তর এগুলোর বড় প্রমাণ। সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা।

কিন্তু অসাধু আচরণ সাংবাদিকতার সাথে যায় না। তাই অসত সাংবাদিকতা না বলে এটিকে অপ সাংবাদিকতা বলাই শ্রেয়। এখন কথা হলো ইনু সাহেব কিভাবে এটাকে থামাবেন। সচেতনতা সৃষ্টি করে? সেটা সম্ভব নয়। আইন করে? তাহলে তো তথ্য অধিকার আইন আর থাকে না।

আমি নিশ্চিত এই অসত সাংবাদিকতার সংজ্ঞা নিয়েও সমস্যা আছে। নিজের পক্ষে গেলে সাংবাদিকতা আর বিপক্ষে গেলে অপসাংবাদিকতা এমন ধারণা সব মহলেই বিদ্যমান। তাই অপ সাংবাদিকতা বা অসত সাংবাদিকতাকে থামানো যাবে না কোনোভাবেই। কেউ বলবেন তথ্য সন্ত্রাস এবং কেউ বলবে বাকস্বাধীনতা হরণ। যারা অপসাংবাবিদকতার সাথে জড়িত তাদের মানুষ চেনে।

যারা চিনেন না তারাও একসময় চিনবেন। অতএব ইনু সাহেব, যা পারবেন না তা নিয়ে কথা না বলাই শ্রেয়। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।