আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিএনপি’র অন্যতম সহসভাপতি শাহ্‌ মোয়াজ্জেম হোসেনের দৃষ্টিতে জিয়াউর রহমান ছিলেন সুযোগ সন্ধানী, অতি উচ্চবিলাসী ও ক্ষমতালিপ্সু ব্যক্তি

শান্তির জন্য সংগ্রামী শাহ্‌ মোয়াজ্জেম হোসেন তাঁর ‘জেল হত্যা মামলা’ নামক গ্রন্থে মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু সরকার, ১৫ আগস্ট হত্যাকান্ড, জেলহত্যা, মোশতাকের শাসন, জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আরোহন ইত্যাদি বিষয়ে খোলামেলাভাবে লিখেছেন। তাঁর নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সকল বিষয়েই মুল্যায়ন করেছেন। তিনি ছাত্রলীগের সর্বোচ্চ পদে আসীন নেতা ছিলেন। ছাত্রলীগের পথ বেয়ে রাজনীতি শুরু করে পঁচাত্তরের পরে মোশতাকের সঙ্গে ডেমোক্রেটিক লীগ নামে রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এরশাদের আমলে দলের বিলুপ্তি ঘটিয়ে জাতীয় পার্টিতে মিশে যান।

তিনি সংসদ সদস্য, সংসদের চিফ হুইপ, প্রতিমন্ত্রী, মন্ত্রী, তাঁর দলের সেক্রেটারী, মন্ত্রী, উপপ্রধানমন্ত্রী, জাতীয় পার্টির মহাসচিব ইত্যাদি পদের অধিকারী হয়ে বর্তমানে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ও দলটির অন্যতম সহসভাপতি। জেলহত্যা মামলায় অভিযুক্ত এই বিএনপি নেতা আরও কিছু গ্রন্থ লিখেছেন। যাইহোক, এই গ্রন্থে তিনি জিয়াউর রহমান সম্পর্কে একেবারে খোলাসা করে বলেছেন। ১৫ আগস্ট পরবর্তী ঘটনা বিশ্লেষণে বলেন, সামরিক ছাউনিতে প্রতিদিন প্রতিকুলতার পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছিল। প্রথম থেকেই একটা বিদ্বেষ ও হিংসার মনোভাব কাজ করছিল।

ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের জন্য ওঁৎ পেতে বসে থাকা উচ্চাবিলাষী সেনাপতিরা চুপ করে বসেছিল না। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জিয়াউর রহমানের জড়িত থাকা না থাকার বিষয়ে বলেন, পূর্বাপর অবস্থাদৃষ্টে প্রতীয়মান হয়, ঘোলা পানিতে যারা কার্যোদ্ধারের প্রয়াস পেয়েছে তাঁদের মধ্যে জিয়াউর রহমান ছিলেন অগ্রনী। ফারুক, রশীদ ও মোশতাকের যেসব অভিমত পরবর্তীতে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাতে এটা দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয়ে উঠে যে, জিয়াউর রহমান চোরকে চুরি করতে বললেও গৃহস্থকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেননি। তিনি ১৫ আগস্টের ঘটনাটি ঘটে যাওয়ার পক্ষে ছিলেন। ওদের(খুনীদের)কে আশ্বাস দিয়েছিলেন, তিনি(জিয়া) তাঁদের(খুনীদের) সঙ্গে আছেন এবং থাকবেন।

তাঁরা(খুনীরা) যদি কার্যসিদ্ধি করে আসতে পারে তিনি তাঁদের সমর্থন দিবেন। বস্তুত ১৫ই আগস্টের ফলশ্রুতিতে তিনি(জিয়া) সবচাইতে বড় সুবিধাভোগী। একজন সাধারন যোগ্যতাসম্পন্ন মেজর এদেশের রাষ্ট্রপতি বনে যান। এটা ১৫ আগস্ট না হলে কল্পনাই করা যেতো না। আজও তার জের চলছে।

জিয়াউর রহমানের পূর্বাপর সকল আচরনই নির্দ্বিধায় এই উপসংহারে উপনীত করে যে, তিনি ছিলেন একজন সুযোগ সন্ধানী এবং অতি উচ্চভিলাষী ক্ষমতালিপ্সু ব্যক্তি। ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড, খালেদ মোশাররফের অভ্যুত্থান, তাহেরের পুনঃঅভ্যুত্থান ইত্যাদির মধ্যদিয়ে জিয়াউর রহমানের ক্ষমতায় আরোহনের বিষয়ে শাহ্‌ মোয়াজ্জেম লিখেছেন, জিয়াউর রহমানের কাজকর্ম ছিল বানরের পিঠা ভাগের মতো। তিনি এমনি একটি পরিস্থিতিরই অপেক্ষায় ছিলেন। দু’দলে লড়াই করে একদল দেশছাড়া আর আরেকদলের নেতা নিহত। মাঝখান থেকে ক্ষমতা তাঁর কুক্ষিগত।

জিয়াউর রহমানের মুক্তিযুদ্ধে যোগদান ও কালুরঘাটের বেতার বার্তা পাঠের বিষয়ে শাহ্‌ মোয়াজ্জেম হোসেন লিখেছেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার মুহূর্তেও তিনি(জিয়া) প্যাঁচ কষেছিলেন। বিষয়টা চাপা পড়ে গেছে বলে সবিস্তারে উল্লেখ করতে চাইনা। সংশ্লিষ্ট মহলের সব জানা আছে। পরবর্তীতে তাঁর(জিয়ার) সব পরিকল্পনা ঠিক ঠিক মিলে গেলেও যবনিকায় বুমেরাং হয়ে যায়। কথায় বলে, ওস্তাদ লাঠিয়াল নিজের লাঠির আঘাতে প্রাণ হারায়।

বড় সাপুড়ে পালিত স্বর্পের দংশনেই জীবনপাত করে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।